দু’দশকের স্মৃতি বেয়ে বিদায় সনিয়া গাঁধীর

সভাপতি পদে দীর্ঘতম ইনিংস শেষে পুত্রের হাতে দলের দায়িত্ব তুলে দিচ্ছেন সনিয়া গাঁধী। সেই সন্ধিক্ষণে আবেগ ঝরল ২৪ আকবর রোডে। মনমোহন সিংহও বললেন, ‘‘আজ গলায় আবেগ এলে মাফ করবেন।’’

Advertisement

দিগন্ত বন্দ্যোপাধ্যায়

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৭ ডিসেম্বর ২০১৭ ০৪:১১
Share:

আমি আছি: দলের দায়িত্ব এ বার ছেলের হাতে। কংগ্রেস সভাপতি হিসেবে সনিয়া গাঁধী শেষ বক্তৃতাটি দেওয়ার পরে মাকে আদর নতুন সভাপতি রাহুলের। শনিবার নয়াদিল্লিতে দলের সদর দফতরে।

একদৃষ্টে মায়ের দিকে চেয়ে রাহুল গাঁধী। মঞ্চের নীচে বসা প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরার চোখেও যেন জল-চিকচিক।

Advertisement

বাজির শব্দে বলতেই পারছেন না। থমকে গিয়ে ডাকলেন ছেলেকে, ‘‘আমি চিৎকার করতে পারছি না।’’ মঞ্চ ছেড়ে ছুটলেন রাহুল। বাজি বন্ধ করতে বললেন রক্ষীদের। ফিরে মায়ের কানের কাছে মুখ নিয়ে গিয়ে বললেন, ‘‘একটু থেমে যাও।’’

সভাপতি পদে দীর্ঘতম ইনিংস শেষে পুত্রের হাতে দলের দায়িত্ব তুলে দিচ্ছেন সনিয়া গাঁধী। সেই সন্ধিক্ষণে আবেগ ঝরল ২৪ আকবর রোডে। মনমোহন সিংহও বললেন, ‘‘আজ গলায় আবেগ এলে মাফ করবেন।’’

Advertisement

আরও পড়ুন: মোদীকে তিন মুখে আক্রমণ

এআইসিসি দফতরে রাহুলের ঘরের নেমপ্লেট থেকে টুইটার— আজ জুড়েছে ‘সভাপতি’ শব্দটা। ছেলের অভিষেকের মঞ্চে সনিয়া বললেন, ‘‘কুড়ি বছর আগে সভাপতি হয়ে যখন বক্তৃতা দিই, বুক ধুকপুক করছিল, হাত কাঁপছিল। ভাবতেও পারছিলাম না, কী করে এত বড় ঐতিহাসিক দল সামলাব।’’ বললেন ইন্দিরা-হত্যার পরে মা-হারানোর যন্ত্রণার কথা। বললেন, স্বামী-সন্তানদের রাজনীতি থেকে দূরেই রাখতে চেয়েছিলেন। কাঁধে দায়িত্ব এসে পড়েছিল বলেই প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন রাজীব গাঁধী। ইন্দিরার সাত বছর পরে রাজীবও খুন হলেন। চলে গেল শেষ সহায়টুকু।

দম্পতি: আনুষ্ঠানিক ভাবে কংগ্রেস সভাপতির দায়িত্ব িনলেন রাহুল গাঁধী। সেই অনুষ্ঠানে হাজির প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরা এবং রবার্ট বঢরা। শনিবার দিল্লিতে কংগ্রেসের সদর দফতরে।

অনেক বছর লেগেছিল ধাক্কাটা কাটতে। তার পর এক দিন দেখলেন, কংগ্রেস দুর্বল হচ্ছে। ক্ষমতা বাড়ছে ‘সাম্প্রদায়িক শক্তি’র। তখন দলের ডাকেই রাজনীতিতে এলেন। তবে অন্য নেতারা মনে করিয়ে দিয়েছেন, রাহুল-প্রিয়ঙ্কাকে কখনও রাজনীতিতে আসতে চাপ দেননি সনিয়া।

‘অবসরের’ কথা বলেছিলেন কাল। প্রশ্ন ওঠে, পরের বার কি রায়বরেলীতে দাঁড়াবেন মেয়ে? আজ প্রিয়ঙ্কার জবাব, ‘‘প্রশ্নই নেই। মা-ই লড়বেন। তাঁর মতো বাহাদুর মহিলা দেখিনি।’’

সনিয়ার বক্তৃতা শেষ হতেই এগিয়ে এলেন রাহুল। কাছে টেনে চুমু খেলেন মায়ের কপালে।

ছবি: পিটিআই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন