পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ় শরিফ। —ফাইল চিত্র।
ভারতের সঙ্গে সংঘাতের পর চারটি ‘বন্ধু’ দেশে সফর করছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ় শরিফ। রবিবার তিনি গিয়েছেন তুরস্কে। সেখানকার প্রেসিডেন্ট রিচেপ তায়িপ এর্দোয়ানের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে তাঁর। পাকিস্তানের সরকারি সংবাদমাধ্যম পিটিভি নিউজ়কে উদ্ধৃত করে ডন জানিয়েছে, এর্দোয়ানের সঙ্গে বৈঠকে ছিলেন পাক বিদেশমন্ত্রী ইশাক দার, সেনাবাহিনীর প্রধান আসিম মুনির এবং তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী আয়াতুল্লা তারার। এই বৈঠকে আলোচনার অন্যতম বিষয়বস্তু ছিল ভারত।
ভারত-পাক সংঘাতের আবহে রাখঢাক না-করেই পাকিস্তানকে সমর্থন করেছিল তুরস্ক। তার জন্য এর্দোয়ানকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন শাহবাজ়। বৈঠকের পর সমাজমাধ্যমে তিনি লিখেছেন, ‘‘ইস্তানবুলে আমার প্রিয় ভাই এর্দোয়ানের সঙ্গে বৈঠক হল। ভারত-পাক সাম্প্রতিক সংঘাতে পাকিস্তানের জন্য ওঁর দৃঢ় সমর্থন ছিল। তার জন্য ওঁকে ধন্যবাদ জানিয়েছি। পাকিস্তানিদের তরফে তুরস্কের ভাইবোনেদের প্রতি শুভেচ্ছা জানিয়েছি।’’
তুরস্ক এবং পাকিস্তানের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নিয়েও আলোচনা হয়েছে শাহবাজ়-এর্দোয়ানের মধ্যে। পাক প্রধানমন্ত্রীর পোস্ট অনুযায়ী, ‘‘বাণিজ্য, বিনিয়োগ-সহ বিভিন্ন দ্বিপাক্ষিক বিষয়ে উন্নয়ন নিয়ে আমরা আলোচনা করেছি। পাকিস্তান এবং তুরস্কের অবিচ্ছেদ্য বন্ধন আরও দৃঢ় করে তুলতে আমরা কাজ চালিয়ে যাব। পাক-তুরস্ক বন্ধুত্ব দীর্ঘজীবী হোক।’’
এর্দোয়ানও সমাজমাধ্যমে শাহবাজ়ের সঙ্গে বৈঠকের বিষয়ে পোস্ট করেছেন। লিখেছেন, ‘‘পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী এবং আমার খুব ভাল বন্ধু শাহবাজ় আর তাঁর প্রতিনিধিদলের সঙ্গে ইস্তানবুলে বৈঠক হল। আমরা খুব খুশি। অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আমাদের আলোচনা হয়েছে। বিশেষত অর্থনীতি, বাণিজ্য এবং নিরাপত্তার কথা আলোচনায় উঠে এসেছে। পাকিস্তান এবং তুরস্কের মধ্যে যে ঐতিহাসিক, মানবিক এবং রাজনৈতিক বন্ধন রয়েছে, তা আগামী দিনে আরও দৃঢ় করে তুলব আমরা। শাহবাজ়ের মাধ্যমে আমার পাকিস্তানি ভাইদের শুভেচ্ছাও জানিয়েছি। আমাদের এই বন্ধুত্ব চিরস্থায়ী হোক।’’
উল্লেখ্য, গত ২২ এপ্রিল পহেলগাঁও হামলার পর থেকে ভারত এবং পাকিস্তানের সম্পর্কের ক্রম অবনতি হয়েছে। এই ঘটনায় পাকিস্তানকে দায়ী করে একাধিক পদক্ষেপ করেছে ভারত। ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর মাধ্যমে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে একাধিক পাক জঙ্গিঘাঁটি। তার পর টানা চার দিন পাকিস্তান এবং ভারতের মধ্যে সংঘর্ষ চলেছে। গত ১০ মে দুই দেশ সংঘর্ষবিরতিতে সম্মত হয়। এই পর্বে অনেক দেশই ভারত এবং পাকিস্তানের শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল এবং উত্তেজনা প্রশমনের বার্তা দিয়েছিল। তুরস্ক সরাসরি পাকিস্তানের পাশে দাঁড়ায়। তাদের ওই অবস্থানের পর ভারতে তুরস্কের সংস্থা সেলেবি অ্যাভিয়েশন সার্ভিসেস ইন্ডিয়া প্রাইভেট লিমিটেডের ‘সুরক্ষার ছাড়পত্র’ বাতিল করে দেওয়া হয়। ভারতীয় বিভিন্ন বিমানবন্দরে কার্গো ও গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং বা ব্যবস্থাপনার কাজে যুক্ত সেলেবি। কেন্দ্রের পদক্ষেপের পর আদালতের দ্বারস্থও হয়েছে তারা।
পাক প্রধানমন্ত্রী তুরস্ক ছাড়াও যাবেন ইরান, আজ়ারবাইজান এবং তাজিকিস্তানে।