লোকসভা ভোটের প্রচারে জোর গলায় বিদেশ থেকে কালো টাকা আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদী। সেই প্রতিশ্রুতিই এখন মোদী সরকারের কাঁটার মুকুট হয়ে দাঁড়িয়েছে।
‘কালো টাকা কবে ফিরবে’—বিরোধীদের এই কটাক্ষের মুখে এখন তাই মোদীকে ব্যাখ্যা দিতে হচ্ছে, তাঁর সরকার অল্প সময়ের মধ্যেই কালো টাকা ফেরাতে যথেষ্ট পদক্ষেপ করেছে। কিন্তু আজ মোদী স্বীকার করেন যে এ ক্ষেত্রে আইনি ও প্রক্রিয়াগত যথেষ্ট বাধা রয়েছে বলেও তিনি বুঝতে পারছেন।
বেআইনি সম্পত্তি উদ্ধারের বিষয়ে আজ সিবিআই-ইন্টারপোল আয়োজিত আন্তর্জাতিক সম্মেলনের উদ্বোধন করেন মোদী। এখানে আলোচ্য বিষয়ই ছিল কালো টাকা বা দুর্নীতির আয় থেকে আসা সম্পত্তির উদ্ধারে তদন্ত সংস্থাগুলির পারস্পরিক সহযোগিতা। তাঁর সরকারও ঠিক এই চেষ্টাই করছে— সম্মেলনে গিয়ে সে কথাই বোঝানোর চেষ্টা করেছেন মোদী। সিবিআই অধিকর্তা অনিল সিন্হা বলেন, ‘‘এই সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিই বিদেশ থেকে কালো টাকা ফিরিয়ে আনতে সরকারের দায়বদ্ধতার প্রমাণ।’’
তবে দায়বদ্ধতার কথা এলেও কালো টাকা ফেরানোর বিষয়টি কতটা কঠিন, তা সরকার বুঝতে পারছে। লোকসভা ভোটের আগে মোদী বলেছিলেন, বিদেশ থেকে কালো টাকা ফিরিয়ে আনলে সকলের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ১৫ লক্ষ করে টাকা দেওয়া হবে। কংগ্রেস এখন প্রশ্ন তুলছে, কোথায় গেল সেই ১৫ লক্ষ? যার জবাব দিতে পারছে না সরকার। অনেক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বা বিজেপির অনেক নেতাই এখন মনে করছেন, ভোটের প্রচারে এ ভাবে কালো টাকার বিষয়টি তুলে আনাই ভুল ছিল।
আজ নরেন্দ্র মোদী বলেছেন, ‘‘কালো টাকা বা বেআইনি সম্পত্তি যেখানে জমা হচ্ছে, তাতে সে দেশের অধিকার নেই। বরং ওই অর্থ-সম্পত্তি যে দেশ থেকে লুঠ হয়েছে, সে দেশের নাগরিকদের অধিকার থাকা উচিত।’’ তবে এ সঙ্গেই মোদীর মন্তব্য, ‘‘কালো টাকা উদ্ধারে যে আইনি ও প্রক্রিয়াগত বাধা রয়েছে, তা জানি।’’ মোদী বিরোধীদের অভিযোগের জবাব দেওয়ারই চেষ্টা করেছেন। যুক্তি দিয়েছেন, তাঁর সরকার অল্প সময়েই কালো টাকা ফেরাতে তাৎপর্যপূর্ণ পদক্ষেপ করেছে। কালো টাকা আটকাতে কঠোর আইন আনা হয়েছে। মোদীর দাবি, আর্থিক নয়ছয় দমন আইনে বদল করে চিট ফান্ড বা পঞ্জি স্কিমে গরিবদের হারানো টাকা উদ্ধারের ব্যবস্থা হয়েছে।