আত্মহত্যার আগে হাতের তালুতে অভিযোগ এবং অভিযুক্তদের সম্পর্কে লিখে রেখে যান চিকিৎসক। ছবি: সংগৃহীত।
মহারাষ্ট্রের আত্মঘাতী তরুণী চিকিৎসকের বিরুদ্ধে এ বার পাল্টা অভিযোগ উঠল। আর সেই অভিযোগ তুলেছে স্থানীয় থানার পুলিশ। চিকিৎসকের বিরুদ্ধে ‘দুর্ব্যবহার’ এবং কাজে অসহযোগিতার অভিযোগ দায়ের করে পুলিশ। এনডিটিভি-র প্রতিবেদনে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, ফলটন গ্রামীণ থানার ইনস্পেক্টর সুনীল মহাধিক তাঁর চিঠিতে দাবি করেছেন, ওই তরুণী চিকিৎসক পুলিশের সঙ্গে সহযোগিতা করতেন না। আধিকারিকদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করতেন প্রায়ই।
গত ২২ সেপ্টেম্বর ফলটন জেলার স্বাস্থ্যকর্তার কাছে ওই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ জমা পড়েছিল পুলিশের তরফে, এনডিটিভি-র প্রতিবেদন অনুযায়ী, সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে যে, ওই চিকিৎসক এক অপরাধীর মেডিক্যাল পরীক্ষা করতে অস্বীকার করেন। পুলিশের আশঙ্কা ছিল, এই পরীক্ষা না করালে অপরাধী আইনের হাত থেকে ছাড় পেয়ে যাবে। ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী, অভিযোগপত্রে গত ৩০ মে-র একটি ঘটনার কথা উল্লেখ করা হয়। অভিযোগপত্রে জানানো হয়েছে, ওই দিন রাতে দুই অপরাধীকে হাসপাতালে মেডিক্যাল পরীক্ষার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। কিন্তু চিকিৎসক তাঁদের মেডিক্যাল পরীক্ষা করতে অস্বীকার করেন। তার পর পুলিশের বিরুদ্ধে তাঁকে হেনস্থা করার অভিযোগ তোলেন। ফলটন থানার ইনস্পেক্টর তাঁর চিঠিতে উল্লেখ করেছেন, চিকিৎসককে বার বার বলা হয়, মেডিক্যাল পরীক্ষা করানো না গেলে দুই দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করা যাবে না, তাই মেডিক্যাল পরীক্ষা দ্রুত করানো প্রয়োজন। কিন্তু তা করানো হয়নি।
পুলিশের তরফে আরও অভিযোগ তোলা হয়েছে, ওই তরুণী চিকিৎসক বেশ কিছু অপরাধীকে শারীরিক ভাবে অসুস্থ বলে মেডিক্যাল রিপোর্টে উল্লেখ করে হাসপাতালে ভর্তি করানোর ব্যবস্থা করেন। শুধু তা-ই নয়, এই ধরনের কাজ করে অপরাধীদের গ্রেফতারে বাধা সৃষ্টি করেছিলেন বলে অভিযোগ। ওই অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, ৩০ মে যে অপরাধীকে ওই চিকিৎসক ‘আনফিট’ বলে মেডিক্যাল রিপোর্টে উল্লেখ করেছিলেন, তার পর দিনই তাকে সুস্থ অবস্থায় দেখতে পান পুলিশকর্মীরা। তাঁর বিরুদ্ধে জেলা স্বাস্থ্যকর্তার কাছে অভিযোগ জমা পড়ার পরই এক পুলিশ ইনস্পেক্টরের উপর চাপ সৃষ্টি করেছিলেন। পুলিশের অভিযোগপত্রে জানানো হয়েছিল, চিকিৎসকের বিরুদ্ধে দ্রুত পদক্ষেপ করা হোক। শুধু তা-ই নয়, অপরাধীদের মেডিক্যাল পরীক্ষার দায়িত্ব থেকে তাঁকে সরানো হোক। তার পরই জেলা স্বাস্থ্যকর্তার দফতর থেকে এই অভিযোগের তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল বলে উল্লেখ করা হয়েছে এনডিটিভি-র প্রতিবেদনে।
প্রসঙ্গত, মহারাষ্ট্রের সাতারায় এক তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ, শারীরিক এবং মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ ওঠে সাব-ইনস্পেক্টরের বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার সাতারার একটি হোটেল থেকে চিকিৎসকের দেহ উদ্ধার হয়। হাতের তালুতে অভিযুক্তদের নাম উল্লেখ করে গিয়েছেন। এসআই ছাড়াও তাঁর বাড়ির মালিকের পুত্রের বিরুদ্ধেও অভিযোগ তুলেছেন। তিনি গ্রেফতার হলেও এসআই পলাতক।