ভোটার তালিকা সংশোধনের কাজ। — ফাইল চিত্র।
অসমে কেন ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধন (এসআইআর) হচ্ছে না? তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে এ বার মামলা দায়ের হল সুপ্রিম কোর্টে। অসমের ক্ষেত্রে এসআইআর-এর পরিবর্তে ভোটার তালিকার বিশেষ সংশোধন (স্পেশাল রিভিশন) করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। তাদের এই সিদ্ধান্তকেই চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে নতুন মামলায়।
সম্প্রতি বিহারে বিধানসভা ভোট মিটেছে। তার ঠিক আগে আগেই বিহারে এসআইআর হয়েছে। তার পরে দ্বিতীয় দফায় দেশের আরও ১২টি রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে এসআইআর-এর সিদ্ধান্ত নেয় কমিশন। তালিকায় পশ্চিমবঙ্গের পাশাপাশি রয়েছে তামিলনাড়ু, কেরল এবং পুদুচেরি। এই চার রাজ্যেই আগামী বছর বিধানসভা নির্বাচন রয়েছে। আগামী বছর বিধানসভা ভোট রয়েছে অসমেও। তবে সেখানে এসআইআর হচ্ছে না।
কেন অসমে এসআইআর হচ্ছে না, তা নিয়ে দ্বিতীয় দফায় এসআইআর ঘোষণার সময় থেকেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছিল। কারণ, কমিশনই অতীতে জানিয়েছিল, বিশেষ করে আগামী বছর বিধানসভা নির্বাচন রয়েছে এমন রাজ্যগুলিতে ওই সংশোধনের কাজ প্রথমে শুরু হবে। বিতর্কের মাঝে ব্যাখ্যাও দিয়েছিল কমিশন। মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমারের বক্তব্য ছিল, ভারতীয় নাগরিকত্ব আইনে অসম রাজ্যের জন্য আলাদা ধারা রয়েছে।
জ্ঞানেশ ওই সময়ে আরও বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের তত্ত্বাবধানে অসমে নাগরিকত্বের যাচাইকরণ প্রায় শেষ পর্যায়ে। আর গোটা দেশের জন্য এসআইআর সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি যেহেতু ২৪ জুন প্রকাশ করা হয়েছে, সেই কারণে অসমে তা প্রযোজ্য নয়।” পরে অসমে পৃথক ভাবে ভোটার তালিকার বিশেষ সংশোধন করার সিদ্ধান্ত নেয় কমিশন। কমিশন সূত্রে দাবি করা হয়, অসমের প্রক্রিয়াটি বার্ষিক সংশোধন প্রক্রিয়ার মতো ঢিলেঢালা নয়। আবার এসআইআর-এর মতো নিবিড়ও নয়। এই দুই প্রক্রিয়ার একটা মাঝামাঝি ব্যবস্থা বলা যায়।
এ অবস্থায় কেন অন্য রাজ্য বা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির মতো অসমেও এসআইআর হচ্ছে না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে মামলা হল সুপ্রিম কোর্টে। মামলাকারী গুয়াহাটি হাই কোর্টের বার অ্যাসোসিয়েশনের প্রাক্তন সভাপতি মৃণালকুমার চৌধুরী কমিশনের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করেছেন এই মামলায়। তাঁর বক্তব্য, অসমে তুলনামূলক লঘু মানের সংশোধনেরর নির্দেশ দিয়ে কমিশন স্বেচ্ছাচারী এবং বৈষম্যমূলক আচরণ করছে। তাঁর আরও দাবি, অসমে প্রচুর অবৈধ অভিবাসী রয়েছেন। তাঁদের নামও বর্তমান ভোটার তালিকায় রয়েছে। এ অবস্থায় এসআইআর না-হলে আসন্ন বিধানসভা ভোটে এই অবৈধবাসীরাও ভোট দিতে পারবেন। এর ফলে অসমের সামাজিক এবং রাজনৈতিক কাঠামোর উপর ব্যাপক প্রভাব পড়বে বলে আশঙ্কা মামলাকারীর।