জাপানে প্রবাসী ভারতীয়দের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ছবি: সমাজমাধ্যম।
আগামী শনিবার পর্যন্ত জাপানে থাকবেন মোদী। ‘উদীয়মান সূর্যের দেশ’ থেকেই তিনি রওনা দেবেন চিনে, সাংহাই কোঅপারেশন অর্গানাইজেশন (এসসিও) সম্মেলনে যোগ দিতে। তবে চিন সফরের আগে তাঁরা জাপান সফরকে তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে। এই সফরে জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবার সঙ্গেও বৈঠক করবেন তিনি। যে দেশগুলির সঙ্গে ভারতের বৃহত্তর কৌশলগত অংশীদারি রয়েছে, জাপান তাদের মধ্যে অন্যতম। সেই বোঝাপড়া আরও বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে মোদী-ইশিবার বৈঠকের পর।
প্রধানমন্ত্রীর এই সফরে ভারত এবং আমেরিকার মধ্যে একাধিক সমঝোতাপত্র (মউ) এবং চুক্তি স্বাক্ষরিত হতে পারে। সেগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল যৌথ ভাবে বুলেট ট্রেন তৈরি। একাধিক সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুসারে, ই১০ শিনকানসেন গোত্রের উন্নত মানের বুলেট ট্রেন যৌথ ভাবে তৈরির বিষয়ে প্রাথমিক কথাবার্তা সেরে ফেলতে পারে নয়াদিল্লি এবং টোকিয়ো। ভারতে জাপানি বিনিয়োগ নিয়েও সে দেশের শিল্পমহলের সঙ্গে কথা বলতে পারেন মোদী। স্বাভাবিক ভাবে অর্থনৈতিক আলোচনায় ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং তাঁর শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্তের বিষয়টি আসতে পারে। রাশিয়া থেকে তেল কেনার জন্য ইতিমধ্যেই ভারতের অধিকাংশ পণ্যের উপর মোট ৫০ শতাংশ শুল্ক চাপিয়েছেন ট্রাম্প। এই অবস্থায় ভারতীয় পণ্য বিক্রির নয়া বাজার খুঁজতে হচ্ছে দিল্লিকে, যেখানে বিনা শুল্কে বা কম শুল্ক দিয়ে সেগুলি বিক্রি করা যায়। জাপানে তেমন সম্ভাবনা রয়েছে কিনা, তা খতিয়ে দেখতে চাইছে নয়াদিল্লি।
ভারতে জাপানের রাষ্ট্রদূত সিবি জর্জ সংবাদ সংস্থা এএনআই-কে জানিয়েছেন, সাম্প্রতিক ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে দুই রাষ্ট্রপ্রধানের মধ্যে কথা হবে। কথা হবে চতুর্দেশীয় অক্ষ ‘কোয়াড’ নিয়েও। প্রসঙ্গত, ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় এলাকায় বেজিঙের ‘প্রভাব’ যথাসম্ভব কম রাখতে একযোগে কাজ করে ভারত, আমেরিকা, জাপান এবং অষ্ট্রেলিয়ার চতুর্দেশীয় অক্ষ ‘কোয়াড’। কিন্তু ট্রাম্পের শুল্কযুদ্ধ নয়াদিল্লি-ওয়াশিংটন এই বৃহত্তর কৌশলগত অংশীদারিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে মনে করছেন অনেকে। এই পরিস্থিতিতে ‘কোয়াড’-এর গুরুত্বপূর্ণ সদস্য জাপানের সঙ্গে সম্পর্ক ঝালিয়ে নিতে চাইছে ভারত। কেন্দ্রের একটি সূত্রের খবর, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই), সেমিকন্ডাক্টরের ব্যবহার নিয়েও জাপানের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা করবেন মোদী। এর আগে ২০১৮ সালে জাপান সফরে গিয়েছিলেন মোদী। সাত বছর পর ফের সে দেশে গেলেন তিনি।