জরিমানার ভয়ে জরায়ু বাদ দিচ্ছেন মহিলা আখ শ্রমিকরা!

খুব সম্প্রতি একটি সর্বভারতীয় দৈনিকে এই খবর দেখে চমকে উঠেছিল মহারাষ্ট্রের জাতীয় মহিলা কমিশন। সব দিক খতিয়ে দেখে তারা এ নিয়ে গত কাল নোটিস পাঠিয়েছে রাজ্যের মুখ্যসচিবকে।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

মুম্বই শেষ আপডেট: ১১ এপ্রিল ২০১৯ ০২:০৪
Share:

ঋতুস্রাবের সময়ে শরীর ভাল না থাকলে এক-আধ দিন কাজে যেতে পারেন না তাঁরা। কিন্তু ঠিকাদার সে কথা শুনবেন না। এক-এক দিন কাজে কামাইয়ের জন্য দিতে হয় ৫০০ করে টাকা। তাই নিজেদের জরায়ু বাদ দিয়ে এখন বন্ধ্যত্বকরণের রাস্তায় হাঁটছেন মহারাষ্ট্রের বিড় জেলার মহিলা আখ শ্রমিকেরা।

Advertisement

খুব সম্প্রতি একটি সর্বভারতীয় দৈনিকে এই খবর দেখে চমকে উঠেছিল মহারাষ্ট্রের জাতীয় মহিলা কমিশন। সব দিক খতিয়ে দেখে তারা এ নিয়ে গত কাল নোটিস পাঠিয়েছে রাজ্যের মুখ্যসচিবকে। যে ঠিকাদারদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাঁদের যেন উপযুক্ত শাস্তি দেওয়া হয়, মুখ্যসচিবকে সেই অনুরোধও জানিয়েছে মহিলা কমিশন। কমিশনের চেয়ারপার্সন রেখা শর্মার বক্তব্য, যে পরিস্থিতিতে ওই সব মহিলা শ্রমিক আখের খেতে কাজ করছেন, তা শোচনীয়। বিষয়টি নিয়ে কমিশন যে উদ্বিগ্ন, তা-ও জানিয়েছেন তিনি।

অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত আখ চাষের মরসুম। পশ্চিম মহারাষ্ট্রের বিড় জেলায় ওই সময়ে ভিড় জমান প্রচুর সংখ্যক শ্রমিক। আখ কাটার কাজ করেন মূলত মহিলা শ্রমিকেরা। তাঁদের স্বামীরা করেন খেতের অন্য কাজ। এক এক জন দম্পতিকে এক এক ‘ইউনিট’ হিসেবে ধরা হয়। সেই মতোই তাঁদের মজুরি দেন ঠিকাকর্মীরা। কিন্তু অভিযোগ, মাসের তিন-চার দিন ঋতুস্রাবের সময়ে শরীর খারাপ থাকলে মহিলা শ্রমিক যদি কাজ করতে না আসতে পারেন, সে ক্ষেত্রে তাঁর স্বামী তো মজুরি পান-ই না। উল্টে নিজেদের পকেট থেকে দিন প্রতি ৫০০ টাকা করে ঠিকাদারদের দিতে হয় তাঁদের। গ্রামের মানুষেরা জানিয়েছেন, এই নিয়মই এই সব অঞ্চলের দস্তুর। তাই টাকা কাটা যাওয়ার ভয়ে দু’-তিন সন্তানের মায়েরা এখন জরায়ু বাদ দিয়ে বন্ধ্যত্বকরণের রাস্তা বেছে নিচ্ছেন। তাতে মাসে কোনও দিন কাজও কামাই হচ্ছে না। আর সেই সঙ্গে মোটা টাকা জরিমানাও দিতে হচ্ছে না।

Advertisement

আজ কোথায় কোথায় ভোট, দেখে নিন

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

মুখ্যসচিব ইউপিএস মদনের কাছে নোটিস পাঠিয়ে রেখা শর্মা জানিয়েছেন, এই অত্যাচারের শিকার যে সব মহিলা, তাঁদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা ও সমাজের মূলস্রোতে ফেরাতে রাজ্য সরকার কী, কী পদক্ষেপ করল, তা যেন কমিশনকে জানানো হয়। সেই সঙ্গেই অভিযুক্ত ঠিকাদারদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতেও অনুরোধ করেছে কমিশন, যাতে ভবিষ্যতে মহিলাদের এই ধরনের অমানবিক আচরণের শিকার হতে না-হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন