Pocso Court

POCSO: বিহারে এক দিনে রায় পকসো মামলার

বিহারের আরারিয়া জেলার মহিলা থানায় ২৩ জুলাই দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রী ওই নাবালিকাকে ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের হয়।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

পটনা শেষ আপডেট: ০৬ ডিসেম্বর ২০২১ ০৭:৩৪
Share:

বছরের পর বছর মামলা চলতে থাকার নজির আছে অনেক। কিন্তু বিহারে এক দিনেই শেষ হয়ে গিয়েছে পকসো আইনের অধীনে দায়ের হওয়া মামলার শুনানি। আট বছরের একটি মেয়েকে ধর্ষণের দায়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়েছে এক যুবকের। এই মামলাকে পকসো আইনের অধীনে ‘সবচেয়ে কম সময় ধরে চলা মামলা’ বলে দাবি করেছে বিহার সরকার।

Advertisement

বিহারের আরারিয়া জেলার মহিলা থানায় ২৩ জুলাই দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রী ওই নাবালিকাকে ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের হয়। ওই অভিযোগে এক সপ্তাহের মধ্যে গ্রেফতার হয় বছর ত্রিশের দিলীপ যাদব। ১৮ সেপ্টেম্বর অভিযুক্তের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেয় আরারিয়া মহিলা থানার ওসি রীতা কুমারীর নেতৃত্বাধীন তদন্তকারী দল। মেডিক্যাল রিপোর্ট ও অভিযুক্তকে চিহ্নিত করে নাবালিকার জবানবন্দি পেশ করেন তদন্তকারীরা। ডিএনএ পরীক্ষা করানো হয়নি। ২০ সেপ্টেম্বর অভিযুক্তের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করে আদালত।

৪ অক্টোবর পকসো আদালতে মামলা শুরু হয়। ভিডিয়ো কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে জেল থেকে হাজিরা দেয় দিলীপ।

Advertisement

সরকার পক্ষ নির্যাতিতা, তার বাবা-মা, ভাই-সহ ১০ জন সাক্ষীকে উপস্থিত করে। সে দিনই সকলের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়। দীলিপের পক্ষে কেউ সাক্ষ্য দেননি। দিলীপের বাবা-মা দিনমজুর। তাঁরা জানিয়ে দেন, ছেলের সঙ্গে কোনও সম্পর্ক রাখতে চান না। ৪ অক্টোবরই মামলার শুনানি হয়ে যায়। দিলীপকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়ার পাশাপাশি নির্যাতিতাকে ২ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে সরকারকে নির্দেশ দিয়েছে আদালত।

সরকারি আইনজীবী শ্যামলাল যাদবের বক্তব্য, ‘‘আমাদের সওয়ালের ভিত্তি খুবই মজবুত ছিল। মেডিক্যাল রিপোর্ট ও নির্যাতিতার রক্তমাখা জামাকাপড় থেকেই প্রমাণ হয়েছিল তাকে ধর্ষণ করা হয়েছে। নির্যাতিতা অভিযুক্তকে শনাক্ত করে। সাক্ষীরাও আমাদের সাহায্য করেন।’’ শ্যামলাল জানিয়েছেন, সকাল সাড়ে ন’টায় শুনানি শুরু হয়। বিকেল পাঁচটায় রায় দেয় আদালত।

দিলীপের আইনজীবী বিনীত প্রকাশ জানান, তাঁর মক্কেলের পরিবার তার পাশে দাঁড়ায়নি। ফলে গোড়া থেকেই তাঁর সওয়ালের ভিত্তি মজবুত ছিল না। তিনি সওয়ালে জানান, নির্যাতিতার যৌনাঙ্গে যে ক্ষত হয়েছে তা বাঁশ ঝাড়ে শৌচকাজ করার জন্যও হয়ে থাকতে পারে। কোথায় এই ঘটনা ঘটেছে তাও এফআইআর থেকে স্পষ্ট নয় বলে জানিয়েছিলেন বিনীত। ম্যাজিস্ট্রেট ও আদালতের কাছে দেওয়া নির্যাতিতার জবানবন্দিতেও অসঙ্গতি আছে বলে জানিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু আদালত সে যুক্তি মানেনি।

এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে যাওয়ার কোনও পরিকল্পনা এখনও নেই বিনীতের। কারণ, তাঁকে সরকার থেকে দিলীপের পক্ষ সমর্থন করতে বলা হয়েছিল। এখন আপিল করতে গেলে দিলীপের পরিবারের কোনও সদস্যকে জেলা লিগ্যাল এড পরিষেবার সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে। নির্যাতিতার পরিবার জানিয়েছে, এই রায় বিচার ব্যবস্থার উপরে তাদের বিশ্বাস বাড়িয়েছে। তাদের আশা, মানসিক ধাক্কা কাটিয়ে নির্যাতিতা ফের স্কুলে যেতে পারবে।

বিহারে নিম্ন আদালতে প্রায় ৪ লক্ষ ৭০ হাজার দেওয়ানি ও ২৮ লক্ষ ৯৫ হাজার ফৌজদারি মামলা ঝুলে রয়েছে। পকসো মামলায় দোষী সাব্যস্ত হওয়ার ক্ষেত্রে কিন্তু দেশের মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে সে রাজ্য। তবে এক দিনে মামলার শুনানি হয়ে রায়দান বিরল ঘটনা বলেই মনে করছেন আইনজীবীরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন