নোট বাতিলের সিদ্ধান্তের জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে ‘চোর’ বলতেও ছাড়ছে না কংগ্রেসে ও অন্য বিরোধীরা। কালো টাকার প্রশ্নে কংগ্রেসের নিশানা এ বার বিজেপি সভাপতি অমিত শাহও। পুরনো ৫০০-১০০০ টাকার নোট বাতিলের সঙ্গে সঙ্গেই আমদাবাদ জেলা সমবায় ব্যাঙ্কে ৫০০ কোটি টাকার অচল নোট জমা পড়েছে— এই সন্দেহে আমদাবাদ জেলা সমবায় ব্যাঙ্কে তল্লাশি চালিয়েছিল ইডি। অমিত ওই ব্যাঙ্কের ওই ব্যাঙ্কের পরিচালন পর্ষদের অন্যতম ডিরেক্টর। ব্যাঙ্কের চেয়ারম্যান অজয় পটেল অমিত শাহর বিশেষ ঘনিষ্ঠ বলেও পরিচিত। এই সূত্রেই দলে মোদীর সেনাপতি অমিতের বিরুদ্ধে আজ অভিযোগের আঙুল তুলল কংগ্রেস।
কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ প্রশ্ন তুলেছেন, ‘‘যে ব্যাঙ্কের সঙ্গে অমিত শাহ জড়িত, সেখানেই এত অল্প সময়ে বিপুল টাকা জমা পড়ল কী করে?’’ বিজেপি সূত্রের পাল্টা যুক্তি, আইন আইনের পথেই চলবে। এমন নয় যে, দলের সভাপতি কোনও ব্যাঙ্কের পরিচালন পর্ষদে অন্যতম ডিরেক্টর বলেই তিনি ব্যাঙ্কের যাবতীয় কাজকর্মে নজরদারি করেন।
এডিসি ব্যাঙ্ক বলে পরিচিত এই সমবায় ব্যাঙ্কের প্রায় ১৯০টি শাখা রয়েছে গোটা গুজরাতে। আমদাবাদের আশ্রম রোডে তাদের সদর দফতর। বিশেষ সূত্রে খবর পেয়ে ইডি-কর্তারা গত সপ্তাহে সেখানে হানা দেন। প্রায় ৭ ঘণ্টা ধরে কাগজপত্র পরীক্ষা করা হয়। অভিযোগ, ৮ নভেম্বর নরেন্দ্র মোদীর নোট বাতিলের ঘোষণার পর, সেই রাতেই ওই ব্যাঙ্কের বিভিন্ন শাখায় ৫০০ কোটি জমা পড়ে। যদিও সমবায় ব্যাঙ্কগুলিতে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের সরাসরি নজরদারি থাকে না বলেই এগুলিতে পুরনো নোট জমা-বদলের ছাড়পত্র দেয়নি মোদী সরকার।
মহেশ শাহ নামে এক আবাসন ব্যবসায়ী ১৩ হাজার ৮৬০ কোটি কালো টাকার কথা কবুল করেছিলেন। কিন্তু সেই স্বীকারোক্তি খারিজ করে দিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়েছে। এই মহেশের সঙ্গেও অমিতের মতো বিজেপির শীর্ষ স্তরের নেতাদের যোগাযোেগর অভিযোগ তুলেছিল কংগ্রেস। এ বার সরাসরি কালো টাকা সাদা করার কারবারে অমিতের হাত থাকার অভিযোগ তুলল। জয়রামের কথায়, ‘‘গুজরাতের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী, বিজেপির সুরেশ মেটা আমাকে বলেছেন, মোদী মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন মহেশ ক্ষমতার করিডরে যাতায়াত করতেন। আমরা তাই গোটা ঘটনার তদন্ত চাই।’’
বিজেপির পাল্টা যুক্তি, তদন্ত নিরপেক্ষ হচ্ছে বলেই শাসক দলের নেতানেত্রীদের নামও জড়াচ্ছে। কিছুই লুকোনো হচ্ছে না।