শি ভারত ছাড়তেই তোপ কংগ্রেসের

চিনের প্রেসিডেন্ট শি চিনফিং ভারতে থাকতেই সমালোচনা শুরু করেছিল কংগ্রেস। কিন্তু কূটনৈতিক শিষ্টতার প্রশ্ন তুলে বিষয়টি নিয়ে বেশি হইচই করতে চায়নি তারা। আজ শি ভারত ছাড়তেই মোদী সরকারের ‘বেজিং-নীতি’ নিয়ে তোপ দাগতে শুরু করল কংগ্রেস। তাদের প্রশ্ন, চিন-নীতি নিয়ে কি বিজেপি তাদের অবস্থান বদল করেছে? না হলে মনমোহন-জমানায় এ ব্যাপারে যেমন কড়া মন্তব্য করতেন তিনি, সে রকম তো এ যাত্রায় শোনা গেল না!

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০২:৫৫
Share:

চিনা প্রেসিডেন্ট শি চিনফিং-এর সঙ্গে কংগ্রেস প্রতিনিধি দলের সদস্য রাহুল গাঁধী। ছবি: পিটিআই।

চিনের প্রেসিডেন্ট শি চিনফিং ভারতে থাকতেই সমালোচনা শুরু করেছিল কংগ্রেস। কিন্তু কূটনৈতিক শিষ্টতার প্রশ্ন তুলে বিষয়টি নিয়ে বেশি হইচই করতে চায়নি তারা। আজ শি ভারত ছাড়তেই মোদী সরকারের ‘বেজিং-নীতি’ নিয়ে তোপ দাগতে শুরু করল কংগ্রেস। তাদের প্রশ্ন, চিন-নীতি নিয়ে কি বিজেপি তাদের অবস্থান বদল করেছে? না হলে মনমোহন-জমানায় এ ব্যাপারে যেমন কড়া মন্তব্য করতেন তিনি, সে রকম তো এ যাত্রায় শোনা গেল না! সীমান্তে যখন চিনা অনুপ্রবেশ ঘটছে, তখন সীমান্ত সমস্যা নাম কে ওয়াস্তে উল্লেখ করে কেন ছেড়ে দিলেন প্রধানমন্ত্রী?

Advertisement

কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধী আজ এক প্রতিনিধি দলকে নিয়ে চিনফিংয়ের সঙ্গে দেখা করেন। দলে ছিলেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ, কংগ্রেস সহ-সভাপতি রাহুল গাঁধী ও প্রাক্তন বাণিজ্যমন্ত্রী আনন্দ শর্মা। পরে চিনফিং-সনিয়া বৈঠক নিয়ে এক বিবৃতি প্রকাশ করে কংগ্রেস। তাতে বলা হয়, “চিনা প্রেসিডেন্ট দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের গুরুত্বের কথা তুলে ধরেন। ভারতে শিল্পতালুক, রেলের অগ্রগতি ও পরিকাঠামো ক্ষেত্রে বিনিয়োগের প্রসঙ্গও উত্থাপন করেন তিনি। সেই সঙ্গে চিনফিং বলেন, মনমোহন সিংহ প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন দ্বিপাক্ষিক যে সব ক্ষেত্রে সমঝোতা হয়েছিল, এখন সেগুলিই আরও গতি ও গুরুত্ব পাচ্ছে।”

সন্দেহ নেই, কংগ্রেস এটাই দাবি করতে চাইছে যে, বেজিংয়ের সঙ্গে আর্থিক বিষয়ে সমঝোতা নিয়ে মোদী যে সাফল্য তুলে ধরতে চাইছেন, কংগ্রেস সরকারই তার বীজ বুনেছিল। এর পাশাপাশি প্রাক্তন বিদেশমন্ত্রী সলমন খুরশিদ আজ বলেন, “চিনফিংয়ের সফরকালে কংগ্রেস কতগুলি প্রশ্ন ইচ্ছা করেই তুলতে চায়নি। কারণ তা কূটনৈতিক শিষ্টাচারের মধ্যে পড়ে। এখন সেই প্রশ্নগুলি সরকারের সামনে তুলে ধরতে চাইছি।” এর পরেই মনমোহন জমানায় বিজেপির আচরণের প্রসঙ্গ তুলে খুরশিদ বলেন, “অতীতে বিদেশের রাষ্ট্রপ্রধানরা ভারত সফরে থাকাকালীনই বিজেপি নানান প্রশ্ন তুলত, কটাক্ষ করত ও নেতিবাচক রাজনীতি করত। তা হলে কি তখন দূরদর্শিতার অভাব ছিল মোদীর? কিংবা মোদী তখন বুঝতে পারেননি প্রধানমন্ত্রী পদে থেকে কাজ করা কতটা শক্ত! নাকি বিজেপি তাদের চিন নীতির বদল করেছে!”

Advertisement

সনিয়া এ দিন চিনফিংকে বলেছেন, “যদিও আমরা এখন বিরোধী দল, কিন্তু চিন-ভারত দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক মজবুত করার জন্য কংগ্রেস প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।” এ ব্যাপারে জওহরলাল নেহরুর প্রসঙ্গও উত্থাপন করেন সনিয়া। দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে নেহরু ও চৌ এনলাইয়ের সম্পর্কের কথা তুলে ধরেন শি।

সাক্ষাতের এই সৌজন্য-পর্বের সমান্তরালেই চিন নিয়ে পুরোদস্তুর রাজনীতিতে নেমেছে কংগ্রেস। খুরশিদের কটাক্ষ, “চিনা প্রেসিডেন্টের সফরের জন্য সরকার ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট ভালই করেছিল। কিন্তু আদতে সমঝোতা কতটা ইতিবাচক হল সেটাই দেখার।” তাঁর মতে, ভারতে কতটা চিনা বিনিয়োগ আসবে, তা নিয়ে সরকারের হইচইয়ের মধ্যে অপরিণত বুদ্ধির ছাপ দেখা যাচ্ছে। খুরশিদের কথায়, “মনে হচ্ছে, দেশে-বিদেশে টাকা খুঁজে বেড়াচ্ছে মোদী সরকার! এ রকম আচরণ না করে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর দিকে নজর দিতে হবে। তা ছাড়া দেশের অর্থনীতি চাঙ্গা থাকলে এমনিতেই বিনিয়োগ আসবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন