ত্রিদেশ সফরে রওনা হওয়ার আগে দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ছবি: পিটিআই।
নজরে সন্ত্রাসবাদ থেকে শুরু করে এইচ-ওয়ান বি ভিসা প্রসঙ্গ। একইসঙ্গে জলবায়ু দূষণ রোধের প্রশ্নে মার্কিন প্রশাসনের উপর কৌশলগত ভাবে কিছুটা চাপ তৈরি করা। ত্রিমুখী এই লক্ষ্যেই শনিবার সকালে মার্কিন সফরে রওনা হলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। চার দিনের বিদেশ সফরে প্রধানমন্ত্রী আজ পৌছবেন পর্তুগাল। সেখান থেকেই আমেরিকা যাবেন তিনি। সব শেষে নেদারল্যান্ড হয়ে দেশে ফেরা।
প্রধানমন্ত্রীর এই সফরে সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক। মোদীর সঙ্গে এই বৈঠককে আলাদা ভাবে গুরুত্ব দিচ্ছে ট্রাম্প প্রশাসনও। রবিবার সকাল ৬টা নাগাদ ওয়াশিংটনে পা রাখবেন প্রধানমন্ত্রী। রীতিমতো, রেড কার্পেটে তাঁকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত ট্রাম্প প্রশাসন। সোমবার, ২৬ জুন মুখোমুখি বসতে চলেছেন দু’দেশের শীর্ষপ্রধান। হোয়াইট হাউসের তরফে জানানো হয়েছে, ওই দিন স্থানীয় সময় বেলা সাড়ে তিনটে নাগাদ দুই প্রধানের দেখা হবে। প্রায় পাঁচ ঘণ্টা একান্তে কাটাবেন তাঁরা। পরে প্রতিনিধি পর্যায়ের একটি বৈঠক হবে। সে দিন হোয়াইট হাউসে নৈশভোজে যোগ দেওয়ার কথা প্রধানমন্ত্রীর। প্রেসিডেন্ট হিসাবে শপথ নেওয়ার পর এই প্রথম কোনও রাষ্ট্রনেতার সম্মানে হোয়াইট হাউসে নৈশভোজের আয়োজন করছেন ট্রাম্প। এ দিন বিদেশ সফর শুরুর আগে টুইট করেন মোদী। এই সফরে নয়াদিল্লি-ওয়াশিংটনের মধ্যে কৌশলগত সম্পর্ক আরও মজবুত হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন মোদী।
আরও পড়ুন: মোদীর সফরের আগে ভারতকে প্রিডেটর ড্রোন ‘উপহার’ ট্রাম্পের
ট্রাম্পের সঙ্গে মোদীর আসন্ন বৈঠকে বিশেষ গুরুত্ব পেতে চলেছে সন্ত্রাসবাদ এবং এইচ-ওয়ান বি ভিসা প্রসঙ্গ। পাশাপাশি, প্যারিস জলবায়ু চুক্তি নিয়ে দুই শীর্ষ প্রধানের কথা হবে বলেও বিদেশ মন্ত্রক সূত্রে খবর। গত মাসেই নয়াদিল্লি এবং বেজিংয়ের দিকে অভিযোগের অঙুল তুলে প্যারিস চুক্তি থেকে সরে গিয়েছে হোয়াইট হাউস। ভারতীয় কূটনীতিকদের আশা, ট্রাম্পের সঙ্গে আলোচনার টেবিলে জলবায়ু দূষণ রোধের প্রশ্নে কিছুটা চাপ তৈরি করতে পারবেন মোদী। কারণ, ইতিমধ্যেই প্যারিস জলবায়ু চুক্তি নিয়ে বেজিং ও মস্কোর সঙ্গে একটি কৌশলগত অক্ষ তৈরি করেছে দিল্লি।
এর আগে মোদী এবং ট্রাম্পের মধ্যে তিন বার ফোনে কথা হয়েছে। কিন্তু, মুখোমুখি সাক্ষাৎ এই প্রথম। বারাক ওবামার আমলে আমেরিকার সঙ্গে ভারতের সুসম্পর্ক ছিল। প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে মোট আট বার দেখা করেছিলেন মোদী। ট্রাম্প জমানাতেও সেই দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার পক্ষপাতী প্রধানমন্ত্রী। ৪৫তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ গ্রহণের দিন রাতেই মোদীকে ফোন করেন ট্রাম্প। সেই ফোনালাপে আগামী দিনে দু’দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে আরও মজবুত করার প্রতিশ্রুতিও ছিল৷ পরে উত্তরপ্রদেশ নির্বাচনে জেতার পরেও মোদীকে ফোনে শুভেচ্ছা জানিয়েছিলেন ট্রাম্প।
এ বার তাঁদের প্রথম দেখার দিকে তাকিয়ে গোটা দুনিয়া।