ঋতুচক্রের যন্ত্রণায় কাজ না করে এক দিনের বেতন নষ্ট করার কথা ভাবতেও পারেন না সুধা। দক্ষিণ ভারতের একটি জামাকাপড় তৈরির কারখানার এই কর্মী তাই ওই দিনগুলিতে নিজেই ওষুধ চেয়ে নেন কর্তৃপক্ষের থেকে। কিন্তু মাসের পর মাস এই ভাবে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ব্যথার ওষুধ খাওয়ার ফল বছরের শেষে টের পান ১৭ বছরের ওই কিশোরী। একটি সংবাদ সংস্থার সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, দক্ষিণ ভারতের কারখানাগুলিতে এ ভাবে ব্যথার ওষুধ খেয়ে কাজ করায় অবসাদ, উদ্বেগের মতো মানসিক সমস্যার পাশাপাশি মূত্রনালীতে সংক্রমণ, টিউমার ও গর্ভপাতের মতো শারীরিক সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছেন মহিলা কর্মীরা। কাজ আদায় করতে তাঁদের ওষুধের জোগান দিচ্ছেন কারখানা কর্তৃপক্ষই।
কর্মীদের একাংশ জানাচ্ছেন, ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে কেউ সচেতন করার নেই। ফলে নিজেরা সতর্ক হতে হতে ক্ষতি যা হওয়ার হয়েই যায়। সংবাদ সংস্থাটি জানিয়েছে, যে ওষুধ মহিলাদের দেওয়া হয় তা অনেক সময়েই মেয়াদ পেরনো। যাঁরা ওষুধ খান তাঁরা ওষুধের নামটুকুও জানেন না। শুধু আকার, রঙ দিয়ে চেনেন। সুধাকে পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে, তাঁর জরায়ুতে টিউমার হয়েছে। যা ওই ওষুধেরই পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া। চিকিৎসকেরা তাঁকে কাজ থেকে ছুটি নিয়ে বিশ্রামের পরামর্শ দিয়েছেন। কিন্তু সুধার বেতন কাটা গেলে দেড় লক্ষ টাকার ধার শোধ করতে গিয়ে বিপদে পড়বেন তাঁর মা। ওই কিশোরীর কথায়, ‘‘আমার বেতনের ৬ হাজার টাকার অর্ধেকই ধার শোধ করতে যায়। ফলে বেতন কাটা গেলে টানতে পারব না।’’ তবে তামিলনাড়ু সরকার জানিয়েছে, কাপড় কলের কর্মীদের শরীরের অবস্থা পরীক্ষার জন্য এবং কাজের সঙ্গে সম্পর্কিত শারীরিক সমস্যা নিয়ে তথ্য সংগ্রহ করতে প্রকল্প আনছে রাজ্যটি।