Parliament Monsoon Session 2020

কৃষি সংক্রান্ত বিল পাশ করানোর বিরুদ্ধে গাঁধীমূর্তির নীচে ধর্না সারা রাত

কৃষি সংক্রান্ত বিল পাশ করানোর বিরুদ্ধে বিরোধী দলগুলির ধর্না, স্লোগান এবং গান চলল গাঁধীমূর্তির পাদদেশে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২২ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০৩:৩৫
Share:

প্রতিবাদে তৃণমূল ও অন্য বিরোধী দলের সাংসদেরা। সোমবার। ছবি: পিটিআই।

অতিমারির দাপটে এ বারের স্বল্পমেয়াদি বাদল অধিবেশন থেকে বিশেষ কিছু প্রত্যাশা ছিল না বিরোধী দলগুলির। কিন্তু আচমকাই মোদী-বিরোধী আন্দোলন-মঞ্চে পরিণত হল সংসদ চত্বর। আজ গোটা রাত ধরে কৃষি সংক্রান্ত বিল পাশ করানোর বিরুদ্ধে বিরোধী দলগুলির ধর্না, স্লোগান এবং গান চলল গাঁধীমূর্তির পাদদেশে। এমনটা শেষ কবে দেখা গিয়েছে, বা আদৌ দেখা গিয়েছে কি না, মনে করতে পারছে না রাজধানীর রাজনৈতিক শিবির।

Advertisement

রাষ্ট্রপতির কাছে গোটা বিষয়টি নিয়ে অভিযোগ জানিয়ে চিঠি লিখে দেখা করার জন্য সময় চেয়েছেন কংগ্রেস-সহ বারোটি বিরোধী দলের সাংসদেরা। তাঁকে অনুরোধ জানানো হচ্ছে, বেআইনি ভাবে পাশ হওয়া বিলে সই না-করতে। প্রায় সব বিরোধী দলই প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে এই কৃষি সংক্রান্ত বিল পাশের বিরোধিতা করায়, মোদী-বিরোধী আন্দোলন বড় মঞ্চ পেয়ে গেল বলেই মনে করা হচ্ছে।

কৃষি সংক্রান্ত দু’টি বিল পাশ ঘিরে গত কাল রাজ্যসভায় তুলকালাম হয়। তার জেরে আজ সকালে আট সাংসদকে সাসপেন্ড করেন রাজ্যসভার চেয়ারম্যান বেঙ্কাইয়া নায়ডু। এঁরা হলেন ডেরেক ও’ব্রায়েন ও দোলা সেন (তৃণমূল), রিপুন বরা, সৈয়দ নাসির হুসেন ও রাজীব সাতভ (কংগ্রেস) কে কে রাগেশ ও এলামারাম করিম (সিপিএম) এবং সঞ্জয় সিংহ (আপ)। কিন্তু চেয়ারম্যানের নির্দেশ উপেক্ষা করে রাজ্যসভায় পৌঁছন সাসপেন্ড হওয়া সাংসদেরা। এমনকি, সভাকক্ষ ত্যাগ করতেও রাজি হননি তাঁরা।

Advertisement

আরও পড়ুন: মোদীর আশ্বাস, ঘোষিত সহায়ক মূল্যও

শেষ পর্যন্ত অবশ্য সভা ছেড়ে তাঁরা গাঁধীমূর্তির সামনে ধর্নায় বসেন। বিভিন্ন বিরোধী দলের সাংসদেরা তাতে যোগ দেন। ‘গণতন্ত্রের হত্যা’, ‘আমরা কৃষকদের জন্য লড়ব’, এমন সব পোস্টার নিয়ে কেন্দ্র-বিরোধী স্লোগান দেন তাঁরা। পরে ধর্নাস্থলে আসেন ফারুক আবদুল্লা, গুলাম নবি আজাদ, দেবগৌড়া, সঞ্জয় রাউত, সুপ্রিয়া সুলেরা। রাজ্যসভায় এসপি বিলের সক্রিয় বিরোধিতা না-করলেও আসেন দলীয় সাংসদ জয়া বচ্চন। রাষ্ট্রপতিকে দেওয়া চিঠিতেও সই করেছেন এসপি-র রামগোপাল যাদব। কংগ্রেসের অধীর চৌধুরী বলেন, ‘‘নরেন্দ্র মোদী নিজেকে সম্রাট ভাবছেন। সংসদীয় গণতন্ত্রকে অগ্রাহ্য করছেন।’’

ডেরেকের বক্তব্য, “কাল আমাদের ফিরিয়ে নেওয়া না-হলে বিরোধীরা গোটা অধিবেশনের জন্য সংসদ বয়কট করবে।’’ বিরোধী নেতারা সংসদের ভিতরে ধর্নায় বসেননি অধিবেশন শেষ হলে তাঁদের বের করে দেওয়া হতে পারে বলে। কিন্তু লোকসভা স্পিকারের নির্দেশে রাতে তাঁদের সংসদ চত্বর থেকেও বার করার চেষ্টা হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন তাঁরা। যদিও গভীর রাত পর্যন্ত তেমন কিছু ঘটেনি। উল্টে সংসদের পক্ষ থেকে সাংসদদের স্বাস্থ্য সম্পর্কে খোঁজ নেওয়া হয়। তবে সংসদের দিকে মিছিল করে আসা পঞ্জাবের কংগ্রেস সাংসদদের বিজয় চকে আটকে দেয় পুলিশ।

রাজ্যসভায় তৃণমূলের মুখ্য সচেতক সুখেন্দুশেখর রায় বলেন, ‘‘রাজ্যসভা পরিচালনার ১২৫ নম্বর ধারায় বলা রয়েছে, কোনও সদস্য কোনও বিল নিয়ে আপত্তি তুললে সেটিকে সিলেক্ট কমিটিতে পাঠাতে হবে। যদি না আগেই তা সিলেক্ট কমিটিতে পাঠানো হয়ে থাকে। রাজ্যসভার ডেপুটি চেয়ারম্যান শাসক দলের মর্জি মতো কাজ করেছেন।’’

কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ পাল্টা বলেন, ‘‘বিরোধীরা বলছেন, আমাদের পক্ষে নাকি সংখ্যাগরিষ্ঠের সমর্থন ছিল না! রবিবার রাজ্যসভায় উপস্থিত সদস্যদের মধ্যে বিলের পক্ষে ১১০ জন ছিলেন। বিপক্ষে ৭২।’’ বিরোধীদের বিরুদ্ধে সংসদীয় মর্যাদা লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, ‘‘রাজ্যসভার চেয়ারম্যান দেশের উপরাষ্ট্রপতি। তিনি বার বার বলা সত্ত্বেও সাসপেন্ড হওয়া সাংসদেরা কক্ষ ছাড়েননি।’’ বিজেপির অভিযোগ, আপের সঞ্জয় সিংহ মার্শালকে গলাধাক্কা দিয়েছেন। রবিশঙ্কর বলেন, ‘‘মাইক ভাঙবেন, মার্শালদের মারধর করবেন, তার পর নিজেরাই অভিযোগ করবেন— এটা চলতে পারে না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন