পেমা খান্ডু। ফাইল চিত্র।
অরুণাচলের সর্বকনিষ্ঠ মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিলেন ৩৭ বছরের পেমা খান্ডু। সে রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী প্রয়াত দোরজি খান্ডুর ছেলে পেমা এই মুহূর্তে দেশের কনিষ্ঠতম মুখ্যমন্ত্রীও বটে। শনিবার নাবাম টুকি অরুণাচলের মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার পর কংগ্রেস পরিষদীয় দলের সর্বসম্মত নেতা নির্বাচিত হন পেমা। আজ রবিবার রাজ্যের দশম মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিলেন তিনি।
শপথ বাক্য পাঠ করানোর পর অরুণাচলের কার্যনির্বাহী রাজ্যপাল তথাগত রায় জানিয়ে দেন, ৫৮ সদস্যের অরুণাচল বিধানসভায় আর আস্থা ভোট নিয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠতার প্রমাণ দিতে হবে না পেমাকে। শনিবার ৪৫ জন বিধায়ককে সঙ্গে নিয়েই তথাগতর কাছে সরকার গঠনের দাবি জানিয়ে এসেছিলেন পেমা। রাজ্যপাল জানান, পেমার প্রতি সংখ্যাগরিষ্ঠ বিধায়কের সমর্থন নিয়ে কোনও সংশয় নেই তাঁর। ফলে ফ্লোর টেস্টের কোনও প্রয়োজন নেই।
রীতিমতো নাটকীয় ঘটনা প্রবাহের মধ্যে দিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর গদিতে বসলেন পেমা খান্ডু। বলা যেতে পারে নবীন এই মুখকে সামনে এনেই অরুণাচল প্রদেশের সরকার নিজেদের হাতে রাখতে পারল কংগ্রেস। গত বুধবার সুপ্রিম কোর্টের রায়ে কংগ্রেসের নাবাম টুকির সরকার ক্ষমতা ফিরে পায়। কিন্তু আস্থাভোটে তাঁকে হারিয়ে ফের ক্ষমতায় ফেরার স্বপ্ন দেখছিলেন অমিত শাহরা। শনিবার হওয়ার কথা ছিল সেই আস্থাভোট। ৩০ জন বিদ্রোহী কংগ্রেস বিধায়ক স্পষ্ট জানিয়ে দেন টুকির পক্ষে তাঁরা কোনও মতেই ভোট দেবেন না। এঁদের মধ্যে ছিলেন গত ফেব্রুয়ারিতে বিজেপির সমর্থন নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর গদিতে বসা কংগ্রেস বিধায়ক কালিখো পুলও।
শুক্রবার রাতভর নাটকের পর টুকি-পুল দুই শিবিরই বুঝে যায়, মুখ্যমন্ত্রী পদের জন্য গোঁ ধরে না থেকে সরকার টিকিয়ে রাখলেই লাভ বেশি। পুল শিবিরের এক বিধায়কের ব্যাখ্যা: ভোটের তিন বছর বাকি। রাষ্ট্রপতি শাসন বা নতুন করে ভোট হলে কারও লাভ নেই। এই তিন বছরে বরং কেন্দ্রের বিস্তর টাকা আসবে রাজ্যে। সড়ক ও বিদ্যুৎ প্রকল্পের কাজ চলছে। এই অবস্থায় মন্ত্রিত্ব ও বিধায়কপদ চেলে গেলে কারও লাভ নেই। তাই আপসের রাস্তাই ছিল যুক্তিসঙ্গত।
সেই অনুযায়ী শনিবার সকালেই ইস্তফা দেন টুকি। বিদ্রোহে জল ঢেলে পুলকেও দলের বৈঠকে পেমার নাম প্রস্তাব করতে হয়। আমে-দুধে মিশে যাওয়ার মতোই পুল শিবিরের বিধায়করাও জানিয়ে দেন, তাঁরা টুকিদের সঙ্গে কংগ্রেসেই থাকছেন। কারণ তাঁদের দাবি ছিল টুকিকে সরাতে হবে। কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্ব সেই দাবি মেনে নিয়েই পেমাকে মুখ্যমন্ত্রী করার কথা জানায়। মাঝখান থেকে আশায় আশায় বসে থাকা বিজেপিকে এই দানেও হতাশ হয়েই বসে থাকতে হল।
আরও খবর...