কংগ্রেসের আর্জি মেনে দেখা করার সময় দিল নির্বাচন কমিশন। কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশকে পাঠানো কমিশনের চিঠি (ইনসেটে) ছবি: সংগৃহীত।
ভোটার তালিকায় বিশেষ নিবিড় সংশোধন (এসআইআর) সংক্রান্ত অভিযোগ নিয়ে সোমবার দিল্লিতে জাতীয় নির্বাচন কমিশনের দফতর, নির্বাচন সদন ঘেরাওয়ের কর্মসূচি নিয়েছে বিরোধী দলগুলি। তার আগেই কংগ্রেসের আর্জি মেনে দেখা করার সময় দিল কমিশন। সংবাদ সংস্থা এএনআই জানিয়েছে, সোমবার দুপুর ১২টায় কংগ্রেসকে সাক্ষাতের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে। সর্বাধিক ৩০ জন প্রতিনিধি কমিশনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে দেখা করতে যেতে পারবেন।
কমিশনের সচিব অশ্বিনীকুমার মোহলের তরফে কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশকে পাঠানো একটি চিঠি প্রকাশ্যে এনেছে। ওই চিঠি অনুযায়ী, রবিবার কমিশনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় চেয়েছিলেন জয়রাম। সেই চিঠির উত্তরে রবিবারই কমিশন জানায়, রবিবার নির্বাচন সদনের আট তলায় সুকুমার সেন হলে তাদের প্রতিনিধিরা দেখা করবেন। তবে স্থানাভাবের কারণে সর্বাধিক ৩০ জনকে আসার অনুরোধ করা হয়েছে কমিশনের তরফে। মনে করা হচ্ছে যে, কংগ্রেসের তরফে সাক্ষাতের সময় চাওয়া হলেও বিরোধী জোটের প্রায় সব দলের প্রতিনিধিরাই পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি সেরে কমিশনের দফতরে যাবেন। তবে কী বিষয়ে কমিশনের কর্তাদের সঙ্গে কথা হবে, তা আনুষ্ঠানিক ভাবে কোনও তরফ থেকেই জানানো হয়নি। মনে করা হচ্ছে, ভোটার তালিকায় বিশেষ নিবিড় সংশোধন (এসআইআর), রাহুল গান্ধীর ভোট চুরির ‘প্রমাণ’ দেওয়া সংক্রান্ত বিষয় আলোচনায় থাকবে।
সোমবার সকাল ১১টাতেই সংসদের দুই কক্ষ লোকসভা এবং রাজ্যসভা অচল করার প্রস্তুতি নিচ্ছে বিরোধী শিবির। তার পর সাড়ে ১১টায় সংসদের মকরদ্বারের সামনে জমায়েত হবেন বিভিন্ন বিরোধী দলের প্রায় ২০০ সাংসদ। সেখান থেকেই মিছিল করে তাঁরা যাবেন নির্বাচন সদন পর্যন্ত। তবে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অধীনে থাকা দিল্লি পুলিশ ২০০ জন সাংসদকে মিছিল করে কমিশন দফতর পর্যন্ত যেতে দেবে কি না, তা নিয়ে সংশয়ী অনেকেই।
চলতি বাদল অধিবেশনে প্রতিদিন এসআইআর নিয়ে সংসদে বিক্ষোভ জারি রেখেছে বিরোধীরা। তাদের তরফে দাবি তোলা হয়েছিল এসআইআর নিয়ে সংসদে আলোচনার জন্য নির্দিষ্ট সময় বরাদ্দ করুক সরকার। কিন্তু তা হয়নি। গত ২১ জুলাই ধর্মতলায় দলীয় সভা থেকে তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন, এসআইআর নিয়ে প্রয়োজনে কমিশনের দফতর ঘেরাও করা হবে। এই কর্মসূচিতে বিশেষ উদ্যোগ রয়েছে তৃণমূলের। মমতার ঘোষণা করা কর্মসূচিতে বাংলার শাসকদল সার্বিক ভাবে গোটা বিরোধী শিবিরকে এক জায়গায় আনতে পেরেছে।
এসআইআর-এর কারণে বিহারের ভোটার তালিকা থেকে ৬৫ লক্ষ নাম বাদ পড়েছে। বিহারের ভোট চলতি বছরের শেষে। বছর ঘুরলেই পশ্চিমবঙ্গ, কেরল, অসম, তামিলনাড়ুতেও বিধানসভা ভোট। বিরোধীদের অভিযোগ, কমিশনকে বিজেপি ব্যবহার করছে। ইতিমধ্যেই কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী পরিসংখ্যান দিয়ে দাবি করেছেন, ভোট চুরি হচ্ছে। যদিও তা উড়িয়ে দিয়েছে কমিশন। এসআইআর নিয়ে মামলাও হয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালত এসআইআর প্রক্রিয়ায় এখনও কোনও হস্তক্ষেপ করেনি। তবে কমিশনকে কিছু পরামর্শ দিয়েছে। মামলার শুনানি চলছে। এই আবহেই সোমবার বিরোধীরা কমিশন অভিযান করতে চলেছে।