—ফাইল চিত্র।
রাম আর গরু কি বিজেপির একার? না বাকিদেরও?
বুধবার এই নিয়ে শাসক-বিরোধী মল্লযুদ্ধ চলল সংসদে।
নরেন্দ্র মোদী ক্ষমতায় আসার পর দলিত-সংখ্যালঘুদের উপর বেড়ে চলা নিগ্রহ ও গণপিটুনি নিয়ে আলোচনা বিরোধী চাপে মেনে নিতে হয়েছে সরকারকে। রাজ্যসভায় সেই আলোচনার সময়েই রাম-সহ চার দেবদেবীর সঙ্গে মাদকের তুলনা টেনে বসলেন সমাজবাদী পার্টির নরেশ অগ্রবাল। সঙ্গে সঙ্গে হুলুস্থুলু বিজেপির। নরেশের মন্তব্য ‘সংখ্যাগরিষ্ঠের অপমান’ বলে অচল করল রাজ্যসভা। অরুণ জেটলি বললেন, এ কথা বাইরে বললে মামলা হতো। বিজেপির চাপে শেষ পর্যন্ত দুঃখ প্রকাশ নরেশের। রেকর্ড থেকেও বাদ গেল মন্তব্য।
পরে পরিস্থিতি শান্ত হতে নরেশ বলেন, ‘‘দেশে সিংহ ভাগ গোশালা চালায় আমাদের অগ্রবাল সমাজই। ধর্মবিশ্বাসী আমরাও। রাম আমাদেরও। অথচ বিজেপি যেন গরু আর রামের ঠিকা নিয়ে বসে আছে।’’ নরেশের প্রশ্ন, গরু মা হলে বলদ তবে কী? বাছুরের সঙ্গেই বা সম্পর্ক কী? সব সাংসদকে তবে একটি করে গরু দেওয়া হোক। পাশ থেকে অন্য সাংসদের মন্তব্য, গরু পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্বও বিজেপিকে নিতে হবে। কারণ, গরু নিয়ে গেলেই পিটুনি হয়।
বিজেপি ও সঙ্ঘ পরিবারকে এ দিন ছেঁকে ধরে বিরোধীরা। গুলাম নবি আজাদ বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী হুঁশিয়ারি দিচ্ছেন। দুষ্কৃতীদের বলে দেওয়া হচ্ছে, তোমরা যা করার করো। সব ঘটনায় রয়েছে বিজেপি ও সঙ্ঘ পরিবারেরই হাত।’’ তৃণমূলের ডেরেক ও’ব্রায়েন বলেন, ‘‘গো-সন্ত্রাস চলছে।’’
সিপিএমের সীতারাম ইয়েচুরি বলেন, ‘‘কী খাবেন, কী পরবেন— এখন তা নিয়েও প্রশ্ন তোলা হচ্ছে। ভারতীয় জাতীয়তাবাদের বদলে এখন হিন্দু জাতীয়তাবাদ তৈরি করা হচ্ছে।’’ এই বাম নেতার কথায়, রাজ্য সরকারের উপর এখন দায় ঠেলে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কেন্দ্রই এই সব অপসংগঠনকে নিষিদ্ধ করতে পারে।
কোনও জবাব অবশ্য বিজেপি শিবির থেকে আসেনি। তবে একজোট বিরোধীদের মোকাবিলায় বিজেপি সামনে আনে সংখ্যালঘু মুখ মুখতার আব্বাস নকভিকে। তিনি বলেন, দুষ্কৃতীদের অপরাধকে সাম্প্রদায়িক রং দিয়ে লাভ নেই। সব অপরাধীকে গ্রেফতার করা হচ্ছে। সকালে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী হংসরাজ আহির বলেন, ২০১৪ থেকে গোমাংস নিয়ে অশান্তির অভিযোগ দায়েরের রেওয়াজ শুরু হয়েছে। বিরোধীদের পাল্টা জবাব, তার আগে এই ঘটনা ঘটতই না, তো হবে কী করে!