নরেন্দ্র মোদী। ছবি: এএফপি।
রাজা নই, প্রজা!
বাজেট অধিবেশন শুরুর এক দিন আগে বিরোধীদের মন কাড়তে এমনই বার্তা দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। যে অধিবেশনে তাঁর সরকার পেশ করবে শেষ পূর্ণাঙ্গ বাজেট। সেটিকে হাতিয়ার করেই ভোটের দামামা বাজাবেন মোদী। এই মুহূর্তে নানা প্রশ্নে বিপুল চাপে সরকার। এই অবস্থায় অধিবেশনের ঠিক আগে বিরোধী মন জিততে আজ সর্বদল বৈঠকে সিপিআই সাংসদ ডি রাজার পরে বলতে উঠে মোদীর মন্তব্য, ‘‘রাজার বক্তব্য শেষ, এ বারে প্রজার শুরু।’’
কিন্তু এমন কথাতেও বিরোধী মন গলেনি। উল্টে সকলে এক সুরে তোপ দেগে বললেন, সংসদের অধিবেশন ক্রমশ ছোট হচ্ছে। বলতে দেওয়া হচ্ছে না বিরোধীদের। বেকারি, অর্থনীতির দুরবস্থা, কৃষকদের দুর্দশা, মহিলা নিরাপত্তা, আধার, নির্বাচন সংস্কার, যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো ভেঙে পড়া— সব বিষয়ে আলোচনা চাই। বিচার ব্যবস্থার অস্থিরতা নিয়েও আলোচনার দাবি তুললেন অনেকে।
চাপের মুখে মোদীর আশ্বাস, সব নিয়েই আলোচনায় প্রস্তুত সরকার। এই প্রসঙ্গে সংসদের স্থায়ী কমিটির প্রশংসাও করলেন। যা শুনে এক বিরোধী নেতার কটাক্ষ, ‘‘সরকারের সাড়ে তিন বছরের মাথায় প্রধানমন্ত্রীর নজরে এল স্থায়ী কমিটির কথা! অথচ গুরুত্বপূর্ণ বিলগুলিই পাঠানো হয় না কমিটিতে। গায়ের জোরে তিন তালাক বিলও কমিটিতে না পাঠানোর ব্যাপারে এখনও অনড় সরকার।’’ সংসদীয় মন্ত্রী অনন্ত কুমার এ দিনও বলেছেন, তিন তালাক বিল পাশ করতে সব রকম চেষ্টা করবে সরকার।
বাজেট অধিবেশনের ঠিক মুখে মোদীর অস্বস্তি কয়েক গুণ বাড়িয়ে দিয়েছেন প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম। ক’দিন আগেই তাঁর আমলে কর্মসংস্থানের বাড়বাড়ন্ত বোঝাতে গিয়ে মোদী বলেছিলেন, পকোড়া বেচে যিনি ২০০ টাকা রোজগার করছেন, সেটি কি রোজগার নয়? আজ চিদম্বরমের বিদ্রুপ, ‘‘রোজগার নিয়ে সরকার দিশাহীন। চাকরি আর স্বরোজগারের মধ্যে ফারাক বোঝে না। পকোড়া বেচা চাকরি হলে তো ভিক্ষা করাও চাকরি!’’
আরও পড়ুন: চিনের রক্তচাপ বাড়িয়ে আফ্রিকার শিঙের কাছেই সামরিক ঘাঁটি ভারতের
শেষ পূর্ণাঙ্গ বাজেটে রোজগারের দাওয়াই দিলেও তাতে যে চিঁড়ে ভিজবে না, তা টের পাচ্ছে সরকার। তাই অধিবেশনের শুরু থেকেই সাফল্য মেলে ধরতে মরিয়া কেন্দ্র। কাল রাষ্ট্রপতির বক্তৃতাতেও তুলে ধরা হবে মোদী সরকারের সাফল্যগাথা। কাল থেকে শুরু হওয়া অধিবেশনের প্রথম পর্ব চলবে ৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। পরের পর্ব ৫ মার্চ থেকে ৬ এপ্রিল।