পীযূষ গয়াল। ফাইল চিত্র।
নিন্দুকেরা কেউ বলছেন, পীযূষ গয়াল নামেই অর্থমন্ত্রী! আসলে নাকি বাড়িতে বসে সব কাজ চালাচ্ছেন অরুণ জেটলিই। আবার একদম উল্টো কথা বলছেন কেউ কেউ। তাঁদের দাবি, পীযূষ নাকি অর্থমন্ত্রীর গদি ছাড়তেই চাইছেন না। তাই আতঙ্কিত অরুণ জেটলিকে কিডনি প্রতিস্থাপনের পর গৃহবন্দি থেকেই রোজ ব্লগ লিখে নিজের উপস্থিতি জানান দিতে হচ্ছে।
এই সব গুঞ্জন আর কটাক্ষের জবাব দিতেই যেন আজ অরুণ জেটলির ভূয়সী প্রশংসা শোনা গেল খোদ পীযূষ গয়ালের মুখে। মুম্বইয়ে এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাঙ্কের অনুষ্ঠানে গয়াল মুক্ত কণ্ঠে বললেন, অর্থমন্ত্রী হিসেবে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের অনাদায়ী ঋণ সমস্যার সমাধানের পুরো কৃতিত্বই জেটলির। তাঁর কথায়, ‘‘প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বিশ্বাস করেন, কঠিন পরিস্থিতি এড়িয়ে না গিয়ে সরাসরি মোকাবিলা করা উচিত। জেটলি তাই অনাদায়ী ঋণ সমস্যার সত্যটি দেশের সামনে এনেছেন। এ বার আমাদের ব্যাঙ্কের সামনে ভাল সময় আসতে চলেছে। ব্যাঙ্ক কর্তাদের মধ্যে আবার ক্ষুদ্র-মাঝারি শিল্প, ছোট ব্যবসায়ীদের ঋণ দেওয়ার জন্য উৎসাহ দেখা যাচ্ছে।’’
গয়ালের বক্তব্য শুনে অবশ্য নতুন করে প্রশ্ন উঠছে, এই প্রশংসা কতখানি আন্তরিক, আর কতখানি দায়ে পড়ে? কারণ অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়ে গয়াল নিজেই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক কর্তাদের সঙ্গে দু’বার বৈঠক করেছেন। দেশের ব্যাঙ্কগুলির অনাদায়ী ঋণের বোঝা ২০১৭-র ডিসেম্বরের শেষে ৮.৯৯ লক্ষ কোটি টাকায় পৌঁছেছে। যার সিংহভাগই সরকারি ব্যাঙ্কের খাতায়। অর্থ মন্ত্রকের সংসদীয় স্থায়ী কমিটি ১১টি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের কর্তাকে মঙ্গলবার তলব করেছে। সূত্রের খবর, ঋণ না শোধ হওয়ায় নতুন ঋণের স্রোত শুকিয়ে যাচ্ছে দেখেই গয়ালকে ব্যাঙ্ক-কর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসতে হয়েছে। অনাদায়ী ঋণ ও লোকসানের বোঝায় মুখ থুবড়ে পড়া আইডিবিআই ব্যাঙ্কের সিংহভাগ মালিকানা এলআইসি-কে দিয়ে কেনানোর চেষ্টা হচ্ছে। যা নিয়ে কংগ্রেস আজ প্রশ্ন তুলেছে।
এ দিকে জেটলি বাড়িতেই এয়ার ইন্ডিয়া নিয়ে বৈঠক করেছেন। সেখানেই এয়ার ইন্ডিয়ার মালিকানা বেচার সিদ্ধান্ত হয়। মুখ্য অর্থনৈতিক উপদেষ্টা অরবিন্দ সুব্রহ্মণ্যন তাঁর ইস্তফার সিদ্ধান্তও জেটলিকেই জানিয়েছেন। কংগ্রেসের অভিযোগ, জেটলি মন্ত্রক-বিহীন অর্থমন্ত্রী। তিনিই ব্লগ লিখে অর্থ মন্ত্রক চালাচ্ছেন।