Paris Olympics 2024

ভারতের অলিম্পিক্সের ইতিহাসে প্রথম বার, প্যারিসে গিয়ে কখন ঘুমোবেন নীরজেরা, বলে দেবেন ‘স্লিপ অ্যাডভাইজ়ার’

এই প্রথম বার ভারতের অলিম্পিক্স দলে এক নতুন ঘটনা ঘটতে চলেছে। নীরজ চোপড়াদের সঙ্গে প্যারিসে যাবেন ‘স্লিপ অ্যাডভাইজ়ার’। খেলোয়াড়দের ঘুমের দিকে নজর থাকবে তাঁর।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৯ জুন ২০২৪ ০১:১৪
Share:

এ বার প্যারিসে হচ্ছে অলিম্পিক্স। —ফাইল চিত্র।

রিয়ো অলিম্পিক্সে সোনা জেতার আগের রাতে ঘুমোতে পারেননি নীরজ চোপড়া। গেমস ভিলেজে নিজের ঘরের বিছানায় শুয়ে এ পাশ, ও পাশ করেছিলেন। নীরজের একা এই সমস্যা হয়নি। অলিম্পিক্সের মতো প্রতিযোগিতায় অনেকেরই ঘুমের সমস্যা হয়। তার ফলে প্রতিযোগিতার সময় ১০০ শতাংশ দিতে পারেন না তাঁরা। সেটা যাতে না হয় তার জন্য পদক্ষেপ করেছে ভারত। এই প্রথম বার ভারতের অলিম্পিক্স দলে এক নতুন ঘটনা ঘটতে চলেছে। নীরজদের সঙ্গে প্যারিসে যাবেন ‘স্লিপ অ্যাডভাইজ়ার’। খেলোয়াড়দের ঘুমের দিকে নজর থাকবে তাঁর। কাকে কত ক্ষণ ঘুমোতে হবে, কখন ঘুমোতে হবে সেই পরামর্শ দেবেন তিনি।

Advertisement

২৬ জুলাই শুরু হচ্ছে অলিম্পিক্স। চলবে ১১ অগস্ট পর্যন্ত। জুলাই-অগস্ট মাসে ইউরোপে দিনের দৈর্ঘ্য বেশি হয়। ভোর ৪টেয় সূর্যোদয় হয়। সূর্যাস্ত হয় রাত ১১টায়। ফলে এই সময় খেলোয়াড়দের অনিয়মিত ঘুম হয়। সেই কারণেই ভারতীয় অলিম্পিক্স সংস্থা ‘স্লিপ অ্যাডভাইজ়ার’ নিয়োগ করেছে। ভারতের সঙ্গে যে মেডিক্যাল দল যাবে তারা গেমস ভিলেজে ভারতীয় খেলোয়াড়দের জন্য স্লিপিং পডের ব্যবস্থা করবে। দলের প্রত্যেককে দেওয়া হবে স্লিপিং কিট।

‘স্লিপ অ্যাডভাইজ়ার’ হিসাবে নিয়োগ করা হয়েছে মণিকা শর্মাকে। তিনি প্যারিসে যাবেন। কী লক্ষ্য থাকবে তাঁর? মণিকা বলেন, “প্রথম লক্ষ্য হবে এমন একটা পরিবেশ তৈরি করা যেখানে খেলোয়াড়েরা নিশ্চিন্তে ঘুমোতে পারবে। গেমস ভিলেজে প্রচুর খেলোয়াড় থাকে। তা ছাড়া অলিম্পিক্সের চাপও থাকে। তাই সেখানে ভাল করে ঘুমনো যায় না। আমাদের কাজ হবে খেলোয়াড়দের সাহায্য করা।”

Advertisement

পেনসিলভেনিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যুক্ত থাকা মণিকা ইতিমধ্যেই নিজের কাজ শুরু করে দিয়েছেন। অলিম্পিক্সের যোগ্যতা অর্জন করা অনেক খেলোয়াড়ের সঙ্গে কথা বলছেন তিনি। ঘুমের ক্ষেত্রে তাঁদের কী ধরনের সমস্যা হয় তা জানার চেষ্টা করছেন। প্রাথমিক কথাবার্তায় তিনি জানতে পেরেছেন, অনেক খেলোয়াড় ঘুমের দিকে তেমন নজর দেন না। তাই তাঁর প্রথম কাজ হবে সেই সব খেলোয়াড়দের শেখানো যে ভাল খেলতে গেলে ভাল ঘুমের কতটা প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।

মণিকা জানিয়েছেন, খেলোয়াড়দের তিনটি গ্রুপে ভাগ করেছেন তিনি। এক দলের এই প্রক্রিয়া সম্পর্কে কোনও ধারণাই নেই। আর এক দল আগে অলিম্পিক্সে গিয়ে ঘুমের সমস্যায় পড়েছিলেন। তাই তাঁরা কথা বলতে চান। আর তৃতীয় দল পদক জিততে এতটাই মরিয়া যে তাঁরা কোনও রকমের সাহায্য নিতে চান না।

এই প্রসঙ্গে মণিকা বলেন, “অলিম্পিক্সের মতো প্রতিযোগিতায় খেলোয়াড়েরা দক্ষতার দিক থেকে প্রায় কাছাকাছি থাকে। কিন্তু ঠিক মতো ঘুমোতে পারলে খেলার সময় নিজেদের দক্ষতার শীর্ষে থাকে তারা। তখনই প্রতিপক্ষকে পরাস্ত করতে পারে তারা। আমরা চাই, ভারতীয় খেলোয়াড়েরা নিজেদের দক্ষতায় পদক জিতুক। কেউ যেন না বলে যে ভাগ্যের জোরে জিতেছে।”

প্যারিসে অন্য অলিম্পিক্সের তুলনায় কঠিন পরিস্থিতিতে পড়তে পারেন খেলোয়াড়েরা। তার কারণ, জুলাই-অগস্ট মাসে সেখানকার তাপমাত্রা। যথেষ্ট গরম থাকবে প্যারিসে। তার মধ্যে দিনের দৈর্ঘ্য বেশি থাকবে। ফলে সমস্যা বাড়বে। গেমসে ভিলেজে এসি-ও থাকে না।

এই পরিস্থিতি মোকাবিলা করার চেষ্টা করছেন মণিকা। তিনি বলেন, “সেই কারণেই আমরা বিশেষ ধরনের স্লিপ কিট তৈরি করেছি। সেখানে স্লিপ মাস্ক, ট্র্যাভেল পিলো, ইয়ার প্লাগ থাকবে। সেখানে ঘুম আসতে সুবিধা হবে।”

ঘুম ভাল মতো হলে খেলোয়াড়দের চোট লাগার প্রবণতাও কমবে বলে জানিয়েছেন মণিকা। তিনি বলেন, “সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, প্রতিযোগিতায় নামার আগে ভাল মতো ঘুমোলে চোট লাগার সম্ভাবনা ৬৮ শতাংশ কমে। তাই ক্রীড়াবিদদের নির্দিষ্ট সময় ঘুমের দরকার। সে দিকেই নজর রাখব আমরা।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement