jyotiraditya scindia

হাতি ঝুলিয়ে সিলিংয়ের ক্ষমতা যাচাই, সিন্ধিয়া প্রাসাদে রুপোর রেলগাড়িতে পৌঁছত সুরা

এই প্রাসাদ ঘিরে প্রচলিত বেশ কিছু কিংবদন্তি। বলা হয়, আটটি হাতি-সমেত পাটাতন ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছিল দরবার ঘরের সিলিং থেকে।

Advertisement
নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১১ মার্চ ২০২০ ১৩:৪৩
Share:
০১ ১৫

কংগ্রেস থেকে বিজেপিতে যোগদান করে সংবাদ শিরোনামে জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া। একদা মরাঠা সাম্রাজ্যের অন্তর্গত ছিল তাঁদের শাসনক্ষেত্র গ্বালিয়র। বর্তমানে মধ্যপ্রদেশের গুরুত্বপূর্ণ এই শহরে আছে জয় বিলাস মহল। এই প্রাসাদ সিন্ধিয়া পরিবারের মূল বাসভবন।

০২ ১৫

জয় বিলাস মহল বা জয় বিলাস বা জয় বিলাস প্যালেস ১৮৭৪ খ্রিস্টাব্দে প্রতিষ্ঠা করেন মহারাজাধিরাজ শ্রীমন্ত জয়াজিরাও সিন্ধিয়া। ১৮৭৫ খ্রিস্টাব্দে ভারত সফরে এসেছিলেন তৎকালীন প্রিন্স অব ওয়েলস, রাজা সপ্তম এডওয়ার্ড। তাঁকে স্বাগত জানাতেই এই প্রাসাদভবন নির্মিত হয়েছিল।

Advertisement
০৩ ১৫

গ্বালিয়রের প্রাক্তন মহারাজা জয়াজিরাও সিন্ধিয়ার নামেই উৎসর্গ করা হয়েছে এই প্রাসাদের সমৃদ্ধ সংগ্রহশালাটি। একটি বড় অংশ জুড়ে সংগ্রহশালাটি থাকলেও প্রাসাদের একটি নির্দিষ্ট অংশ এখনও ব্যবহৃত হয় সিন্ধিয়াদের বাসভবন হিসেবে।

০৪ ১৫

বিখ্যাত স্থপতি মাইকেল ফিলোজের নকশায় এই প্রাসাদ তৈরি হয়েছিল ইউরোপীয় ঘরানার স্থাপত্যরীতিতে। ভবনের প্রথম তল তৈরি হয়েছে ইটালির টাস্কান স্থাপত্যশৈলিতে। দ্বিতীয় তলে আধিপত্য ইটালির ডোরিক নির্মাণ রীতির। তৃতীয় তলে আবার কোরিন্থিয়ান ঘরানায় ইটালীয় রীতির সঙ্গে মিশেছে গ্রিক শৈলি।

০৫ ১৫

১২ লক্ষ ৪০ হাজার ৭৭১ বর্গফুট এলাকা জুড়ে বিস্তৃত এই প্রাসাদের মূল বৈশিষ্ট্য এর প্রশস্ত দরবার ঘর। এই ঘরের অন্দরসজ্জায় নজর কেড়ে নেয় মহার্ঘ্য গালিচা এবং বিশাল ঝাড়বাতি। গ্বালিয়র কেল্লার বন্দিরা নাকি ১২ বছর ধরে এই গালিচা বুনেছিলেন।

০৬ ১৫

১০০ ফুট লম্বা, ৫০ ফুট চওড়া এই দরবার ঘরের উচ্চতা ৪১ ফুট। এর ছাদ থেকে ঝুলন্ত ঝাড়বাতি দু’টির সৌন্দর্যও তাক লাগিয়ে দেয়। সাড়ে ১২ মিটার দৈর্ঘ্য, সাড়ে তিন টন ওজনের প্রতিটি ঝাড়বাতিতে আছে ২৫০টি করে বাতি। বলা হয়, এই ঝাড়বাতি জোড়া-ই নাকি বিশ্বে বৃহত্তম।

০৭ ১৫

এই প্রাসাদ ঘিরে প্রচলিত বেশ কিছু কিংবদন্তি। বলা হয়, আটটি হাতি-সমেত পাটাতন ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছিল দরবার ঘরের সিলিং থেকে। এ ভাবেই নাকি পরীক্ষা করা হয়েছিল ওই ছাদ আদৌ দু’টি বিশাল ঝাড়বাতির ভার বইতে পারবে কি না।

০৮ ১৫

কাট গ্লাসের আসবাবে সাজানো প্রাসাদের বড় অংশ সংরক্ষিত করে রাখা হয়েছে। যাতে অতীতের রাজকীয় জীবনযাত্রার ধারণা পাওয়া যায়। বৈঠকখানা, শোওয়ার ঘরের পাশাপাশি স্নানঘরের সর্বত্র রাজসিক ছোঁয়া।

০৯ ১৫

অতীতে শিকার করা বন্যজন্তুর সংরক্ষিত দেহ ছাড়াও প্রাসাদের সাজসজ্জার অঙ্গ কাটগ্লাসের ভাস্কর্য। পাশাপাশি, অন্যতম বৈশিষ্ট্য হল শুধুমাত্র মহিলাদের জন্য নির্ধারিত সুইমিং পুল। সেখানে নৌকা চলাচলের ব্যবস্থাও ছিল। নজর কেড়ে নেয় বাগানের ঠিক মাঝখানে থাকা সুদৃশ্য ফোয়ারাও। প্রাসাদের পাঠাগারে রয়েছে মোট সাত হাজার বই। তার মধ্যে কিছু দুষ্প্রাপ্য বই আঠেরো ও উনিশ শতকের।

১০ ১৫

তবে এই প্রাসাদের সেরা চমক লুকিয়ে আছে এর ব্যাঙ্কোয়ট হল-এ। সেখানে রাজসিক টেবিলে পাতা রয়েছে রুপোর রেললাইন। তার উপর দিয়ে এগিয়ে চলে রুপোর টয়ট্রেন। আক্ষরিক অর্থেই খেলনাগাড়ি। অতিথিদের সামনে থামত ট্রেনটি। সেখান থেকে পছন্দসই সিগার এবং সুরা তুলে নিতেন অভ্যাগতরা।

১১ ১৫

১৯০৬ সালে ব্রিটিশ সংস্থা ব্যাসেট লোকি-কে অর্ডার দিয়ে এই রুপোর রেলগাড়ি বানিয়েছিলেন মাধবরাও সিন্ধিয়ার ঠাকুরদা মাধো রাও সিন্ধিয়া। বিশ্ব জুড়ে টয়ট্রেনের মডেল বানানোর জন্য বিখ্যাত এই ব্রিটিশ সংস্থা।

১২ ১৫

রুপো আর স্ফটিকে সাজানো এই খেলনা রেলগাড়িতে আছে সাতটি কামরা এবং একটি ইঞ্জিন। দূরবর্তী প্যানেল থেকে এটিকে চালনা করা হত। টেবিল ঘিরে বসে থাকা প্রত্যেক অতিথির সামনে রেলগাড়িটি থামত। অতিথি তার পছন্দসই সিগার বা সুরা তুলে নিতেন।

১৩ ১৫

তবে অন্যান্য রাজপরিবারের মতো সিন্ধিয়া বংশও ক্ষত বিক্ষত সম্পত্তি সংক্রান্ত বিবাদে। গত তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে ৪০ হাজার কোটি টাকারও বেশি সম্পত্তি ঘিরে চরমে পৌঁছেছে দ্বন্দ্ব।

১৪ ১৫

পারিবারিক দ্বন্দ্বের মূল প্রতিদ্বন্দ্বী জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া ও তাঁর তিন পিসি। মাধবরাও সিন্ধিয়ার তিন বোনের মধ্যে বিজেপি নেত্রী হিসেবে পরিচিত বসুন্ধরা রাজে সিন্ধিয়া ও যশোধরা রাজে সিন্ধিয়া। বসুন্ধরা রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রীও ছিলেন। মাধবরাওয়ের আর এক বোন ঊষা রাজে নেপালের রাজবধূ।

১৫ ১৫

তবে শত দ্বন্দ্বেও ম্লান হয়নি জয় বিলাস প্রাসাদের গরিমা। ইতিহাস ও রাজ আভিজাত্যের প্রতীক হয়ে সে দাড়িয়ে আছে গত প্রায় দেড়শো বছর ধরে। (ছবি: শাটারস্টক)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
Advertisement
আরও গ্যালারি
Advertisement