National News

পেলেট গান আর নয়! কাশ্মীরে বিক্ষোভ সামলাতে এ বার পাভা শেল?

কাশ্মীরের উন্মত্ত জনতাকে সামলাতে আর পেলেট গান নয়, পরিবর্তে আনা হচ্ছে পাভা শেল। এই নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষাও শুরু হয়ে গিয়েছে। এ বিষয়ে কেন্দ্র সাত সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ২৬ অগস্ট ২০১৬ ১৪:০২
Share:

পেলেটে আহত। ফাইল চিত্র।

কাশ্মীরের উন্মত্ত জনতাকে সামলাতে আর পেলেট গান নয়, পরিবর্তে আনা হচ্ছে পাভা শেল। এই নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষাও শুরু হয়ে গিয়েছে। এ বিষয়ে কেন্দ্র সাত সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে। ওই কমিটিতে রয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের আধিকারিক, বিএসএফ, সিআরপিএফ, জম্মু-কাশ্মীর পুলিশ, আইআইটি-দিল্লি এবং অর্ডন্যান্স ফ্যাক্ট্রি বোর্ডের সদস্যরা। নতুন এই অস্ত্রটি কতটা কার্যকরী হবে তা নিয়ে চলছে গবেষণা। কাউন্সিল অব সায়েন্টিফিক অ্যান্ড রিসার্চ (সিআইএসআর)-এর তত্ত্বাবধানে ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব টক্সিকোলজি রিসার্চ (আইআইটিআর) পাভা শেল তৈরি করেছে।

Advertisement

২০১০-এ প্রথম পেলেট গানের ব্যবহার শুরু হয়। সে বছর কাশ্মীর যখন উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল, জনতাকে সামলাতে পেলেট গানের ব্যবহার করেন নিরাপত্তাকর্মীরা। সেই শুরু। তার পর থেকে কাশ্মীরে এই ধরনের ঝামেলা সামলাতে পেলেটের ব্যবহার বেড়ে যায়। বেড়ে যায় আহতের সংখ্যাও। এই পেলেট ব্যবহারের ফলে মারাত্মক ভাবে জখন হন সেখানকার বিক্ষোভকারীরা। এর প্রভাব এত মারাত্মক যে কেউ কেউ দৃষ্টিশক্তিও হারিয়ে ফেলেন। পেলেট গান ব্যবহার নিয়ে কম বিতর্ক হয়নি।

সম্প্রতি বুরহান ওয়ানির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে কাশ্মীর যখন জ্বলে উঠেছিল, তখনও পুলিশকে পেলেট গান ব্যবহার করতে হয়। আট থেকে আশি অনেকই এই পেলেটের আঘাতে মারাত্মক ভাবে জখম হন। চোখে পেলেট ঢুকে গিয়ে অনেকে দৃষ্টিশক্তিও হারান। আহতদের ছবি যখন সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে পড়ে, সমালোচনার মুখে পড়তে হয় কেন্দ্রকে। প্রশ্ন ওঠে, পেলেটের মারাত্মক ফল জানা সত্ত্বেও কেন তা ব্যবহার করতে নিরাপত্তাকর্মীদের নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে। এ বার সেই পথ থেকে সরে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র। আর পেলেট নয়, পরিবর্ত হিসাবে ভাবা হয়েছে পাভা শেলকে।

Advertisement

কী এই পাভা শেল? কতটাই বা এর শক্তি?

• পুরো নাম পেলারগনিক অ্যাসিড ভ্যানিলিল অ্যামাইড (পাভা)। লঙ্কা বা মরিচ গুঁড়োতে পাওয়া যায় এই অর্গ্যানিক কমপাউন্ড। এর থেকেই পাভা নামটি দেওয়া হয়েছে। একে নোনিভ্যামাইডও বলা হয়। জৈব পদার্থ দিয়ে তৈরি হওয়ার কারণে পেলেট গানের থেকে অনেক কম ক্ষতিকর। তবে পেলেট গানের মতোই কার্যকরী। ফুড অ্যাডিটিভ হিসাবেও ব্যবহার করা হয় এই জৈব যৌগ।

• গবেষকরা জানাচ্ছেন, এই শেল যার গায়ে লাগবে তার শরীরে প্রচন্ড জ্বলন হবে এবং যে অংশে লাগবে তা বেশ কিছু সময়ের জন্য অবশ হয়ে থাকবে। এক বার এই শেল ফাটলে তা লক্ষ্যকে বেশ কিছু ক্ষণের জন্য অনড় করে দেবে। অনেক বিশেষজ্ঞের মতে, এটি টিয়ার গ্যাস শেল এবং পেপার স্প্রে-র থেকে অনেক বেশি কার্যকরী।

• এই ধরনের শেলের প্রাথমিক ভাবে পরীক্ষা করা হয়ে গিয়েছে। গত এক বছর ধরে এর উপর পরীক্ষা চালিয়ে আসছে ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব টক্সিকোলজি।

যদি পাভা শেল ব্যবহারে ছাড়পত্র না পায়, তা হলে এর বিকল্প কী রয়েছে?

এক সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, পেলেট গানের বিকল্প হিসেবে জ্বলনশীল ডাই মার্কার গ্রেনেড ব্যবহার করার কথাও ভাবা হচ্ছে। শরীরে যেখানে লাগবে সেখানে জ্বলতে শুরু করবে। এই ধরনের গ্রেনেড ব্যবহারের ফলে বিক্ষোভকারীদের চিহ্নিত করতেও সুবিধা হবে। এ ছাড়া টিয়ার স্মোক শেলের কথাও ভাবা হয়েছে।

কিন্তু যা নিয়ে এত বিতর্ক সেই পেলেট গান কী?

পেলেট অনেক ধরনের হয়। সাধারণত ছোট ছোট বিয়ারিংয়ের বলের মতো দেখতে হয় এদের। কার্তুজের ভিতরে প্রায় কয়েকশো এ রকম ছোট ছোট ধাতব বল থাকে। ফায়ারিংয়ের পর কার্তুজের খোল ফেটে গিয়ে বলগুলি গিয়ে শরীর ভেদ করে ঢুকে যায়। চিকিত্সকরা জানাচ্ছেন, এতে পঙ্গু হয়ে যাওয়ার আশঙ্কাও থাকে। ছোট ছোট বলের মতো হওয়ায় অস্ত্রোপচার করে তাদের বের করতেও সমস্যা হয়।

বুরহান ওয়ানির মৃত্যুর পর অশান্ত উপত্যকাকে শান্ত করতে যে ধরনের পেলেট গান ব্যবহার করা হয়েছে, তা ২০১০-এর তুলনায় অনেকটাই আলাদা। এই পেলেটগুলো আর গোলাকৃতি নয়, খাঁজকাটা। চিকিত্সকরা বলছেন, যা অনেক বেশি ক্ষতিকারক এবং ভয়ানক। বিতর্ক আরও এই কারণেই যে, পেলেটগুলো ফায়ার করা হয়েছে মানুষের চোখ লক্ষ্য করে। আট থেকে আশি সকলেই এর শিকার।

আরও খবর...

প্রশ্নে আগুন মেহবুবা, রাজনাথ কিন্তু শান্তই

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement