জঙ্গি দমনে পাকিস্তানের নিষ্ক্রিয়তার জন্য ৩৫ কোটি ডলারের সামরিক সাহায্য ক’দিন আগেই আটকে দিয়েছে পেন্টাগন। ইসলামাবাদের অস্বস্তি আরও বাড়াল রিপাবলিকান সেনেটর জন ম্যাকেনের পেশ করা মার্কিন প্রতিরক্ষা আইন সংক্রান্ত একটি সংশোধনী। যাতে সাফ বলা হয়েছে, তালিবান ও হক্কানি নেটওয়ার্ক-সহ জঙ্গি গোষ্ঠীগুলিকে মদত ও আশ্রয় জোগানো বন্ধ না করলে কূটনৈতিক, সামরিক ও অর্থনৈতিক দিক থেকে ধাপে ধাপে মূল্য চোকাতে হবে পাকিস্তানকে। ভারত-সহ আঞ্চলিক শক্তিগুলির সঙ্গে কূটনৈতিক আদানপ্রদান বাড়ানোর কথাও বলা হয়েছে ওই প্রস্তাবে।
২০০৮-এর প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বারাক ওবামার প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন ম্যাকেন। এখন তিনি সেনেটের আর্মড সার্ভিসেস কমিটির চেয়ারম্যান। গত বৃহস্পতিবার ন্যাশনাল ডিফেন্স অথরাইজেশন অ্যাক্ট, ২০১৮-র এই সংশোধনীটি তিনি পেশ করেন। এর পরে সেটিকে অবশ্য ভোটাভুটির মধ্য দিয়ে যেতে হবে। সংশোধনীটির নিউক্লিয়াস হল আফগানিস্তানে শান্তি প্রতিষ্ঠা। কিন্তু সেই সূত্রে পাকিস্তানকে যে ভাবে ‘সন্ত্রাসের মদতদাতা’ হিসেবে কাঠগড়ায় তোলা হয়েছে, তাতে ফের মান্যতা পেয়েছে ভারতের দীর্ঘদিনের অভিযোগ।
ম্যাকেনের সংশোধনীতে আফগানিস্তানে স্থিতাবস্থা আনার লক্ষ্যের পাশাপাশি বলা হয়েছে, যুদ্ধ-বিধ্বস্ত এই দেশ যাতে আমেরিকার বিরুদ্ধে হামলার ছক কষা জঙ্গিদের লঞ্চপ্যাডে পরিণত না হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে। তালিবান, আল কায়দা, ইসলামিক স্টেট, হক্কানি নেটওয়ার্কের মতো গোষ্ঠীর জঙ্গিদের নিশানা করার ক্ষেত্রে মার্কিন সেনাকে পূর্ণ স্বাধীনতা দেওয়ার প্রস্তাবও রয়েছে তাতে। আর বলা হয়েছে, তালিবান যেন আফগান সরকারের পতন ঘটাতে না পারে।
পাকিস্তান জঙ্গিদের মদত দেওয়া বন্ধ কলে আমেরিকার সঙ্গে তাদের দীর্ঘমেয়াদি কৌশলগত সহযোগিতায় কী ভাবে আফগানিস্তানে শান্তি আসতে পারে, তার একটি রূপরেখা তৈরির কথাও বলা হয়েছে। রয়েছে আফগানিস্তানের স্বার্থেই পাকিস্তান, ভারত, চিন, উজবেকিস্তান, তাজিকিস্তানের মতো দেশগুলির সঙ্গে কূটনৈতিক আদানপ্রদানের প্রস্তাব।
এক সেনেটর এই সংশোধনীতে আপত্তি তোলায় ম্যাকেন ক্ষুব্ধ। তিনি বলেন, ‘‘জঙ্গিদের রমরমা বেড়েছে, চলছে চিন-রাশিয়ার রেষারেষি, পশ্চিম এশিয়ায় কালো প্রভাব ছড়াচ্ছে ইরান, আমেরিকায় পরমাণু হামলা চালাতে সক্ষম ক্ষেপণাস্ত্রের পেছনে দৌড়চ্ছেন উত্তর কোরিয়ার একনায়ক। গত সাত বছরে আমাদের জাতীয় নিরাপত্তা এত কঠিন পরিস্থিতির মুখে পড়েনি।’’