President Rule in Manipur

বীরেনের পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী বেছে নিতে পারল না বিজেপি! মণিপুরে জারি হল রাষ্ট্রপতি শাসন

গত দেড় বছরেরও বেশি সময় ধরে তপ্ত রয়েছে মণিপুর। ২০২৩ সালের মে মাসে প্রথম মেইতেই এবং কুকি-জো সম্প্রদায়ের মধ্যে হিংসা ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে সে রাজ্যের পরিস্থিতি।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৯:৪২
Share:

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। —ফাইল ছবি।

প্রায় দু’বছর ধরে অশান্তি কবলিত মণিপুরে অবশেষে জারি করা হল রাষ্ট্রপতি শাসন। কিছু দিন আগেই মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন এন বীরেন সিংহ। তাঁর ইস্তফার পরে নতুন কোনও মুখ্যমন্ত্রীর নাম ঘোষণা করতে পারেনি বিজেপি। এই অচলাবস্থার মাঝে বৃহস্পতিবার মণিপুরে রাষ্ট্রপতির শাসন জারি করা হয়েছে।

Advertisement

গত ৯ ফেব্রুয়ারি মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রীর পদে ইস্তফা দেন বীরেন। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠকের পর ইম্ফলে ফিরেই মুখ্যমন্ত্রিত্ব ছাড়ার সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করেন তিনি। গত রবিবার ইম্ফলে মণিপুরের রাজ্যপাল অজয়কুমার ভল্লার সঙ্গে দেখা করে পদত্যাগপত্র জমা দেন বীরেন। তাঁর ইস্তফার পর মণিপুরে সরকার পরিচালনার জন্য নতুন কোনও মুখকে মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে বেছে নিতে পারেনি বিজেপি।

বৃহস্পতিবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক থেকে একটি সরকারি বিজ্ঞপ্তিতে মণিপুরে রাষ্ট্রপতি শাসন জারির কথা জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর বয়ানে লেখা রয়েছে, “আমি মণিপুরের রাজ্যপালের থেকে রিপোর্ট পেয়েছি। ওই রিপোর্ট দেখে এবং অন্য তথ্যগুলির ভিত্তিতে আমার মনে হয়েছে, সংবিধান অনুসারে সেখানে সরকার চালানো সম্ভব হচ্ছে না।”

Advertisement

মণিপুরে রাষ্ট্রপতি শাসন জারির পরে লোকসভায় তৃণমূলের মুখ্য সচেতক কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “রাষ্ট্রপতি শাসন জারি হল। কিন্তু অনেক দেরিতে হল। এখন প্রধানমন্ত্রীর উচিত শুধু নিজে যাওয়া নয়, সর্বদলীয় সাংসদদের নিয়ে গিয়ে সেখানকার পরিস্থিতি দেখা।”

বীরেনের ইস্তফার পর মণিপুরে নতুন মুখ্যমন্ত্রী বাছার জন্য যথেষ্ট চেষ্টা চালিয়েছে বিজেপি। উত্তর-পূর্বে বিজেপির দায়িত্বে থাকা সম্বিত পাত্র বেশ কয়েক দফা বৈঠক করেছেন সে রাজ্যের বিধায়কদের সঙ্গে। গত দু’দিনে রাজ্যপাল ভল্লার সঙ্গে দু’দফায় বৈঠকও সেরেছেন সম্বিত। গত মঙ্গলবার বিজেপির রাজ্য সভাপতি এ সারদা দেবীকে নিয়ে রাজ্যপালের সঙ্গে বৈঠক করেন সম্বিত। বুধবার আবার দেখা করতে যান রাজ্যপালের সঙ্গে। তবে নতুন মুখ্যমন্ত্রীর নাম চূড়ান্ত করতে পারেননি বিজেপি নেতৃত্ব।

গত দেড় বছরেরও বেশি সময় ধরে তপ্ত রয়েছে মণিপুর। ২০২৩ সালের মে মাসে প্রথম মেইতেই এবং কুকি-জো সম্প্রদায়ের মধ্যে হিংসা ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে সে রাজ্যের পরিস্থিতি। মাঝে কিছু দিন বিরতির পর গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে মেইতেই ও কুকি জনগোষ্ঠীর মধ্যে নতুন করে সংঘর্ষ শুরু হয়। জ্বালিয়ে দেওয়া হয় বহু বাড়িঘর। দফায় দফায় সংঘর্ষ চলে মণিপুরের বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে। মুখ্যমন্ত্রীর পাশাপাশি রাজ্যের বেশ কয়েক জন বিধায়কের বাড়িতেও হামলা চালায় উন্মত্ত জনতা।

পরিস্থিতি সামলাতে মণিপুরের বেশ কিছু জেলায় কার্ফু জারি করা হয়। বন্ধ করে দেওয়া হয় ইন্টারনেট পরিষেবাও। বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সূত্র মতে, মণিপুরে এ পর্যন্ত কয়েকশো মানুষের মৃত্যু হয়েছে। গৃহহীন আরও অনেকে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে মুখ্যমন্ত্রীর ভুমিকা নিয়ে অতীতে বার বারই প্রশ্ন উঠেছে। মণিপুরে উদ্ভূত অশান্তির কারণে গত বছরের শেষ দিনে মণিপুরবাসীর কাছে প্রকাশ্যে ক্ষমাও চেয়েছিলেন বীরেন। সঙ্গে আশ্বাস দিয়েছিলেন, ২০২৫ সালে রাজ্যে স্বাভাবিকতা ফিরবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement