৭৭তম স্বাধীনতা দিবসের বক্তৃতা দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। মঙ্গলবার লাল কেল্লায়। ছবি: পিটিআই।
স্বাধীনতা দিবসের মঞ্চে প্রতিবারই তিনি কিছু না কিছু চমক দেন। কখনও দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর পোশাক, কখনও বাণী, কখনও তাঁর বাচনভঙ্গি নিয়ে হয় আলোচনা। ৭৭ তম স্বাধীনতা দিবসেও দিল্লির লাল কেল্লায় সেই ধারায় বিচ্যুতি হল না। এ বার দেশবাসীকে নতুন সম্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী। এত দিন বলে এসেছেন ‘মেরে পেয়ারে দেশবাসীও’ অর্থাৎ ‘আমার আদরের দেশবাসী’। মঙ্গলবার সেই দেশবাসীকে ‘পরিবারজন’, অর্থাৎ পরিবারের সদস্য বলে অভিহিত করলেন মোদী। যদিও বিরোধীরা বলছেন, দেশবাসীর সঙ্গে এই হঠাৎ ‘ঘনিষ্ঠতার’ কারণ আসন্ন লোকসভা ভোট হলে আশ্চর্য হবেন না তাঁরা।
এক সময় দেশবাসীর উদ্দেশে মোদী তাঁর বক্তৃতা শুরু করতেন ‘মিত্রোঁ’ অর্থাৎ ‘বন্ধু’ সম্বোধনে। ওটাই ছিল তাঁর ‘সিগনেচার’। ২০১৪ সালের পর ২০১৯-এ ক্ষমতায় আসার পর মোদীর সম্বোধনে যোগ হয় নতুন কয়েকটি বিকল্প। বহু জনসভায় মোদী উপস্থিত জনগণকে ‘ভাইয়ো অর বেহনোঁ’ বলে সম্বোধন করেছেন। আবার স্বাধীনতা দিবসের মঞ্চে তাঁকে ‘আদরের দেশবাসী’ বলতেও শোনা গিয়েছে গত বেশ কয়েক বছরে। মঙ্গলবার সেই চেনা লব্জের বদল তাই অনেকেরই কানে লেগেছে। একই সঙ্গে চোখে পড়েছে এই বদলের সঙ্গে শেষ পর্যন্ত মোদীর তাল রাখতে না পারাও।
মঙ্গলবার মোদী তাঁর বক্তৃতার প্রথম ৪০ মিনিটের প্রতিটি বাক্যের শুরুতে দেশবাসীকে সম্বোধন করেছেন ‘‘আমার আদরের পরিবারের সদস্য’’ বলে। কিন্তু দেড় ঘণ্টার বক্তৃতার শেষের দিকে বেশ কয়েক বার সম্বোধন বদলেও যায়। মোদী তাঁর পুরনো ডাক প্রিয় দেশবাসীতে প্রত্যাবর্তন করেন। সম্ভবত বক্তৃতার তোড়ে ভুলে গিয়েই। তা ছাড়া মঙ্গলবার ১৫ অগস্টের সকালে চড়া রোদ উঠেছিল দিল্লিতে। উপস্থিত অভ্যাগতদের অনেককেই দেখা যায় দরদরিয়ে ঘামতে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মাথার উপর রুমাল চাপা দিয়েছিলেন। অনেকে আসনে বসে রুমাল নেড়ে হাওয়াও খাচ্ছিলেন বক্তৃতা শুনতে শুনতে। মোদী নিজেও ডায়াসে দাঁড়িয়ে চশমা খুলে মুখ মুছছিলেন রুমালে। তার মধ্যে তাঁর সম্বোধনের ভাষায় দু’একবার বদল অস্বাভাবিক নয় বলেই মত মোদীপন্থীদের।
যদিও বিরোধীরা বলেছেন, আসন্ন লোকসভা ভোটের আগে প্রধানমন্ত্রীর এই বচন বদলও আসলে এক অন্য রকম প্রচার।