রাজধানী বা শতাব্দী এক্সপ্রেসের মতো ট্রেনগুলির নামের সঙ্গে বেসরকারি সংস্থার নাম জুড়ে আয় বাড়ানোর পরিকল্পনা আগেই নিয়েছিল রেল মন্ত্রক। এ বার দার্জিলিং হিমালয়ান রেলওয়ে-সহ দেশের পাঁচটি টয় ট্রেনের রুটকে বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে জুড়ে দিয়ে আয় বাড়ানোর কথা ভাবছে তারা। রেলকর্তারা মনে করছেন, আজ বুধবার, কেন্দ্রীয় বাজেটে এই সরকারি-বেসরকারি যৌথ উদ্যোগ (পিপিপি) মডেলের বিষয়ে সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হতে পারে।
এখন পাঁচটি রুটে টয় ট্রেন চালায় ভারতীয় রেল। শিলিগুড়ি থেকে দার্জিলিং, কালকা থেকে শিমলা, নীলগিরি পাহাড়ে কুনুর থেকে উধাগামণ্ডলম, পঞ্জবের কাংড়া ভ্যালিতে পঠানকোট থেকে যোগিন্দরনগর এবং পশ্চিমঘাট পর্বতমালার নেরাল থেকে মাথেরান। রেল সূত্রের খবর, লোকসানে চলা এই রুটগুলি নিয়ে অনেক দিন ধরেই ভাবনা-চিন্তা চলছিল। তবে পিপিপি মডেলের কথা শুরু হতে অনেক সংস্থা ইতিমধ্যেই রেল মন্ত্রকে আবেদন করেছে। তাই দু’পক্ষের কথা মাথায় রেখে বেসরকারি সংস্থাগুলির সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তিও করা হতে পারে বলে রেল সূত্রের খবর।
বাঙালির নস্টালজিয়া মোড়া দার্জিলিঙের টয় ট্রেনের ন্যারোগেজ রেলপথ এবং মিটার গেজের সামান্য কিছু অংশ দিয়েই সম্ভবত এই নতুন সিদ্ধান্তের সূচনা হবে বলে জানিয়েছেন এক রেলকর্তা। সে ক্ষেত্রে
পশ্চিমবঙ্গের পর ধীরে ধীরে অন্য পাহাড়ি রেলপথগুলির ক্ষেত্রেও তা কার্যকর করা হবে।
কী রকম হবে এই পিপিপি মডেল?
রেলকর্তারা বলছেন, আপাতত ঠিক রয়েছে, ট্রেন চালানোর সব দায় দায়িত্ব থাকবে রেলের হাতে। পরিচালনা, পরিষেবা ও আতিথেয়তার দায়িত্ব পাবে বেসরকারি সংস্থাগুলি। ঠিক হয়েছে, বেসরকারি সংস্থা চাইলে তাদের ইচ্ছে মতো রুটগুলিতে আলাদা স্টেশনও তৈরি করতে পারবে। তবে টাকার অঙ্ক কী ভাবে ভাগাভাগি হবে, সেটা এখনও স্পষ্ট নয়।
এই পাঁচটি রুটের টয় ট্রেনকেই ‘হেরিটেজ’ স্বীকৃতি দিয়েছে ইউনেস্কো। রেলকর্তাদের বক্তব্য, পরিবেশ এবং সৌন্দর্যের নিরিখে এই সব’কটি রুটই পর্যটকদের কাছে যথেষ্ট জনপ্রিয়। বিদেশের পর্যটন মানচিত্রেও তাদের আকর্ষণ যথেষ্ট। ফলে রুটগুলির ট্রেনযাত্রাকে সুন্দর করা গেলে বিদেশি পর্যটকদের বেশি করে টানা যাবে। তাতে ঘরে আসবে বিদেশি মুদ্রাও।
তবে পর্যটকেরাও ছাড়াও ওই পাহাড়ি রুটগুলিতে সারা দিনে অনেক সাধারণ মানুষ যাওয়া-আসা করেন। বেসরকারি সংস্থার হাতে গেলে ট্রেনগুলির যাত্রী-টিকিটের দাম বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই সাধারণ যাত্রীদের কথা ভেবে পর্যটক ট্রেনের পাশাপাশি লোকাল ট্রেন চালানোর ব্যবস্থাও রাখা হবে বলে রেলকর্তারা জানিয়েছেন।