চার বছর আগে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের বাংলাদেশ সফরকালে সুন্দরবন সংরক্ষণের বিষয়ে সমঝোতাপত্র সই করে দিল্লি এবং ঢাকা। কিন্তু কাজের কাজ হয়নি। আসন্ন ঢাকা সফরে প্রকল্পটিকে হিমঘর থেকে বের করে বাস্তবায়িত করতে চলেছেন নরেন্দ্র মোদী।
সরকারি সূত্রের দাবি, এর ফলে সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ এবং নজরদারির ক্ষেত্রে তৎপরতা যেমন বাড়বে, পাশাপাশি ফি বছর বন্যা এবং সাইক্লোন থেকে এলাকাটিকে বাঁচানোর জন্যও নতুন করে যৌথ পদক্ষেপ করা সম্ভব হবে। বিদেশসচিব এস জয়শঙ্কর আজ জানিয়েছেন, ‘‘যৌথ উদ্যোগে সুন্দরবনের বাস্তুতন্ত্র সংরক্ষণের বিষয়টি নিয়ে আমাদের মধ্যে আলোচনা চলছে।’’ পাশাপাশি সরকারের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী সুরেশ প্রভুর কথায়, ‘‘আবহাওয়া পরিবর্তন ও বন্যা— এ সব আমাদের দু’দেশেরই সাধারণ শত্রু। সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য বাঁচিয়ে রাখার স্বার্থে এই ক্ষেত্রে খুব শীঘ্রই আমরা উদ্যোগী হব।’’ প্রধানমন্ত্রীর সফরে গুরুত্ব পেতে চলেছে আন্তঃসীমান্ত সন্ত্রাসের বিষয়টিও। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কিরেন রিজিজু আজ জানিয়েছেন, ‘‘ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে এমন কিছু শক্তি রয়েছে, যারা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে নষ্ট করতে চায়। আমরা কিছুতেই সেটা হতে দেব না।’’
কূটনীতিকদের কথায়, সংসদের দুই কক্ষে ভারত-বাংলাদেশ স্থলসীমান্ত বিলটি পাশ হওয়ার ফলে যে ইতিবাচক বাতাবরণ তৈরি হয়েছে, তাকে কাজে লাগিয়ে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়াই এ বার লক্ষ্য মোদীর। সে ক্ষেত্রে সুন্দরবনের পাশাপাশি বিভিন্ন ক্ষেত্রে দু’দেশের মধ্যে যোগাযোগ বাড়ানোর বিষয়টি মোদীর সফরে অগ্রাধিকার পেতে চলেছে। জয়শঙ্করের কথায়, ‘‘প্রধানমন্ত্রীর প্রতিবেশী নীতির কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে বাংলাদেশ। আমরা চাইছি বাণিজ্য, অর্থনীতি, নিরাপত্তা, সীমান্ত— সব ক্ষেত্রে যোগাযোগ এবং সহযোগিতা বাড়ুক।’’ রেল, সড়ক, জলপথের মাধ্যমে বাণিজ্য বাড়ানোর সম্ভাবনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন বিদেশসচিব। এই সব ক্ষেত্রে বেশ কিছু চুক্তি প্রধানমন্ত্রীর সফরে হতে চলেছে বলেও জানা গিয়েছে। পাশাপাশি, বাড়তি ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ বাংলাদেশকে রফতানি, মেঘালয় এবং ত্রিপুরায় আরও ৭টি সীমান্ত হাট গড়া, সীমান্তে বাণিজ্য সুগম করার জন্য আরও ১০টি ল্যান্ড কাস্টমস স্টেশন তৈরির কথাও ঘোষণা হতে পারে।