উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। —ফাইল চিত্র।
ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধন চলার সময় পশ্চিমবঙ্গ বা অন্য রাজ্য থেকে যাতে কোনও বাংলাদেশি বা রোহিঙ্গা উত্তরপ্রদেশে আশ্রয় না নিতে পারেন, তার জন্য পদক্ষেপ শুরু করল যোগী আদিত্যনাথের সরকার। অনুপ্রবেশকারী বাংলাদেশি এবং রোহিঙ্গাদের চিহ্নিতকরণের কাজ শুরু হয়েছে রাজ্য জুড়ে। অনুপ্রবেশকারীদের দ্রুত শনাক্তকরণের জন্য দিন কয়েক আগেই সমস্ত জেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। তার পরই এই তৎপরতা।
এক বিবৃতি জারি করে রাজ্য সরকার জানিয়েছে, জাতীয় নিরাপত্তার সঙ্গে কোনও রকম আপস করা হবে না। আর সে কারণেই অবৈধ ভাবে যাঁরা উত্তরপ্রদেশে প্রবেশ করছেন বা করার চেষ্টা করছেন, তাঁদের আইনের আওতায় নিয়ে এসে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে। ওই বিবৃতিতে আরও জানানো হয়েছে, রাজ্য জুড়ে অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিত করতে গিয়ে দেখা গিয়েছে যে, এটি একটি সংগঠিত চক্র। বিপুল সংখ্যায় সন্দেহজনক বাংলাদেশি এবং রোহিঙ্গা জেলায় জেলায় ছড়িয়ে রয়েছেন।
অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিত করতে জেলা প্রশাসন ছাড়াও রাজ্যের সন্ত্রাসদমন শাখাও তল্লাশি অভিযান চালাচ্ছে। প্রশাসন সূত্রে খবর, ইতিমধ্যেই অনেক রোহিঙ্গাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আর এখান থেকেই প্রশাসনের সন্দেহ, অনুপ্রবেশের শিকড় অনেক গভীরে ছড়িয়েছে। সূত্রের খবর, রাজ্যে জুড়ে যে অভিযান চালানো হচ্ছে, সেটি শুধু চিহ্নিতকরণের কাজই নয়, অনুপ্রবেশের শিকড় খুঁজে বার করে তা উপড়ে ফেলার একটা প্রচেষ্টাও বটে। দু’দিন আগেই মুখ্যমন্ত্রী আদিত্যনাথ নির্দেশ দিয়েছিলেন, রাজ্যে কোন কোন পুরসভা এলাকায় অনুপ্রবেশকারী বাংলাদেশি এবং রোহিঙ্গা রয়েছেন, তাঁদের একটি তালিকা তৈরি করতে হবে। শুধু তা-ই নয়, তাঁরা কোন কোন কাজে জড়িত তা চিহ্নিত করতে হবে। সেই সব অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিত করে তাঁদের নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা করতে হবে। সেই নির্দেশের পরেই জেলা প্রশাসনগুলি তৎপরতার সঙ্গে অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিতকরণের কাজ শুরু করেছে।
প্রসঙ্গত, দেশের ১২টি রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে বিশেষ নিবিড় সংশোধন বা এসআইআর-এর কাজ চলছে। এই রাজ্যগুলির মধ্যে উত্তরপ্রদেশও রয়েছে। কেন্দ্রের যুক্তি, ভুয়ো ভোটার ধরার লক্ষ্যেই এসআইআর করা হচ্ছে! এই আবহে অনুপ্রবেশকারীদের শনাক্তকরণে জোর দিয়েছে উত্তরপ্রদেশ সরকার। এসআইআর শুরু হওয়ার পর পরই গত নভেম্বরে মুখ্যমন্ত্রী আদিত্যনাথ নির্দেশ দেন অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিত করতে হবে। শুধু তা-ই নয়, অনুপ্রবেশকারীদের রাখার জন্য রাজ্যের প্রতিটি জেলায় একটি করে অস্থায়ী ডিটেনশন সেন্টার তৈরি করারও নির্দেশ দেন তিনি। রাজ্য সরকারের বিবৃতিতে বলা হয়, অন্য দেশ থেকে ভারতে অনুপ্রবেশ করা ব্যক্তিদের ওই অস্থায়ী শিবিরগুলিতেই রাখা হবে। যাচাই প্রক্রিয়া শেষ না-হওয়া পর্যন্ত ডিটেনশন সেন্টারই হবে অনুপ্রবেশকারীদের অস্থায়ী ঠিকানা।