রাজ্যের রাশ হাতে নিচ্ছেন চিন্নাম্মা

দল নিয়ন্ত্রণে এসেছিল আগেই। এ বার মুখ্যমন্ত্রী হয়ে তামিলনাড়ুর প্রশাসনও পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনার পথে এগোলেন শশিকলা নটরাজন। চেন্নাইয়ে এডিএমকে-র সদর দফতরে আজ পরিষদীয় দলের নেত্রী নির্বাচিত হয়েছেন ‘চিন্নাম্মা’।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০২:১৬
Share:

—ফাইল চিত্র।

দল নিয়ন্ত্রণে এসেছিল আগেই। এ বার মুখ্যমন্ত্রী হয়ে তামিলনাড়ুর প্রশাসনও পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনার পথে এগোলেন শশিকলা নটরাজন। চেন্নাইয়ে এডিএমকে-র সদর দফতরে আজ পরিষদীয় দলের নেত্রী নির্বাচিত হয়েছেন ‘চিন্নাম্মা’। জানকী রামচন্দ্রন ও জয়ললিতার পরে তামিলনাড়ুর তৃতীয় মহিলা মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিতে চলেছেন তিনি। শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান ৯ ফেব্রুয়ারি হবে বলে জানিয়েছে দল।

Advertisement

জয়ললিতার মৃত্যুর পরে দলের সাধারণ সম্পাদক হন শশিকলা। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী হন জয়ললিতার আর এক ঘনিষ্ঠ নেতা ও পনীরসেলভম। দুর্নীতি মামলায় দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় জয়ললিতা কয়েক বার মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে সরে থাকতে বাধ্য হয়েছিলেন। তখন মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব দিয়েছিলেন পনীরসেলভমকেই। জয়ার অসুস্থতার সময়েও তাঁর কাজ সামলেছিলেন পনীরসেলভমই। ফলে প্রথমে মুখ্যমন্ত্রীর পদে তাঁর নামে আপত্তি জানাতে পারেননি শশিকলাও।

কিন্তু তার পরে ধীরে ধীরে দলে শশিকলার প্রভাব বেড়েছে। সূত্রের মতে, এখন আর তাঁকে মুখ্যমন্ত্রী করা ছাড়া পনীরসেলভমের কাছে অন্য কোনও উপায় ছিল না। পরিষদীয় দলের নেত্রী হওয়ার পরে শশিকলা অবশ্য টুইটারে জানিয়েছেন, ‘‘পনীরসেলভমই প্রথম আমাকে মুখ্যমন্ত্রী করার প্রস্তাব দেন।’’ পনীরসেলভম এ দিন মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফাও দিয়েছেন।

Advertisement

১৯৮০-এর দশকে স্বামী এম নটরাজনের মাধ্যমে প্রথম জয়ললিতার সংস্পর্শে আসেন শশিকলা। ঘটনাচক্রে আজই শ্বাসকষ্টের ফলে চেন্নাইয়ের এক বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে এম নটরাজনকে। দলে বরাবরই ‘আম্মা’-র ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত ছিলেন শশিকলা। কিন্তু ২০১১ সালে হঠাৎই ধাক্কা খায় সেই সম্পর্ক। তাঁর বিরুদ্ধে কাজ করার অভিযোগে শশিকলা-সহ ১৪ জনকে দল থেকে বহিষ্কার করেন জয়ললিতা। ২০১২ সালের মার্চ মাসের মধ্যে অবশ্য সেই সমস্যা মিটে যায়। দলে ফেরেন শশিকলা।

জয়ললিতার মৃত্যুর পরে দল ও রাজ্যের রাশ কার হাতে থাকবে তা নিয়ে চর্চা হয়েছিল বিস্তর। রাজনীতিকদের মতে, জয়ার দেহ আগলে রেখে নিজের উত্তরাধিকার নিশ্চিত করেছিলেন শশিকলা। তবে এখন তাঁকে রাজনৈতিক ভাবে চ্যালেঞ্জ করেছেন জয়ার ভাইঝি দীপা জয়কুমার। দীপার চেহারায় জয়ললিতার আদল রয়েছে। অনেকের মতে, এর ফলেই দ্রুত রাজ্যের রাশ নিজের হাতে নেওয়ার পথে হেঁটেছেন শশিকলা।

সংসদে বিশেষত রাজ্যসভায় এডিএমকে-কে পাশে পাওয়া এখন বিজেপি-র বিশেষ প্রয়োজন। জয়ললিতার মৃত্যুর পরে রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের পাশাপাশি চেন্নাই উড়ে গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও। কোনও মুখ্যমন্ত্রীর শেষকৃত্যে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর একসঙ্গে উপস্থিত থাকার নজির বিরল। অনেকের মতে, রাজনৈতিক প্রয়োজনেই এমন পদক্ষেপ করেছিলেন মোদী। আবার ষাঁড়কে পোষ মানানোর খেলা জাল্লিকাট্টু নিয়ে সাম্প্রতিক বিতর্কের সময়েও এডিএমকে-র পাশে দাঁড়িয়েছিল মোদী সরকার।

রাজনৈতিক সূত্রের মতে, গোড়া থেকেই বিজেপি-র প্রচ্ছন্ন সায় রয়েছে শশিকলার নেতৃত্বের প্রশ্নে। শশির বিরুদ্ধে যে দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে তা বিজেপি-র জন্য সুবিধেজনক বলেই মনে করা হচ্ছে। এই অভিযোগকে কাজে লাগিয়ে তাঁকে নিয়ন্ত্রণ করা যাবে বলেই ঘরোয়া ভাবে জানাচ্ছেন বিজেপি-র কিছু নেতা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন