যে ভাবে গোটা বিরোধী পক্ষ আঙুল তুলেছে সরকারের দিকে, তাতে রবিশঙ্কর প্রসাদের আত্মরক্ষার বাণী ম্রিয়মানই শুনিয়েছে বৃহস্পতিবার।ছবি: পিটিআই।
নীরব মোদী কাণ্ডে বিরোধী পক্ষের সব তির এখন নরেন্দ্র মোদীর সরকারের দিকে। সাড়ে ১১ হাজার কোটি টাকার বিপুল প্রতারণায় কেঁপে গিয়েছে পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্ক। দেশের অন্যান্য ব্যাঙ্কও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে এই বিপুল অঙ্কের ব্যাঙ্ক জালিয়াতির জেরে, বলছেন বিশেষজ্ঞরা। ফলে সম্মিলিত বিরোধী পক্ষ ঝাঁপিয়ে পড়েছে ময়দানে। কংগ্রেস তো বটেই, বাম দলগুলিও কাঠগড়ায় তুলছে সরকারকে। মুখ খুলেছেন তৃণমূলনেত্রী তথা বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও।
সরকার তথা বিজেপি অবশ্য জবাব দিতে তৎপর। কংগ্রেস জমানা থেকেই শুরু হয়েছিল নীরব মোদীর জালিয়াতি, দাবি কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদের। কোনও অপরাধী ছাড় পাবে না, আশ্বাস তাঁর।
কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধী টুইটারে তীব্র কটাক্ষ করেছেন নরেন্দ্র মোদীকে। কী ভাবে বিপুল অঙ্কের জালিয়াতি করতে পারলেন নীরব মোদী, নিজের টুইটার হ্যান্ডলে তার ব্যাখ্যা দিয়েছেন রাহুল। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে যে তাঁর ঘনিষ্ঠতা রয়েছে, তা দেখিয়েই নীরব মোদী প্রভাব খাটিয়েছেন বলে রাহুলের ইঙ্গিত।
আরও পড়ুন: দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন নীরব? জানে না স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক
আরও পড়ুন: পিএনবি প্রতারণা: হিরে ব্যবসায়ীর বাড়িতে, শো রুমে তল্লাশি
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও এই বিপুল অঙ্কের ব্যাঙ্ক জালিয়াতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। ব্যাঙ্কে সাধারণ মানুষের সঞ্চয় আর সুরক্ষিত নয় বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
সিপিএম সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরির আক্রমণ আরও সোজাসাপটা। ব্যাঙ্ক জালিয়াতি যাঁরা করেন, তাঁদের বিদেশে পালিয়ে যেতে সাহায্য করে মোদী সরকার— সরাসরি এমন মন্তব্য করেছেন সীতারাম।
সরকার অবশ্য পাল্টা আক্রমণে নেমেছে। কেন্দ্রীয় আইন মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ সাংবাদিক বৈঠক করে যাবতীয় অভিযোগ নস্যাৎ করেছেন। তাঁর কথায়, গত সাড়ে তিন বছরে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলি এমন একটিও বড় অঙ্কের ঋণ দেয়নি, যা অনুৎপাদক সম্পদ বা এনপিএ-তে পরিণত হয়েছে। যে সব ঋণ সম্প্রতি এনপিএ হয়ে গিয়েছে, সেগুলি ইউপিএ জমানায় দেওয়া হয়েছিল বলে রবিশঙ্কর প্রসাদ মন্তব্য করেছেন। নীরব মোদীর এই বিপুল অঙ্কের ব্যাঙ্ক জালিয়াতির বিরুদ্ধে সরকার কঠোর পদক্ষেপ করছে বলে তিনি জানিয়েছেন। ‘‘কোনও অপরাধী ছাড় পাবে না’’, আশ্বাস আইন মন্ত্রীর।