National News

‘পদ্মাবত’-এর রোষের আগুন সর্বত্র, ব্যতিক্রম পশ্চিমবঙ্গ

সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট হয়েছে সেই বিক্ষোভের ছবি। সাধারণ মানুষ পুলিশের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তুলেছেন। ইন্ডিয়া টুডে’র খবর অনুযায়ী, উত্তেজিত জনতাকে সামলাতে কাঁদানে গ্যাস ছোড়া হয়। এমনকী শূন্যে গুলিও চালায় পুলিশ।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ২৪ জানুয়ারি ২০১৮ ১৪:১৭
Share:

বিক্ষোভকারীদের গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ছবি: রয়টার্স।

যখন দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পদ্মাবত-এর বিরুদ্ধে রোষ আছড়ে পড়ছে, ঠিক উল্টো ছবি দেখা গেল পশ্চিমবঙ্গে।

Advertisement

পদ্মাবত-এর মুক্তি নিয়ে যাতে কোনও রকম অশান্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি না হয়, তাই আগে থেকেই বিভিন্ন সিনেমা হলগুলোর সামনে পুলিশ মোতায়েন করেছে রাজ্য সরকার।

ছবিটিকে ঘিরে বিতর্ক যখন দানা বাঁধতে শুরু করেছিল, যখন প্রতিবাদের ঝড় উঠেছিল রাজস্থান, গুজরাত, হরিয়ানা-সহ কয়েকটি রাজ্যে, সেই সময়েও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আশ্বাস দিয়েছিলেন যে এ রাজ্যে পদ্মাবতী (প্রথম নামকরণ) স্বাগত।

Advertisement

আরও পড়ুন, সব রাজ্যে ‘পদ্মাবত’ মুক্তির ব্যবস্থা করতেই হবে, সুপ্রিম নির্দেশ আরও কড়া

আরও পড়ুন, ‘পদ্মাবত’ মুক্তি বন্ধ না হলে আত্মহত্যার হুমকি দিলেন রাজপুত মহিলারা

নাম পরিবর্তন, সেন্সর বোর্ডের ছাড়পত্র পেয়েও আগামী কাল যখন মুক্তির অপেক্ষায় পদ্মাবত, ঠিক তার আগেই রোষানল যেন হু হু করে ছড়িয়ে পড়ল। অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠল রাজস্থান, গুজরাত, হরিয়ানা, মহারাষ্ট্র। যানবাহন পুড়ল, বিক্ষোভ প্রদর্শন হল, গুরুগ্রামে জারি হল ১৪৪ ধারা। ঠিক সেই সময়েও নিজের অবস্থান থেকে না সরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বুধবার ফের পদ্মাবত-এর পাশেই দাঁড়ালেন।

তিনি বলেন, “পদ্মাবত নিয়ে শীর্ষ আদালত রায় দিয়েছে। সেই রায়কে সম্মান জানানো উচিত। সরকারেরও সেই রায়কে স্বাগত জানানো উচিত।” পাশাপাশি তিনি এই বার্তাও দেন যে তাঁর রাজ্যে পদ্মাবত নিয়ে কোনও সমস্যা হবে না। কিছু রাজ্য এই ছবি নিয়ে ভুল ব্যাখ্যা করছে। করণী সেনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “যত দূর জানি এটা বিজেপির একটা শাখা। সুতরাং বিজেপির প্রয়োজন তাদের সংগঠনগুলোকে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রাখা।”

মাল্টিপ্লেক্সের বাইরে বিক্ষোভ-স্লোগান। ছবি: রয়টার্স।

আগামিকাল, বৃহস্পতিবার ভন্সালীর এই ছবির মুক্তি পাওয়ার কথা। তার আগের দিনও দেশজুড়ে বিক্ষোভের ছবি দেখা গেল।

বুধবার রাজস্থান, গুজরাত, মহারাষ্ট্রের পাশাপাশি বিক্ষোভ হয় হরিয়ানাতেও। গুরুগ্রাম-ওয়াজিপুর-পটৌডী রোড অবরোধ করে বিক্ষোভ চলে। গুরুগ্রামে বিক্ষোভকারীদের রোষের মুখে স্কুল বাস। সেই বাসে তখন নার্সারি থেকে দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র এবং শিক্ষকেরা ছিলেন। বিক্ষোভকারীরা বাস থামিয়ে হামলা চালায়। পাথর ছোড়ে। বাসের ভিতরে তখন পরিত্রাহি চিত্কার করছে পড়ুয়ারা। তাদের সেই আতর্নাদও চাপা পড়ে যায় বিক্ষোভকারীদের রোষানলে। এর পাশাপাশি, অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে গুরুগ্রামে সিনেমা হলের ২০০ মিটারের মধ্যে জারি করা হয় ১৪৪ ধারা।

ছবির মুক্তি আটকাতে মরিয়া করণী সেনার রোষ আছড়ে পড়ে সিনেমা হলেও। মঙ্গলবার গুজরাতের শিল্প-রাজধানী অমদাবাদের একটি মাল্টিপ্লেক্সে ভাঙচুর চালানোর অভিযোগ ওঠে। সিনেমা হলে পাথর ছোড়ে প্রতিবাদীরা। আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় প্রায় ৫০টি মোটরবাইকে। বেশ কয়েকটি দোকানেও ভাঙচুর করা হয় বলে অভিযোগ।

যদিও এই ঘটনার সঙ্গে তাঁদের কোনও যোগ নেই বলে পাল্টা দাবি করণী সেনার। ইন্ডিয়াটুডে’র খবর অনুযায়ী, গুজরাতের রাজপুত করণী সেনার প্রধান রাজ শেখাওয়াত আইএএনএসকে বলেছেন, ‘‘এই অশান্তির সঙ্গে আমাদের যোগ প্রমাণিত হলে আমি পদত্যাগ করব।’’

ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ইতিমধ্যেই ৪৮ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আইএএনএস সূত্রের দাবি, অমদাবাদের হিমালয় মলে ভাঙচুর চালিয়েছেন প্রতিবাদীরা। যদিও গুজরাতের বেশির ভাগ হল এবং মাল্টিপ্লেক্সে ছবি দেখানো হবে না বলে আগেই জানিয়ে দিয়েছিলেন মালিকরা।

সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট হয়েছে সেই বিক্ষোভের ছবি। সাধারণ মানুষ পুলিশের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তুলেছেন। ইন্ডিয়া টুডে’র খবর অনুযায়ী, উত্তেজিত জনতাকে সামলাতে কাঁদানে গ্যাস ছোড়া হয়। এমনকী শূন্যে গুলিও চালায় পুলিশ।

অমদাবাদের পুলিশ কমিশনার একে সিংহ জানিয়েছেন, ধৃত ৪৮ জনের বিরুদ্ধে দাঙ্গার অভিযোগে মামলা রুজু করা হয়েছে। চারটি এফআইআর হয়েছে। ধৃতদের জেরা করে ঘটনায় কাদের যোগ রয়েছে তা জানতে চান তদন্তকারীরা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement