প্রেমিকের সঙ্গে মিলে নিজের মেয়েকে খুনের অভিযোগ উত্তরপ্রদেশের মহিলার বিরুদ্ধে। —প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।
বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে স্বামীকে ফাঁসাতে চেয়েছিলেন। সেই জন্য নিজের মেয়েকেই খুনের অভিযোগ উঠল এক মহিলার বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে উত্তরপ্রদেশের লখনউয়ে। খুনের পরে প্রায় ৩৬ ঘণ্টা ধরে দেহটি ফেলে রেখেছিলেন ঘরে। দেহ পচতে শুরু করেছিল। পোকাও ধরে গিয়েছিল মেয়ের দেহে। দাবি করা হচ্ছে, পচন ধরতে থাকা দেহের সামনেই প্রেমিকের সঙ্গে উল্লাসে মাতেন মহিলা। অভিযুক্ত মহিলা এবং তাঁর প্রেমিককে ইতিমধ্যে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে খবর, প্রায় বছর আটেক আগে উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা শাহরুখ খানের সঙ্গে বিয়ে হয় রোশনি খানের। রোশনির বিভিন্ন পার্টিতে যাওয়ার অভ্যাস ছিল। সেই রকমই একটি পার্টিতে উদিত জয়সওয়াল নামে এক তরুণের সঙ্গে আলাপ হয় তাঁর। পরে তাঁদের মধ্যে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কও গড়ে ওঠে। সম্প্রতি শাহরুখের সঙ্গে এক বাড়িতে থাকাও বন্ধ করে দিয়েছিলেন রোশনি। মেয়েকে নিয়ে আলাদা একটি ফ্ল্যাটে থাকতেন।
শাহরুখকে জীবন থেকে সরিয়ে নতুন সংসার পাতার পরিকল্পনা করছিলেন রোশনি। অভিযোগ, সেই কারণেই নিজের ছ’বছরের মেয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন তিনি। রোশনি চেয়েছিলেন, মেয়েকে খুন করে সেই হত্যার দায় স্বামীর উপর চাপিয়ে দিতে। গত রবিবার শাহরুখ মেয়ের সঙ্গে দেখা করতে ওই ফ্ল্যাটে গিয়েছিলেন। সেইমতো আগে থেকেই তাঁকে ফাঁসানোর ব্যবস্থা করে রেখেছিলেন রোশনি।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, সোমবার ভোর তিনটে নাগাদ পুলিশকে ফোন করে রোশনি জানান, তাঁর স্বামী মেয়েকে খুন করেছে। ওই খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। মৃতের দেহ উদ্ধার করে। রোশনি পুলিশকে জানান, স্বামীর সঙ্গে তাঁর ঝগড়া চলছিল। হাতাহাতিও হয়। সেই সময়ে রাগের মাথায় মেয়ের গলা টিপে ধরেছিলেন স্বামী। শাহরুখের বিরুদ্ধে খুনের মামলাও রুজু করে পুলিশ। কিন্তু তদন্ত এগোতেই বেশ কিছু বিষয় সন্দেহজনক ঠেকে তদন্তকারীদের।
রোশনির মেয়ের দেহ যে অবস্থায় উদ্ধার হয়েছিল, তা দেখেই প্রথম সন্দেহ হয় পুলিশের। দেহে পচন ধরতে শুরু করেছিল। পোকাও ধরে গিয়েছিল দেহ। যা দেখে পুলিশের সন্দেহ হয় ওই নাবালিকাকে আগেই খুন করা হয়েছে। খোঁজখবর নিয়ে পুলিশ জানতে পারে রোশনির বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্কের কথা। সেইমতো রোশনি এবং তাঁর প্রেমিক উদিতকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে পুলিশ। তাঁদের বয়ানে আরও কিছু অসঙ্গতি উঠে আসে। পরে ময়নাতদন্তের রিপোর্টেও উঠে আসে, পুলিশকে খবর দেওয়ার আনুমানিক ৩৬ ঘণ্টা আগে খুন করা হয়েছিল রোশনির মেয়েকে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসতেই তদন্ত নতুন মোড় নেয়।
এত কিছুর পরেও জিজ্ঞাসাবাদের সময় পুলিশকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করতে থাকেন রোশনি। তবে জেরার মুখে ভেঙে পড়েন উদিত। তিনি স্বীকার করে নেন, দু’জনে মিলেই ওই নাবালিকাকে হত্যা করেছেন। তাঁরা দু’জনেই ওই একই ফ্ল্যাটে থাকতেন। পুলিশ সূত্রে খবর, রোশনির মেয়েকে হত্যার পরে তাঁরা ওই ফ্ল্যাটে পার্টিও করেছিলেন বলে জেরায় অভিযুক্ত স্বীকার করেছেন।