মধ্যমণি: দলীয় সমর্থকদের মধ্যে প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরা। বুধবার কংগ্রেসের সদর দফতর থেকে বেরোনোর সময়ে। ছবি: পিটিআই।
বৈঠকের মধ্যমণি রাহুল গাঁধী। প্রিয়ঙ্কাকে বসানো হয়েছে আরও ছ’জন নেতার পরে। কিন্তু বৈঠক শেষে পাশের বাড়িতে মায়ের সঙ্গে দেখা করতে একসঙ্গেই বেরোলেন ভাই-বোন।
১০ জনপথের পাশেই ২৪ আকবর রোডে এআইসিসি দফতর। পূর্ব উত্তরপ্রদেশের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব নিয়ে আজই প্রথম দলের আনুষ্ঠানিক বৈঠকে যোগ দিলেন প্রিয়ঙ্কা। দলের সব সাধারণ সম্পাদক ও বিভিন্ন রাজ্যের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের ডেকেছিলেন রাহুল। সনিয়া ছিলেন সংসদে। সেই বৈঠকেই ভোটের রোডম্যাপ দলকে জানিয়ে দিলেন রাহুল। প্রিয়ঙ্কাকে নিয়ে উত্তরপ্রদেশের ঘুঁটি আগেই সাজানো ছিল। বৈঠকে প্রিয়ঙ্কা নিজেও বললেন, ‘‘যতক্ষণ না উত্তরপ্রদেশে কংগ্রেসের বিচারধারাকে প্রতিষ্ঠা করতে না পারছি, শান্তিতে বসব না।’’
এর আগে আজ সকালে প্রিয়ঙ্কা আর জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়াকে নিয়ে বৈঠক করেন রাহুল। স্থির হয়, আগামী সোমবার রাহুল-প্রিয়ঙ্কা-সিন্ধিয়া লখনউ যাবেন। বিমানবন্দর থেকে কংগ্রেস দফতর পর্যন্ত রোড-শো হবে। রাহুল সেদিনই দিল্লি ফিরবেন। কিন্তু উত্তরপ্রদেশে আরও তিন দিন থাকবেন প্রিয়ঙ্কা-সিন্ধিয়ারা। প্রাথমিক ভাবে রাজ্যের ৮০টি আসনের মধ্যে কোন ৪৪টি প্রিয়ঙ্কা, কোন ৩৬টি সিন্ধিয়া দেখবেন, তারও নকশা করা হয়েছে।
তবে কংগ্রেসের এক নেতা পরে বলেন, এ দিনের বৈঠকে রাহুল এও জানিয়ে দিয়েছেন এখনই কোনও ‘মিরাকল’ প্রত্যাশা করা ঠিক নয়। বিধানসভা নির্বাচন পর্যন্ত এই দুই সাধারণ সম্পাদককে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। প্রিয়ঙ্কাও বলেছেন, কাজটি খুব কঠিন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত টিকে থাকবেন তিনি। পরে দলের পক্ষ থেকে রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালা বলেন, ‘‘নতুন দায়িত্ব পাওয়ার জন্য প্রিয়ঙ্কা সকলকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। সঙ্গীদের সঙ্গে নিয়ে কংগ্রেসের মতো বটবৃক্ষকে আরও সবুজ করাই তাঁর লক্ষ্য। ভেদাভেদ ও জাতিগত বিভাজন দূর করে গোটা সমাজকে জুড়তে যা ‘বলিদান’ দেওয়ার দেবেন।’’ কিছু নেতা অন্য রাজ্যেও প্রিয়ঙ্কাকে প্রচারের জন্য বলেন, রাহুল তা নিয়ে কিছু বলেননি।
গোটা দেশের পরিপ্রেক্ষিতে রাহুল এ দিন ৫টি নির্দেশ দিয়েছেন। এক, চলতি মাসের মধ্যেই সব কেন্দ্রে প্রার্থী স্থির করে ফেলতে হবে। দুই, যেখানে জোটের সম্ভাবনা আছে, খতিয়ে দেখতে হবে। আজ যেমন হেমন্ত সোরেনের সঙ্গে বৈঠক করে ঝাড়খন্ডে জোট করে ফেলেছেন তিনি। তিন, নবীন ও প্রবীণ উভয়ে টিকিট পাবেন। কিন্তু দু’তিন বার কোনও কেন্দ্রে হেরে গেলে নতুন মুখকে সুযোগ দিতে হবে। চার, প্রচার শোভনীয় পথে হবে, বিজেপির মতো নয়। পাঁচ, ন্যূনতম আয়ের ঘোষণাকে সামনে রেখে গরিব, খেতমজুর, শ্রমিক, বঞ্চিতদের সঙ্গে নিতে হবে।