নতুন বছরেই কমিয়ে ফেলুন সুগার, রইল ৫ উপায়। ছবি: ফ্রিপিক।
নতুন বছর পড়ার আগে থেকেই শুরু হোক প্রস্তুতি। বছরের শুরু থেকেই কমিয়ে ফেলুন সুগার। টাইপ ১ বা টাইপ ২, যে ধরনের ডায়াবিটিসই থাক না কেন, জীবনধারায় সামান্য কিছু বদল আনলেই তা নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। যেমন শুরুটা হতে পারে সকালের জলখাবার দিয়ে। ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য নির্দিষ্ট সময় অন্তর খাওয়াটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। কী খাবেন, তা-ও জরুরি। রোজের পাতে ঠিক কেমন খাবার রাখলে, ইনসুলিন হরমোনকে বাগে আনা যাবে, তা জেনে রাখা খুবই জরুরি। দৈনন্দিন জীবনে কিছু নিয়ন্ত্রণ এনে কী ভাবে ডায়াবেটিস প্রতিহত করা যায়, তা নিয়ে সচেতনতা বড়ই কম। হার্ভার্ড মেডিক্যাল স্কুলের গবেষকেরা জানিয়েছেন, মাত্র ৫টি বদল আনলেই ডায়াবিটিসকে পুরোপুরি কব্জায় রাখা সম্ভব।
সময় ধরে খাওয়া
ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং এ ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ বলে জানাচ্ছেন গবেষকেরা। ‘জামা নেটওয়ার্ক’ জার্নালে এই বিষয়ে গবেষণাপত্রও ছাপা হয়েছে। তবে ইন্টারমিটেন্ট মানেই খুব কষ্টসাধ্য অভ্যাস গড়তে হবে তা নয়। সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখতে পাকস্থলীকে বিশ্রাম দেওয়া খুবই প্রয়োজন বলেই মনে করছেন গবেষকেরা। সে জন্য রাতের খাওয়া সারতে হবে সন্ধ্যা ৭টার মধ্যে। পর দিনের প্রাতরাশ খেতে হবে সকাল ৯টার মধ্যে। মাঝের সময়টুকু পেটকে সম্পূর্ণ বিশ্রাম দিতে হবে। এতেই রক্তে বাড়তি শর্করা শোষিত হয়ে যাবে।
প্রতি মিলেই প্রোটিন
প্রতিটি মিলে অন্তত ২৫-৩০ গ্রাম প্রোটিন রাখতেই হবে। খাবার খাওয়ার পরে রক্তে শর্করার মাত্রা হঠাৎ করেই বেড়ে যায়। প্রোটিন জাতীয় খাবার খেলে এই বৃদ্ধি আচমকা হয় না। রক্তে শর্করার পরিমাণে ভারসাম্য বজায় থাকে। তবে প্রোটিন মানে রেড মিট নয়, মাছ, ডিম, চর্বি ছাড়া চিকেন খেতে হবে। নানা রকম ডাল, বিন, সয়াবিন, দুধ, ছানা, পনিরও খেতে হবে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে।
পেশির ব্যায়াম
সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখতে হলে ব্যায়াম খুবই জরুরি। তবে এর জন্য জিমে ভর্তি হওয়ার প্রয়োজন নেই। বাড়িতেই স্কোয়াট, লেগ রেজ়, স্পট জগিং, পুশ-আপের মতো ব্যায়াম করলে পেশির সক্রিয়তা বাড়বে, হরমোনের ভারসাম্যও বজায় থাকবে। খেয়াল রাখবেন, খাবার খাওয়ার পরেই রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়ে। তাই ব্যায়াম খালি পেটে নয়, কিছু খেয়ে তার পর করতে পারেন। সকালে প্রাতরাশ খাওয়ার কিছু ক্ষণ পরে বা দুপুরের খাবার খাওয়ার পরে বিকেলে ব্যায়াম করতে পারেন।
কম ঘুম বিপজ্জনক
সুগারের সঙ্গে ঘুমের সম্পর্ক খুবই ঘনিষ্ঠ। কম ঘুম বা অনিদ্রা সুগারের মাত্রা কয়েক গুণে বাড়িয়ে দিতে পারে। তাই রোজ ৭-৮ ঘণ্টা টানা ঘুম জরুরি। রোজ ৬ ঘণ্টার কম ঘুমোলেই ডায়াবিটিস অনিয়ন্ত্রিত হয়ে যাবে।
ওজন কমান
‘পোস্টগ্র্যাজুয়েট মেডিসিন’ নামক একটি জার্নালে লেখা হয়েছে, ওজন ৫ শতাংশ কমলে, রক্তে শর্করার মাত্রা ১০-১৫ শতাংশ কমে যাবে। তাই ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা খুব জরুরি। নিয়ম মেনে খাওয়া ও শরীরচর্চাতেই ওজন কমিয়ে ফেলা সম্ভব। তবে ওষুধ খেয়ে ওজন কমাতে গেলে হিতে বিপরীত হতে পারে।