President Election 2022

President Election 2022: নিউটাউনের হোটেল থেকে বাসে করে বিধানসভার পথে বিজেপি বিধায়কেরা

অঙ্কের নিরিখে অনেকটাই এগিয়ে এনডিএ মনোনীত প্রার্থী দ্রৌপদী মুর্মু। বিরোধী ‌শিবিরের প্রার্থী যশবন্ত সিন্‌হার জন্য লড়াইটা ‘মতাদর্শের’।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ জুলাই ২০২২ ০৭:৪০
Share:

ফাইল চিত্র।

বিধানসভায় সোমবার সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের ভোটগ্রহণ চলবে। ভোট-গণনা হবে ২১ জুলাই। শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ ও বিধায়ক মিলে মোট ভোটার ২৫৪। জেলাওয়াড়ি কয়েকটি ভাগ করে বিধায়কদের ভোট-পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে কয়েক জন মন্ত্রীকে। লোকসভার সাংসদদের ক্ষেত্রে সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রাজ্যসভায় সুখেন্দু শেখর রায়কে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। বিরোধী দল বিজেপির হাতে রয়েছে ৭০ জন বিধায়ক এবং কার্যত ১৬ জন সাংসদ। তারা আবার এক ধাপ এগিয়ে রবিবার সন্ধ্যার মধ্যেই দলের সব বিধায়ককে নিউটাউনের হোটেলে পৌঁছে যেতে বলেছে। রাষ্ট্রপতি নির্বাচনকে ঘিরে হোটেলে শিবির করে থাকার এমন বন্দোবস্ত এ রাজ্যে বিরল। ইতিমধ্যেই নিউটাউনের হোটেল থেকে বিজেপি বিধায়কদের নিয়ে বিধানসভার উদ্দেশে রওনা হয়েছে বাস।

Advertisement

বিরোধী দলের সচেতক মনোজ টিগ্গা অবশ্য বলেছেন, ‘‘রাষ্ট্রপতি পদে দ্রৌপদী মুর্মুর জয় এবং বিজেপির সব ভোট তাঁর পক্ষে যাওয়া নিয়ে কোনও সংশয় নেই। বিধায়কদের ভোট দিতে যেতে যাতে কোনও অসুবিধা না হয়, তার জন্যই এই ব্যবস্থা করা হয়েছে।’’

অঙ্কের নিরিখে অনেকটাই এগিয়ে আছেন বিজেপি তথা এনডিএ-র মনোনীত প্রার্থী দ্রৌপদী মুর্মু। বিরোধী ‌শিবিরের প্রার্থী যশবন্ত সিন্‌হার জন্য লড়াইটা অনেক বেশি ‘মতাদর্শের’। রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের প্রাক্কালে দেশের সব সাংসদ ও বিধায়কের কাছে ‘অন্তরাত্মা’র কথা শুনে ভোটদেওয়ার আহ্বানও জানিয়েছেন তিনি। তবে এ বারের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে বাংলায় নজর অনেকটাই থাকবে ‘দলবদলু’দের দিকে।

Advertisement

‘সংশয়’ অবশ্য থেকে যাচ্ছে ‘দলবদলু’দের নিয়েই। রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ভোট যে হেতু গোপন ব্যালটে হয়, কে কাকে ভোট দিলেন— জানার উপায় নেই। হাতে-থাকা মোট ভোটের মূল্য এবং গণনার পরে প্রাপ্ত ভোট মিলিয়ে দেখে বোঝা যেতে পারে, কোন শিবিরের কত জন তাঁদের নির্দিষ্ট প্রার্থীকে ভোট দেননি। তৃণমূল তাদের সাংসদদের কলকাতায় ভোট দিতে বললেও এই ‘সংশয়ে’র জায়গাই বজায় রেখেছেন পূর্ব মেদিনীপুরের দুই সাংসদ শিশির অধিকারী ও দিব্যেন্দু অধিকারী। তাঁরা দিল্লিতেই ভোট দিতে যাবেন বলে জানিয়েছেন। যে কারণে রাজ্য তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেছেন, ‘‘যাঁদের রক্তে কৃতজ্ঞতা আছে, তাঁরা কলকাতায় এসেই ভোট দিন না! অসুবিধা কোথায়?’’ আবার বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিলেও ব্যারাকপুরের সাংসদ অর্জুন সিংহ খাতায়-কলমে এখনও গেরুয়া শিবিরের! তিনি কী করবেন, সে দিকেও নজর থাকবে।

বিজেপির প্রতীকে নির্বাচিত পাঁচ জন বিধায়ক পরবর্তী কালে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। বিধানসভার খাতায় তাঁরা এখনও বিজেপির সদস্য হলেও গেরুয়া শিবির তাঁদের হিসেবের বাইরেই রেখেছে। বিজেপির বরং পাল্টা দাবি, এনডিএ প্রার্থী দ্রৌপদী যে হেতু জনজাতি অংশের প্রতিনিধি, তাই তৃণমূলের অনেকেই তাঁকে ভোট দেবেন। যে দাবি উড়িয়ে তৃণমূলের নেতৃত্ব বলছেন, তাঁদের ভোট অক্ষতই থাকবে। বিজেপি নিজেদের ঘর সামলাক! কোনও প্রার্থীকেই তাঁর পক্ষে সমর্থন করা সম্ভব নয় বলে জানিয়ে ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্টের (আইএসএফ) বিধায়ক নওসাদউদ্দিন সিদ্দিকী ভোট-দানে বিরত থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

সাংসদ ও বিধায়ক-সংখ্যা এবং ইলেক্টোরাল কলেজের ভোট-মূল্যের প্রেক্ষিতে এনডিএ-র রয়েছে ৬ লক্ষ ৬৬ হাজার ২৮ ভোট এবং বিরোধীদের ৪ লক্ষ ১৩ হাজার ৭২৮। বিভিন্ন আঞ্চলিক দলই এর মধ্যে জনজাতি প্রার্থী দ্রৌপদীকে সমর্থন করার কথা ঘোষণা করেছে। ‘বঞ্চিত বহুজন আঘাডি’র সর্বভারতীয় সভাপতি প্রকেশ অম্বেডকরও বিরোধীদের প্রার্থীর উদ্দেশে আবেদন জানিয়েছেন, বেশির ভাগ দল যে ভাবে দ্রৌপদীর পক্ষে এসে গিয়েছে, তার প্রেক্ষিতে যশবন্তের এই লড়াই থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নেওয়া উচিত। যশবন্ত অবশ্য বলেছেন, ‘‘এ বার রাষ্ট্রপতি নির্বাচন দু’টো শক্তির মধ্যে নয়, দুই বিচারধারার মধ্যে লড়াই। আমাদের সংবিধানে উল্লিখিত আদর্শ এবং মূল্যকে রক্ষা করতে চায় একটি পক্ষই। সব সাংসদ ও বিধায়ককে সংবিধান এবং তাঁদের অন্তরাত্মার আহ্বান শুনে ভোট দেওয়ার আবেদন জানাচ্ছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন