(বাঁ দিকে) নরেন্দ্র মোদী এবং শশী তারুর (ডান দিকে)। শুক্রবার কেরলে। ছবি: সংগৃহীত।
একাধিক বিষয়ে গত কয়েক দিন ধরেই কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদী সরকারের প্রশংসা করতে দেখা যাচ্ছে তাঁকে। তিনি বিজেপিতে যোগ দিতে পারেন কি না, মাঝে তা নিয়েও জল্পনা শুরু হয়। এই আবহে শুক্রবার কেরলে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে একই মঞ্চে দেখা গেল তিরুঅনন্তপুরমের কংগ্রেস সাংসদ শশী তারুরকে। আর কংগ্রেস এবং বিরোধী শিবিরের অস্বস্তি বাড়িয়ে রসিকতার সুরে মোদী বললেন, “আজকের অনুষ্ঠান অনেকের ঘুম উড়িয়ে দেবে।” প্রধানমন্ত্রী অবশ্য কারও নাম করেননি।
বৃহস্পতিবার কেরলে পৌঁছোন মোদী। তাঁকে স্বাগত জানাতে তিরুঅনন্তপুরম বিমানবন্দরে উপস্থিত ছিলেন কেরলের মুখ্যমন্ত্রী তথা সিপিএম নেতা পিনারাই বিজয়ন এবং তারুর। শুক্রবার কেরলের তিরুঅনন্তপুরম লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত ভিড়িনজাম সমুদ্রবন্দরের উদ্বোধন করেন মোদী। ৮৮৬৭ কোটি টাকায় নির্মিত এই সমুদ্রবন্দর নির্মাণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে আদানি গোষ্ঠীর।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মোদীর সঙ্গেই উপস্থিত ছিলেন বিজয়ন এবং তারুর। বক্তব্যের মাঝে হঠাৎ বিজয়নের দিকে তাকিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী, আমি আপনাকে বলতে চাই যে, আপনি বিরোধী জোট ইন্ডিয়ার গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ। শশী তারুরও এখানে বসে রয়েছেন। আজকের অনুষ্ঠানের পর অনেকের ঘুম উড়ে যাবে!” গম্ভীর ভাবেই কথাগুলি বলেন মোদী। তবে তাঁর হিন্দি বক্তব্যের মালয়লম তর্জমা যখন শোনানো হচ্ছিল, তখন হেসে ফেলেন মোদী। দর্শকাসনে বসেও অনেকে হেসে ফেলেন। বিজয়ন এবং তারুর অবশ্য দৃশ্যতই খানিকটা অস্বস্তিতে পড়ে যান।
অনেকেই মনে করছেন, ওই মন্তব্য করে মোদী যেমন বিরোধী জোট ইন্ডিয়ায় ফাটল উস্কে দিতে চেয়েছেন, তেমনই কংগ্রেসের তারুর-অস্বস্তি আরও বাড়িয়ে দিতে চেয়েছেন। ঘটনাচক্রে, উদ্বোধনী ফলকেও স্থানীয় সাংসদ হিসাবে নাম রয়েছে তারুরের।
সম্প্রতি আমেরিকায় প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে নরেন্দ্র মোদীর বৈঠকের প্রশংসা করেছিলেন তারুর। তা নিয়ে কংগ্রেসের অন্দরেই প্রশ্ন ওঠে। সেই সময় তিরুঅনন্তপুরমের কংগ্রেস সাংসদ ইঙ্গিতপূর্ণ ভাবে জানিয়েছিলেন, তিনি কংগ্রেসের জন্য কাজ করতে সব সময়েই প্রস্তুত। কিন্তু দলের তাঁকে প্রয়োজন না-হলে ‘অন্য অনেক কিছুই’ করার আছে তাঁর। অবশ্য দলবদলের কোনও পরিকল্পনা তাঁর নেই বলেই জানিয়েছিলেন তারুর।
পহেলগাঁও কাণ্ডের পরও ভারত সরকারের অবস্থানকে সমর্থন করেন প্রাক্তন কূটনীতিক তারুর। জানান সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলায় ভারত কী পদক্ষেপ করে, তা দেখার জন্য সবাই বসে রয়েছে। তারুরের ওই ‘দলবিরোধী’ অবস্থান নিয়ে কংগ্রেসের অন্দরে ফের প্রশ্ন ওঠে। এই আবহে মোদীর কেরল সফরে তারুরের ‘সক্রিয়তা’ এবং ‘প্রধানমন্ত্রীর ঘুম উড়ে যাবে’ রসিকতায় কংগ্রেসের অস্বস্তি আরও বাড়ল বলে মনে করা হচ্ছে।