বিগড়ে গেল বন্ধু!
ঝাড়খণ্ডের আলু-সঙ্কটের মোকাবিলায় খোদ তাঁর দলনেত্রীর বিরুদ্ধে অবরোধ-আন্দোলনের ডাক দিলেন ঝাড়খণ্ডের তৃণমূল সভাপতি তথা বিধায়ক বন্ধু তিরকে। পশ্চিমবঙ্গের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকার ঝাড়খণ্ডে আলু পাঠানো বন্ধ করায় কয়লা ও সব্জি পাঠানো বন্ধ করার দাবি তুললেন বন্ধু। তাঁর বক্তব্য, “দিদি নিজের রাজ্যের হিতের জন্য কড়া সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আমাদের রাজ্যের সরকারও রাজ্যের প্রয়োজনে কড়া সিদ্ধান্ত নিক। এ রাজ্য থেকে কয়লা পাঠানো বন্ধ করুক। বন্ধ করা হোক পশ্চিমবঙ্গে সব্জি পাঠানোও।”
পশ্চিমবঙ্গ থেকে আলু আসা বন্ধ হওয়ায় গত কয়েকদিন ধরেই রাজ্যে আলুর সঙ্কট তীব্র হয়েছে। কিলো প্রতি চব্বিশ-পঁচিশ টাকায় বিক্রি হচ্ছে আলু। তার জেরে এ রাজ্যে অস্বস্তিতে পড়তে হচ্ছে তৃণমূলকে। ঝাড়খণ্ড আর পশ্চিমবঙ্গের সীমায় আলুর ট্রাক আটকে পড়ে রয়েছে। ঘটনার প্রতিকার চেয়ে দ্রুত দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলতে চান বন্ধু। একই সঙ্গে রাজ্যের প্রয়োজনে ঝাড়খণ্ড সরকারকেও কঠোর হওয়ার ডাক দিয়েছেন বন্ধু।
একদা নির্দল, মান্ডারের বিধায়ক বন্ধু তিরকে আর বিষুণপুরের বিধায়ক চামারা লিণ্ডাকে দলে টেনে রাজ্য বিধানসভায় পা রেখেছে তৃণমূল। লোকসভা নির্বাচনে ভরাডুবির পর এ রাজ্যে বন্ধু তিরকেকে সভাপতি করে বিধানসভা নির্বাচনের ঘুঁটি সাজানোর পরিকল্পনা নিয়েছে তৃণমূলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। নভেম্বরে এ রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন হওয়ার কথা। সেই মতো বন্ধু কাজও শুরু করে দিয়েছেন। কিন্তু তৃণমূল পরিচালিত পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সিদ্ধান্তের জেরেই এ রাজ্যে আলুর সঙ্কট শুরু হয়েছে। ফলে প্রশ্নের মুখোমুখি তৃণমূলের ঝাড়খণ্ড সভাপতি। বন্ধুর এই পরামর্শ মেনে হেমন্ত সোরেন সরকার যদি সত্যিই পশ্চিমবঙ্গে কয়লা ও সব্জি পাঠানোর ক্ষেত্রে অবরোধের পথ নেয় তবে তৃণমূলই যে চাপে পড়বে তাও জানেন মাণ্ডারের বিধায়ক। যদিও নিজের বক্তব্যের সমর্থনে বন্ধুর বক্তব্য, “রাজনীতির চশমা পড়ে সব বিষয় দেখা ঠিক নয়। আমার রাজ্যের মানুষের হিতের কথাটাও আমাদেরই দেখতে হবে।”
এ দিকে, আলু আসা বন্ধ হওয়ায় গত কাল বহরাগোড়ার জগন্নাথপুরে পশ্চিমবঙ্গগামী ট্রাক আটকে দেন এলাকার মানুষ। পরে প্রশাসনের মধ্যস্থতায় সেই সব ট্রাক ছাড়া হয়। পরিস্থিতি না পাল্টালে তাঁরা ফের রাস্তায় নেমে পশ্চিমবঙ্গমুখী সব ট্রাক আটকাবেন বলে হুমকি দিয়েছেন দুই রাজ্যের সীমাবর্তী এলাকার মানুষ।