বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত ডিমা হাসাও

তিন দিন টানা বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত জিমা হাসাও জেলার জনজীবন। রাজ্যের অন্য প্রান্তের সঙ্গে জেলার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। পাহাড়ি ধসে হাফলঙে প্রচুর বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

হাফলং শেষ আপডেট: ১৮ মে ২০১৬ ০২:৫৪
Share:

বৃষ্টিতে ডিমা হাসাওয়ের রাস্তায় নেমেছে ধস। ছবি: বিপ্লব দেব।

তিন দিন টানা বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত জিমা হাসাও জেলার জনজীবন। রাজ্যের অন্য প্রান্তের সঙ্গে জেলার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। পাহাড়ি ধসে হাফলঙে প্রচুর বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

Advertisement

পুলিশ জানায়, মাহুরে হড়পা বানে ভেসে গিয়েছে এক স্কুলছাত্রী। আজ সকালে স্কুলের পথে একটি কাঠের সেতু পার হওয়ার সময় ভিক্টোরিয়াল মেমোরিয়াল স্কুলের ছাত্রী কেরলিং রংমাই (১০) টাল সামলাতে না পেরে নীচে পড়ে যায়। পাহাড় থেকে নেমে আসা প্রচণ্ড জলের স্রোত তাকে ভাসিয়ে নিয়ে যায়। এ দিন সন্ধে পর্যন্ত তার হদিস মেলেনি।

বৃষ্টিতে এন লেইকুলের কাছে ইস্ট-ওয়েস্ট করিডরে ধস নেমেছে। তার জেরে হাফলং–লামডিং সংযোগকারী রাস্তা বন্ধ হয়ে পড়েছে। লোয়ার হাফলঙের কাছে পাহাড় থেকে বড় বড় পাথর রাস্তায় পড়েছে। লঙ্কুক ও ছনটিলা, দিহাঙ্গিতে ধস নেমে হাফলং-গুয়াহাটি সড়ক বন্ধ হয়ে গিয়েছে। শতাধিক গাড়ি ধসকবলিত এলাকার দু’দিকে আটকে রয়েছে। দিবারাই, ডিগরিক, মহাদেব টিলাতে ধস নেমে হাফলং শহরে আসার রাস্তা বন্ধ হয়ে। প্রশাসন ও পূর্ত বিভাগ ধস সরানোর কাজ করছে। কিন্তু বৃষ্টিতে কাজে সমস্যা হচ্ছে। হাফলং শহরের কনভেন্ট রোড এলাকায় পাহাড় থেকে নেমে আসা ধসে একটি বাড়ির উপরে পড়ে। তবে তাতে হতাহতের কোনও খবর নেই। ধসে শহরের বিভিন্ন জায়গায় ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগে হাফলং শহর-সহ জেলার বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুৎ পরিষেবা ব্যাহত হয়। কয়েকটি জায়গায় পাহাড় ধসে বড় বড় গাছ, পাথর নেমে বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে পড়েছে। বিদ্যুৎ পর্ষদ সূত্রে জানা গিয়েছে, পরিষেবা স্বাভাবিক করতে কিছুটা সময় লাগবে। বৃষ্টিতে কাজে সমস্যা হচ্ছে। তবে হাফলং শহরের কয়েকটি এলাকায় বিদ্যুৎ পরিষেবা স্বাভাবিক হয়েছে।

Advertisement

লাগাতার বৃষ্টিতে লামডিং-শিলচর ব্রডগেজ লাইনে মাহুর-মাইগ্রেনডিসার মধ্যে ৮ নম্বর সুড়ঙ্গের কাছে ধস নেমেছে। ফাইডিং স্টেশনের কাছে কয়েক দিন আগে যে জায়গায় ধস নেমেছিল, গত রাতে ফের সেখানেই ধস নামে।

নিউহাফলং-জাটিঙ্গালামপুরের মধ্যে কিছুটা জায়গায় ধস নেমে লাইন বসে যায়। রেলকর্মীরা ধস সরানোর কাজ শুরু করেছেন। কিন্তু বৃষ্টির জেরে এক বার ধস সরানোর পরেই ফের পাহাড় থেকে সেখানে পাথর, মাটি নামছে।

গত রাতে গুয়াহাটি থেকে শিলচরগামী ফাস্ট প্যাসেঞ্জার ট্রেনকে লামডিং স্টেশনে আটকে রাখা হয়েছে। ট্রেন চলাচল কবে স্বাভাবিক হবে, তা নিয়ে উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেল নিশ্চিত করে কিছু জানাতে পারেনি।

লাগাতার বৃষ্টির পরিপ্রেক্ষিতে ডিমা হাসাও প্রশাসন ও দুর্যোগ মোকাবিলা বিভাগ পার্বত্য জেলায় সতর্কতা জারি করেছে। এ দিন জেলার স্কুল-কলেজ বন্ধ করার নির্দেশ দেয় প্রশাসন। সাধারণ মানুষকে বাড়ি থেকে না বেরনোর কথা বলা হয়েছে। আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানানো হয়েছে, আগামী তিন দিন ডিমা হাসাও জেলায় বৃষ্টি চলবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
আরও পড়ুন