রাহুল গাঁধী তাঁকে ‘জো হুজুর’ করা লোকদের সরান। কংগ্রেসের হাল শোধরাতে আজ দলের অন্দরমহল থেকেই এই দাবি উঠল।
উত্তরপ্রদেশে ভরাডুবির পরে রাহুল গাঁধী সংগঠনে বড় মাপের রদবদলের কথা বলেছিলেন। আজ কংগ্রেস নেতা ও প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কিশোরচন্দ্র দেও দাবি তুলেছেন, রাহুলকে সবসময় যে এক ডজন নেতা ঘিরে থাকেন, আগে তাঁদের সরাতে হবে। রাহুলের নিজের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতেই তা জরুরি। কিশোরচন্দ্র ইউপিএ-জমানায় আদিবাসী ও পঞ্চায়েতি রাজ মন্ত্রী ছিলেন। একই সুরে প্রাক্তন আইনমন্ত্রী অশ্বিনী কুমারও দাবি তুলেছেন, বিশ্বস্ততার সঙ্গে তোষামোদ গুলিয়ে গেলে নেতা তৈরি করা যায় না। বুদ্ধিমত্তার অভাব হলে বড় দল গঠন করা যায় না। জাতীয় দল হিসেবেই কংগ্রেসের প্রাসঙ্গিকতা এখন প্রশ্নের মুখে।
কংগ্রেস নেতাদের দাবি, দলের মধ্যে এই ধরনের দাবি ওঠায় বস্তুত রাহুলেরই সুবিধা হচ্ছে। তিনি সহজে সাংগঠনিক রদবদলের কাজটি করতে পারবেন। উত্তরপ্রদেশ, ওড়িশা ও মুম্বইয়ের ভোটে হারের দায় নিয়ে পদত্যাগের কথা জানিয়ে ইতিমধ্যেই রাজ ব্ববর, বি কে হরিপ্রসাদ, সঞ্জয় নিরুপমরা সেই কাজটি এগিয়ে রেখেছেন। আজ কিশোরচন্দ্র যুক্তি দিয়েছেন, কংগ্রেস দলটা এক ডজন নেতার উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। যাঁদের কোনও রাজনৈতিক দায়বদ্ধতা নেই। পার্টির ক্ষতি করে এঁরা নিজেদের স্বার্থ চরিতার্থ করে চলেছেন। আবার গুরুত্বপূর্ণ পদেও বসে রয়েছেন। এঁদের এক এক বার এক এক রাজ্যের দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে। সব রাজ্যেই কংগ্রেস হারছে। কিশোরচন্দ্রের দাবি, রাহুল নিজেও সব জানেন। তিনি নিজেই দলীয় বৈঠকে এ কথা বলেছেন।
আরও পড়ুন: শিশু পাচার নিয়ে কংগ্রেসের খোঁচা রূপাকে
শুধু উত্তরপ্রদেশে হার নয়। গোয়ায় একক বৃহত্তম দল হয়েও সরকার গড়তে না পারার জন্যও কংগ্রেসের অন্দরে ক্ষোভ ছড়িয়েছে। সেখানেই নিশানায় রাহুলের বিশ্বস্ত বলে পরিচিত দিগ্বিজয় সিংহ। আজ গোয়ায় আস্থাভোটের সময় কংগ্রেস বিধায়ক বিশ্বজিৎ রাণে ছিলেন না। গোয়ার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী প্রতাপ সিংহ রাণের পুত্র বিশ্বজিৎ এরপর জানান, তিনি বিধায়ক পদ ও কংগ্রেস দল থেকে পদত্যাগ করছেন। কারণ কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব যাঁদের পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব দিয়ে রাজ্যে পাঠাচ্ছেন, তাঁরা রাজ্যের পরিস্থিতিই বুঝে উঠতে পারছেন না। রাহুল গাঁধীকে এ বিষয়ে চিঠি লিখেও তিনি জবাব পাননি বলেও মন্তব্য করেন বিশ্বজিৎ। তাঁর দাবি, ‘‘এমন চললে গোটা দেশেই আমার মতো নেতারা কংগ্রেস ছাড়তে শুরু করবেন।’’