—প্রতীকী ছবি।
একটু আরামে সফর করতে বেশি টাকা দিয়ে এসি কামরার টিকিট কেটেছিলেন সবাই। কিন্তু সেই যাত্রার অভিজ্ঞতা যে এত ভয়াবহ হবে, তা কে ভেবেছিল? তবে শেষ পর্যন্ত রেলের তত্পরতাতেই নরকযন্ত্রণা থেকে মুক্তি মিলল কিছু ক্ষণের মধ্যে। সৌজন্যে আবারও রেলের সেই টুইটার হ্যান্ডেল।
রক্সৌল-সেকেন্দ্রাবাদ স্পেশ্যাল ট্রেনের এসি থ্রি টিয়ারে পটনা থেকে নাগপুরের টিকিট কেটেছিলেন অরবিন্দ কুমার। ভোগান্তির শুরু গত শুক্রবার রাতে পটনা স্টেশনে ট্রেনে ওঠার আগে থেকেই। সময় পেরিয়ে গেলেও ট্রেন আসছে না। অথচ কোনও ঘোষণাও নেই। অপেক্ষমান যাত্রীদের জন্য কোনও বিশেষ ব্যবস্থাও নেওয়া হয়নি। স্টেশন থেকেই রেল মন্ত্রকের টুইটারে অরবিন্দ অভিযোগ জানান, বহুক্ষণ লেট থাকা সত্ত্বেও কোনও রকম ঘোষণা করা হয়নি। এমনকী রাতের ঘুমন্ত পটনা স্টেশনের একটি ছবি তুলেও টুইটারে পোস্ট করেন অরবিন্দ। সেই ছবিতে দেখা যায়, স্টেশনের ডিসপ্লে বোর্ডে ট্রেনের পৌঁছনোর সময় দেখাচ্ছে ১১টা ৩০ মিনিট। কিন্তু অরবিন্দ জানান, তখন ঘড়িতে সময় রাত ১২টা ৫০। অরবিন্দর এই টুইট দেখার কিছু ক্ষণের মধ্যেই উত্তর দেওয়া হয় রেল মন্ত্রকের তরফে। জানান হয়, শীঘ্রই সংশ্লিষ্ট অফিসারের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অবশেষে ৮ ঘণ্টা দেরিতে পটনা স্টেশনে পৌঁছয় রক্সৌল-সেকেন্দ্রাবাদ স্পেশ্যাল ট্রেন।
অরবিন্দের টুইট করা পটনা স্টেশনের ছবি।
এর পরের অভিজ্ঞতা আরও ভয়ানক। স্পেশ্যাল ট্রেনের এসি কামরা, তাই দামটাও ছিল স্পেশ্যাল। কড়কড়ে ৭২০০ টাকা দিয়ে টিকিট কেটেছিলেন অরবিন্দ। কিন্তু চাকা গড়াতে না গড়াতেই একের পর এক সমস্যা ধরা পড়তে থাকল। এসি খারাপ হয়ে গেল। কামরার ময়লা, আবর্জনা পরিষ্কার পর্যন্ত হয়নি। দুর্গন্ধ ছাড়ছে কামরা জুড়ে। তার উপর জল নেই। নিরুপায় অরবিন্দ শেষ পর্যন্ত পিএনআর এবং কোচ নম্বর লিখে, সব জানিয়ে টুইট করেন রেল মন্ত্রকের অফিসিয়াল টুইটার হ্যান্ডেলে। জবাবও পান তৎক্ষণাৎ।
আরও পড়ুন: সুষমা-ছোঁয়ায় ভিসা, আপ্লুত পাক বাবা
অরবিন্দর তৎপরতায় শেষ পর্যন্ত ট্রেনের এসি ঠিক হয়, জল আসে, এবং আবর্জনা পরিষ্কারও হয় মুহূর্তের মধ্যে। রেল মন্ত্রককে ধন্যবাদও জানান অরবিন্দ।
পরিষ্কার না হওয়া আবর্জনা। ছবি: টুইটার।
ট্রেনের কামরায় জল না থাকা থেকে শুরু করে নিম্ন মানের খাবার, ট্রেন লেট থেকে শুরু করে অপরিচ্ছন্নতা, রোজই ট্রেনযাত্রা সংক্রান্ত হরেক সমস্যার সমাধান হচ্ছে রেল মন্ত্রকের টুইটার অ্যাকাউন্টের দৌলতে। কখনও অসুস্থ ছেলের জন্য টুইট করে চলন্ত ট্রেনেই মেডিক্যাল টিমের সাহায্য পেয়েছেন অসহায় বাবা। কখনও টুইটারে সমস্যার কথা জেনে সদ্যোজাতের জন্য দুধ জোগাড় করে দিয়েছে রেল। আবার কোলের শিশুর জন্য ডায়পার পেতেও রেল মন্ত্রকের টুইটারের দারস্থ হয়েছেন মা। প্যান্ট্রিকারে বেসরকারি সংস্থার দাদাগিরির মুখে পড়েও মুশকিল আসান হয়েছে এই সোশ্যাল মিডিয়ার সাহায্য। অরবিন্দের ক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম হয়নি।
প্রধানমন্ত্রীর ‘কানেক্ট পিপল’ বার্তার পর থেকেই আম-আদমির সঙ্গে সংযোগ বাড়াতে উদ্যোগী হয়েছে রেল মন্ত্রক। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের মধ্যে টুইটারের মাধ্যমে জন-অভিযোগ নেওয়ার ব্যাপারেও রেলমন্ত্রী সুরেশ প্রভুকে অন্যতম পথিকৃৎ বলা যায়। ইতিমধ্যেই ২৭ লক্ষ ২০ হাজার মানুষ রেলের টুইটার অ্যাকাউন্টের ফলোয়ার। জনসংযোগে টুইটার অ্যাকাউন্টকে ভাল ভাবে কাজে লাগিয়েছেন আর এক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুষমা স্বরাজও।