পাকিস্তানে বন্দি ভারতীয় নাগরিক কুলভূষণ যাদবের ফাঁসি হবে কি না, তা জানা যাবে আর কয়েক দিনের মধ্যেই। পাক সেনা বাহিনীর মুখপাত্র মেজর জেনারেল আসিফ গফুর পাক সংবাদমাধ্যমকে আজ এ কথা জানিয়েছেন। এই মামলা নিয়ে গত কয়েক মাস দু’দেশের সম্পর্কে বিস্তর টানাপড়েন চলেছে।
গত বছরের ৩ মার্চ ভারতীয় নৌসেনার প্রাক্তন কর্মী কুলভূষণ পাকিস্তানের বালুচিস্তান থেকে গ্রেফতার হন। ইসলামাবাদের অভিযোগ ছিল, ভারতীয় গুপ্তচর সংস্থা র-এর সদস্য কুলভূষণ নাশকতামূলক কাজের জন্য পাকিস্তানে ঢুকেছিলেন। ভারত সরকার সেই অভিযোগ খারিজ করে জানায়, কুলভূষণ আদৌ কোনও গুপ্তচর নন। নৌ বাহিনী ছাড়ার পরে তিনি ইরানে ব্যবসা করতেন, কোনও ভাবে পাকিস্তানে ঢুকে পড়েছিলেন। ভারতের যুক্তি মানেনি ইসলামাবাদ। কুলভূষণকে মুক্তি দেওয়া তো দূর, পাক সামরিক আদালতে বিচার চলে তাঁর। গত এপ্রিলে ৪২ বছরের কুলভূষণের ফাঁসির আদেশ হয় সেখানে। কিন্তু ভারত সরকার এই মামলা আন্তর্জাতিক আদালত পর্যন্ত নিয়ে যায়। ভারতীয় কনস্যুলেট কর্মীদের সঙ্গে কুলভূষণকে দেখা করতে না দিয়ে পাকিস্তান ভিয়েনা কনভেনশনের চুক্তি লঙ্ঘন করেছে বলেও অভিযোগ তোলে নয়াদিল্লি। আন্তর্জাতিক আদালতের ১০ সদস্যের বেঞ্চ গত ১৮ মে সেই ফাঁসির আদেশে স্থগিতাদেশ দেয়। এখন তাই কুলভূষণের প্রাণভিক্ষার আর্জি ফের পুনর্বিবেচনা করছে পাক সেনা আসিফ গফুর সাংবাদিকদের আজ বলেছেন, ‘‘কুলভূষণের ক্ষমার আর্জি পাক সেনা প্রধানের কাছে এসে পৌঁছেছে। সব কিছুরই তো একটা পদ্ধতি থাকে। তবে এটুকু বলতে পারি, খুব দ্রুত এ নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত আপনাদের জানাতে পারব।’’
পাক সংবাদমাধ্যমের একটি সূত্রের খবর, গফুর নাকি কুলভূষণ নিয়ে পাকিস্তানবাসীকে ‘সুখবর’ দেওয়ার ইঙ্গিত দিয়ে রেখেছেন। পাক সংবাদমাধ্যমের একাংশ সেই ‘সুখবর’ কূলভূষণের ফাঁসি বলেই ধরে নিচ্ছে। কিন্তু ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রকের সূত্র জানাচ্ছে, এই মুহূর্তে ভারত আন্তর্জাতিক আদালতে এই মামলা নিয়ে একটি লিখিত আবেদন জানিয়ে রেখেছে, ইসলামাবাদকে যার উত্তর আগামী ১৩ ডিসেম্বরের মধ্যে দিতে হবে। তাই সাউথ ব্লকের ব্যাখ্যা, কুলভূষণের ফাঁসি বহাল থাকলেও পাকিস্তানের পক্ষে তা খুব দ্রুত কার্যকর করা সম্ভব হবে না।