সিবিআই অস্ত্র কংগ্রেসের, বিজেপির ইডি

পিএনবি প্রতারণায় গত কালই সিবিআই নতুন এফআইআর দায়ের করেছে। তা বলছে, মোদী জমানায় তো বটেই, শুধু চলতি অর্থবর্ষ অর্থাৎ ২০১৭-’১৮-তেই পিএনবি থেকে মেহুল চোক্সীর তিনটি সংস্থাকে ১৫১টি ভুয়ো ‘লেটার অব আন্ডারটেকিং’ বা ব্যাঙ্ক গ্যারান্টি দেওয়া হয়েছিল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০৩:৫৩
Share:

ছবি: পিটিআই।

পিএনবি-কেলেঙ্কারি কাদের জমানায়— তা নিয়ে শুরু হয়ে গেল চাপানউতোর।

Advertisement

কংগ্রেস বনাম বিজেপি দ্বৈরথে আজ সিবিআইয়ের এফআইআর-কেই অস্ত্র করল রাহুল গাঁধীর দল। অন্য দিকে ইডি-কে হাতিয়ার করার চেষ্টা চালাল নরেন্দ্র মোদী সরকার।

পিএনবি প্রতারণায় গত কালই সিবিআই নতুন এফআইআর দায়ের করেছে। তা বলছে, মোদী জমানায় তো বটেই, শুধু চলতি অর্থবর্ষ অর্থাৎ ২০১৭-’১৮-তেই পিএনবি থেকে মেহুল চোক্সীর তিনটি সংস্থাকে ১৫১টি ভুয়ো ‘লেটার অব আন্ডারটেকিং’ বা ব্যাঙ্ক গ্যারান্টি দেওয়া হয়েছিল। কংগ্রেস নেতা কপিল সিব্বল বলেন, ‘‘গোটা কেলেঙ্কারিটাই মোদী জমানায়। মোদী জমানায় ৩৬৭টি ব্যাঙ্ক গ্যারান্টি দেওয়া হয়েছে। তার প্রায় অর্ধেকই এ বছর দেওয়া হয়েছে। কী করে এত সহজে ব্যাঙ্ক গ্যারান্টি পাইয়ে দেওয়া হল? এটাই কি মোদী সরকারের ইজ অফ ডুয়িং বিজনেস?’’

Advertisement

সিবিআই অভিযোগকে হাতিয়ার করে কংগ্রেস এমন অভিযোগ তোলায় বেকায়দায় মোদী সরকার। এলাহাবাদ ব্যাঙ্কের প্রাক্তন মনোনীত ডিরেক্টর দীনেশ দুবে অভিযোগ করেছিলেন, তিনি ২০১৩-তেই অর্থ মন্ত্রককে মেহুল চোক্সীর বিরুদ্ধে সতর্ক করেছিলেন। তা সত্ত্বেও এলাহাবাদ ব্যাঙ্ককে ঋণ মঞ্জুর করা হয়। আজ দুবের বয়ান নথিভুক্ত করেছে ইডি। আর দুবের এই অভিযোগকে সামনে রেখেই কংগ্রেসকে নিশানা করছে বিজেপি। যদিও ক্ষমতায় আসার এত দিন পরেও মোদী সরকার কেন এগুলো দেখল না, কেন তার পরেও নিয়ম ভেঙে মেহুলের সংস্থাকে ব্যাঙ্ক গ্যারান্টি দেওয়া হল, সেই প্রশ্ন তাড়া করছে বিজেপিকেই। কংগ্রেসের আরও প্রশ্ন, হরি প্রসাদ-সহ তিন ব্যক্তি ২০১৫-তেই প্রধানমন্ত্রীর দফতরে মেহুল চোক্সীর বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছিলেন। তার পরেও প্রধানমন্ত্রী কোনও ব্যবস্থা নেননি কেন?

বিজেপি যে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে প্রমাণ হাতড়াচ্ছে, তারও আরও নমুনা মিলেছে। এ দিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী নির্মলা সীতারামন অভিযোগ করেন, নীরব মোদীর সংস্থা মুম্বইয়ে একটি সংস্থার বাড়ি ভাড়া নিয়েছিল। সেই সংস্থার ডিরেক্টর হলেন কংগ্রেস নেতা অভিষেক মনু সিঙ্ঘভির স্ত্রী অনিতা ও ছেলে অভিস্কার। নীরবের ফায়ারস্টার সংস্থাও আগে অনিতার কোম্পানির মালিকানাধীন ছিল বলে অভিযোগ তোলেন নির্মলা। নির্মলার অভিযোগের জবাবে আজ অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি সীতারামনের বিরুদ্ধে দেওয়ানি এবং ফৌজদারি মামলার হুমকি দিয়েছেন। কলকাতায় এক অনুষ্ঠানের ফাঁকে সিঙ্ঘভি জানান, অদ্বৈত হোল্ডিংস নামে একটি সংস্থার ডিরেক্টর তাঁর স্ত্রী এবং ছেলে। বিভিন্ন জায়গায় তাদের বাণিজ্যিক সম্পত্তি আছে। তার মধ্যে পারেলে রয়েছে কমলা মিলস। নীরবের সংস্থা ফায়ারস্টোন বহু বছর আগে কমলা মিলস ভাড়া নিলেও গত ডিসেম্বরে ওই বাড়ি তারা ছেড়েও দিয়েছে।

নীরব-কাণ্ডে অস্বস্তি ঢাকতে এ দিন কলকাতায় কেন্দ্রীয় অসামরিক বিমান প্রতিমন্ত্রী জয়ন্ত সিনহা বলেন, ‘‘২০১০ সালে ইউপিএ আমলে এই সব দুর্নীতির শুরু। মোদীজির আমলে বিমুদ্রাকরণ, বেনামি সম্পত্তি রোখা, কালো টাকা উদ্ধারের তৎপরতা বাড়তেই এগুলো সামনে এসেছে।’’ জয়ন্তের এমন দাবি উড়িয়ে সিব্বলের কটাক্ষ, ‘‘লোককে পকোড়া বানাতে বলে চৌকিদার ঘুমোচ্ছে! এ দিকে
চোর উধাও!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন