আলোচনা ছাড়াই পাশ হবে নির্মলা সীতারামনের বাজেট, উঠছে প্রশ্ন

অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের বাজেটে এমনিতেই জিডিপি, রাজস্ব আয়ের হিসেবে গরমিলের অভিযোগ উঠেছে।

Advertisement

প্রেমাংশু চৌধুরী

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১২ জুলাই ২০১৯ ০২:১৩
Share:

ছবি: পিটিআই।

কোনও প্রশ্ন নয়। কোনও চুলচেরা বিচার নয়। হিসেবে গরমিল খোঁজার পরীক্ষা নয়। বাজেট নিয়ে এ বার কোনও সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে আলোচনা হবে না।

Advertisement

অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের বাজেটে এমনিতেই জিডিপি, রাজস্ব আয়ের হিসেবে গরমিলের অভিযোগ উঠেছে। রাজ্যসভায় বাজেট বিতর্কে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম। তাঁর আরও অভিযোগ, এই বাজেটই হয়তো প্রথম, যেখানে দেশের ও আন্তর্জাতিক অর্থনীতির বর্তমান হাল সম্পর্কে সরকারের মতামত বাজেটে নেই। কোন মন্ত্রকে কত বরাদ্দ, তার হিসেবও নেই।

প্রথা অনুযায়ী, কোন মন্ত্রকে কত বরাদ্দ হল, তা নিয়ে সংশ্লিষ্ট স্থায়ী কমিটিতে আলোচনা হয়। তার পরেই বাজেট ও অর্থ বিল পাশ হয়। কিন্তু এ বার সেই নিয়ম স্থগিত রেখে সরাসরি বাজেট ও অর্থ বিল পাশের পথে হাঁটছে সরকার। আজ মোদী সরকার এ জন্য সংসদের নিয়ম স্থগিত রাখার প্রস্তাব পাশ করিয়ে নিয়েছে। ফলে রেল, কৃষি-র মতো চারটি মন্ত্রকের বাজেট বরাদ্দ নিয়ে লোকসভায় আলোচনা হবে। বাকি সব মন্ত্রকের বরাদ্দ স্থায়ী কমিটিতে আলোচনা ছাড়াই পাশ হয়ে যাবে।

Advertisement

এত দিন মোদী সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, সরকার সংসদীয় কমিটিতে আলোচনা ছাড়াই বিল পাশ করিয়ে নেয়। এ বার বাজেটের ক্ষেত্রেও সে পথে হাঁটছে সরকার। তাদের অবশ্য যুক্তি, ভোটের বছরে জুন-জুলাই মাসে পূর্ণাঙ্গ বাজেট পেশ হয়েছে। ফলে দ্রুত বাজেট পাশ করাতেই এই প্রক্রিয়া।

কিন্তু তাতে বাজেটের হিসেবে গরমিল নিয়ে প্রশ্ন থামছে না। চিদম্বরমের প্রশ্ন, গত অর্থ বছরের জিডিপি-র বহর কত, তার আর্থিক সমীক্ষায় এক তথ্য রয়েছে, বাজেটে আর এক। তা হলে আর্থিক বৃদ্ধির হার কত? বাজেট অনুযায়ী ৮ শতাংশ। কিন্তু আর্থিক সমীক্ষায় সরকারি অ্যাকাউন্টস দফতরের হিসেব ধরলে বৃদ্ধির হার ৭ শতাংশ। আপাত ভাবে ১ শতাংশ হলেও এটা বিরাট ফারাক। চিদম্বরমের প্রশ্ন, ‘‘সরকার, মুখ্য অর্থনৈতিক উপদেষ্টা কি এক ছবি তুলে ধরতে পারে না?’’

রাজস্ব খাতে আয় নিয়েও একই প্রশ্ন তুলেছেন চিদম্বরম। তাঁর বক্তব্য, গত অর্থ বছরে রাজস্ব খাতে কেন্দ্রের আনুমানিক আয় ধরা হয়েছিল ১৪.৮৪ লক্ষ কোটি টাকা। সংশোধিত হিসেবে তা ১.৬ লক্ষ কোটি টাকা কমে গিয়েছে। গত অর্থ বছরে আয়কর থেকে আয় বেড়েছিল ৭.১ শতাংশ। এ বছর ২৩.২৫ শতাংশ বৃদ্ধির লক্ষ্য স্থির হয়েছে। চিদম্বরমের কটাক্ষ, ‘‘এমন হলে তো অলিম্পিকে পোল ভল্টারের মর্যাদা পাবেন!’’ শুল্ক থেকে আয় গত বছর ৮.৬ শতাংশ কমেছিল, এ বার ৩২ শতাংশ বৃদ্ধির লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। উৎপাদন শুল্ক প্রায় একই রকম ছিল, এ বছর ১৫ শতাংশ বেশি বৃদ্ধির লক্ষ্য। জিএসটি থেকে আয় বৃদ্ধি ৩.৩ শতাংশের জায়গায় ৪৫ শতাংশ লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। যার সবটাই অবাস্তব। এই ভাবে আয় ফুলিয়ে-ফাঁপিয়ে দেখিয়েই রাজকোষ ঘাটতি কমিয়ে আনা হয়েছে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে চিদম্বরমের মন্তব্য, ‘‘বাজেটের প্রতিটি সংখ্যা সন্দেহজনক। কোনও সংখ্যাই বিশ্বাসযোগ্য নয়।’’

এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন