পরীক্ষা পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণিতে

নিচু ক্লাসে ধাপে ধাপে ফিরে আসছে পাশ-ফেল

ফিরছে পাশ-ফেল। কেন্দ্র জানিয়ে দিল রাজ্যগুলি চাইলে পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণিতে পরীক্ষা চালু করতে পারে। তবে তার জন্য পড়ুয়াদের অন্তত এক বছর সময় দিতে হবে। ইউপিএ জমানায় প্রথম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পাশ-ফেল প্রথা তুলে দিয়েছিল কেন্দ্র। ভাবা হয়েছিল, পরীক্ষার চাপ না থাকায় শেখার আগ্রহে পড়াশুনা করবে পড়ুয়ারা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৬ অক্টোবর ২০১৬ ০২:০২
Share:

ফিরছে পাশ-ফেল। কেন্দ্র জানিয়ে দিল রাজ্যগুলি চাইলে পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণিতে পরীক্ষা চালু করতে পারে। তবে তার জন্য পড়ুয়াদের অন্তত এক বছর সময় দিতে হবে।

Advertisement

ইউপিএ জমানায় প্রথম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পাশ-ফেল প্রথা তুলে দিয়েছিল কেন্দ্র। ভাবা হয়েছিল, পরীক্ষার চাপ না থাকায় শেখার আগ্রহে পড়াশুনা করবে পড়ুয়ারা। কিন্তু জাতীয় সমীক্ষা বলছে, এই সিদ্ধান্তে আখেরে ক্ষতিই হচ্ছে ছাত্র-ছাত্রীদের। পরীক্ষা তুলে দেওয়ায় পড়াশুনায় আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে পড়ুয়ারা। এই সিদ্ধান্তে ছাত্র-ছাত্রীদের খারাপ হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলে এর আগেও ‘সেন্ট্রাল অ্যাডভাইসরি বোর্ড অফ এডুকেশন’ বা ক্যাবের বৈঠকে অসন্তোষ জানিয়েছে রাজ্য সরকারগুলি। আজ দিল্লিতে হওয়া ওই বৈঠকে অধিকাংশ রাজ্যের পক্ষ থেকে পাশ–ফেল প্রথা ফিরিয়ে আনার জন্য কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের কাছে দরবার করা হয়। এর পরে পাশ–ফেল প্রথা ফিরিয়ে আনার প্রস্তাবে সম্মতি জানিয়েছে প্রকাশ জাভড়েকরের মন্ত্রক।

তবে, ঠিক হয়েছে স্কুল শিক্ষায় পাশ-ফেল ফিরলেও তা ফিরবে ধাপে ধাপে। আপাতত পাশ-ফেল চালু হচ্ছে শুধু পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণিতে। তবে নতুন সিদ্ধান্তের ভাল-মন্দের দায় আর নিজের কাঁধে রাখছে না কেন্দ্র। জাভড়েকর আজ জানিয়েছেন, ‘‘রাজ্যগুলি চাইলে পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণিতে পরীক্ষা চালু করতে পারে। পরীক্ষা ফিরিয়ে আনবে, কি আনবে না— এই সিদ্ধান্ত নেবে রাজ্যের সরকারই।’’ তবে এর জন্য শিক্ষার অধিকার আইনে প্রয়োজনীয় সংশোধনীটি আনবে মন্ত্রক। সূত্রের খবর, দক্ষিণের তিন রাজ্য বাদে বাকি সব রাজ্য বৈঠকে পরীক্ষা ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনার পক্ষে সওয়াল করেছে। জাভড়েকর বলেন, ‘‘ফের পরীক্ষা চালু করা হলে তার জন্য তৈরি হতে ছাত্র-ছাত্রীদের অন্তত এক বছর সময় দিতে হবে। তাই সব দিক ভেবেচিন্তে পদক্ষেপ করা হবে।’’

Advertisement

ছাত্র-ছাত্রীদের সামগ্রিক মানও চিন্তায় রেখেছে কেন্দ্রকে। বর্তমানে শিক্ষা ক্ষেত্রে জিডিপি-র প্রায় সাড়ে চার শতাংশের বেশি ব্যয় করা হয়। তা সত্ত্বেও একাধিক জাতীয় সমীক্ষা বলছে, কোনও একটি শ্রেণিতে ছাত্র-ছাত্রীদের যা শেখা উচিত, সেই মানের ধারে কাছেও পৌঁছাতে পারছে না তারা। শিক্ষা ব্যবস্থার এই খামতি দূর করতে কোন ক্লাসে ছাত্রদের কোনও বিষয় কতটা শেখা উচিত, তা নিয়ে একটি স্পষ্ট নীতি তৈরি করতে চলেছে সরকার। জাভড়েকর বলেন, ‘‘প্রথম থেকে চতুর্থ শ্রেণির জন্য এই নীতি তৈরি হবে। যেখানে প্রতিটি ক্লাসের শেষে মূল্যায়ন করে দেখা হবে ছাত্রদের যা শেখা উচিত, তা তারা শিখতে পেরেছে কি না। তবে কেউ মূল্যায়নে কাঙ্ক্ষিত মান ছুঁতে না পারলেও তার উপরের ক্লাসে ওঠা আটকাবে না।’’

এখন সমস্ত রাজ্য বোর্ড ও আইসিএসসি বোর্ডের ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য প্রথম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পাশ-ফেল নেই। সিবিএসসি বোর্ডের ছাত্র-ছাত্রীদের ক্ষেত্রে এই ছাড় রয়েছে দশম শ্রেণি পর্যন্ত। জল্পনা ছিল, আজকের বৈঠকে ফের সিবিএসএসি বোর্ডের দশম শ্রেণির পরীক্ষা ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু জাভড়েকর জানান, আজকের বৈঠকে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। দ্রুত এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ভাবনা নেই বলেও তিনি ইঙ্গিত দেন। জাভড়েকর বলেন, ‘‘সিবিএসসি বোর্ডে খুব অল্প ছেলে-মেয়ে পড়ে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন