ইনদওর থেকে মেঘালয়ে মধুচন্দ্রিমায় গিয়েছিলেন সোনম এবং রাজা রঘুবংশী। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।
মেঘালয়ে রাজা রঘুবংশীর খুনের ঘটনায় প্রমাণ লোপাটের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে মোট তিন জনকে। তাঁদের মধ্যে এক জন রাজার স্ত্রী সোনমের প্রেমিক রাজ কুশওয়াহার ল্যাপটপের ব্যাগ জ্বালিয়ে দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ। ল্যাপটপটি ফেলে দিয়েছিলেন রাস্তায়। তাঁর কথার ভিত্তিতে তল্লাশি চালিয়ে নদী থেকে দেশি পিস্তল, বেশ কিছু ম্যাগাজ়িন এবং কার্তুজ উদ্ধার করা হয়েছে। এর ভিত্তিতে রাজার খুনের তদন্ত অন্য মোড় নিতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। খুনের পরিকল্পনা সম্বন্ধে আরও বিশদে জানা যেতে পারে ধৃতদের বয়ান থেকে।
মেঘালয় পুলিশের বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) ইনদওরের অপরাধদমন শাখার সঙ্গে মিলে কাজ করছে। ইনদওরের একটি নদী থেকে সিট পিস্তল, কার্তুজ উদ্ধার করেছে বলে খবর। পূর্ব খাসি হিলের এসপি বিবেক সিয়েম জানিয়েছেন, প্রমাণ লোপাটের অভিযোগে ধৃত সিলোম জেমসকে জিজ্ঞাসাবাদ করে ওই পিস্তল এবং কার্তুজের কথা জানা গিয়েছিল। সেই মতো নির্দিষ্ট জায়গায় গিয়ে তল্লাশি চালালে জিনিসগুলি পাওয়া গিয়েছে। ৩২ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করেছে মেঘালয় পুলিশ।
সিলোম জমির কারবারি। পুলিশ সূত্রে খবর, তিনি রাজের পরিচিত ছিলেন। রাজ গ্রেফতার হওয়ার পর তিনি তাঁর ল্যাপটপের ব্যাগটি নিয়ে বেরিয়ে পড়েছিলেন। ব্যাগ থেকে ল্যাপটপ বার করে রাস্তায় কোথাও তা ফেলে দেন। তার পর ল্যাপটপের ব্যাগটিতে আগুন ধরিয়ে দেন। সেই ল্যাপটপ এখনও খুঁজে পায়নি পুলিশ। এ ছাড়া, সিলোমের গাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ৫০ হাজার টাকা নগদ। মেঘালয় থেকে ইনদওরে বেশ কিছু গয়না নিয়ে এসেছিলেন সোনম। সেই গয়নাগুলির খোঁজ চলছে।
প্রমাণ লোপাটের অভিযোগে সিলোম ছাড়াও গ্রেফতার করা হয়েছে ফ্ল্যাটের মালিক লোকেন্দ্র তোমর এবং নিরাপত্তারক্ষী বলবীরকে। বৃহস্পতিবার এই তিন জনকেই শিলঙে নিয়ে যাওয়া হবে এবং স্থানীয় আদালতে হাজির করানো হবে। তাঁদের হেফাজতে চাইবে পুলিশ।
বিয়ের পর ইনদওর থেকে মেঘালয়ে মধুচন্দ্রিমায় গিয়েছিলেন সোনম এবং রাজা। গত ২৩ মে রাজাকে খুন করা হয়। দীর্ঘ দিন নবদম্পতি নিখোঁজ ছিলেন। পরে ২ জুন রাজার দেহ উদ্ধার করা হয় জলপ্রপাতের ধার থেকে। সোনম তার পরেও অনেক দিন নিখোঁজ ছিলেন। পরে তিনি উত্তরপ্রদেশের গাজ়িপুরে আত্মসমর্পণ করেন। রাজাকে খুনের অভিযোগে তাঁকে গ্রেফতার করে মেঘালয় পুলিশ। গ্রেফতার করা হয় সোনমের প্রেমিক রাজ-সহ আরও তিন জনকে। রাজাকে খুনে তাঁরা সাহায্য করেছিলেন বলে দাবি। তাঁদের এই কাজের জন্য টাকাও দেওয়া হয়েছিল। পুলিশ জানতে পেরেছে, বিয়ের আগে থেকেই রাজাকে খুনের পরিকল্পনা করে রেখেছিলেন সোনম এবং রাজ। তাঁদের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ।