চোর সন্দেহে বেধড়ক মারধর করার পর ব্লেড দিয়ে চোখ, হাত-পা, কান চিরে দিয়েছিল কয়েক জন। তাতে ছড়িয়ে দেওয়া হয় নুন, লঙ্কার গুড়ো। তাতে চোখ নষ্ট হল নবম শ্রেণির এক স্কুলছাত্রের। উদালগুড়ির ঘটনা।
পুলিশ জানায়, মঙ্গলবার সকালে প্রাতর্ভ্রমণে বেরিয়েছিল ছেলেটি। আচমকা বৃষ্টি শুরু হয়। জল থেকে বাঁচতে একটি বন্ধ দোকানের সামনে দাঁড়িয়েছিল সে। ওই দোকান থেকে কয়েক দিন ধরে জিনিসপত্র চুরি হচ্ছিল। অভিযোগ, বড়ো ওই ছাত্রকে চোর ভেবে ঘিরে ধরে দোকানমালিক রতন দাস ও তাঁর বন্ধু অঞ্জন দাস, বাবুল দাস, তপন দাস, মুকুট দাস ও নারায়ণ ওই বেধড়ক মারধর করে। তার হাত, পা, চোখ ও কান ব্লেডে চিরে নুন, লঙ্কার গুঁড়ো মাখিয়ে দেওয়া হয়। ঘণ্টাতিনেক অত্যাচারের পর ছেলেটিকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ছেলেটির দৃষ্টিশক্তি নষ্ট হয়েছে। অবস্থা আশঙ্কাজনক। ওই ঘটনা নিয়ে আন্দোলনে নেমেছে অল বড়ো ছাত্র সংগঠন আবসু। এলাকায় চলছে বন্ধ। পুলিশ এক জনকে গ্রেফতার করেছে। আবসুর দাবি, ঘটনাস্থল থেকে হরিশিঙা থানার দুরত্ব ৫০ মিটার। কিন্তু পুলিশ ছেলেটিকে বাঁচানোর চেষ্টা করেনি। এফআইআর দাখিলের পর মূল অভিযুক্তদেরও ধরা হয়নি। অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না দিলে অনির্দিষ্টকালের অর্থনৈতিক অবরোধের ডাক দিয়েছে স্থানীয় সংগঠনগুলি।
অন্য দিকে, একই জেলার ভেরগাঁও মহকুমার খৈরাবাড়িতে বিহারের দ্বারভাঙা থেকে আসা দুই ব্যক্তিকে ছেলেধরা সন্দেহে স্থানীয় বাসিন্দারা বেধড়ক মারধর করলে ঘটনাস্থলেই ধর্মেন্দ লালদেব নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়। জিতেন্দ্র লালদেব নামে তাঁর সঙ্গী আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি। পুলিশ জানায়, এক সপ্তাহ আগে বিহার থেকে উদালগুড়ি এসে তাঁরা তাবিচ-মাদুলি-রুদ্রাক্ষ বিক্রির ব্যবসা শুরু করেছিল। পাশাপাশি বাক্সা জেলার গোরেশ্বরে কের্পাভিটা চক বাজারেও ছেলেধরা সন্দেহে স্থানীয় মানুষ এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে মারে। পুলিশ জানায়, গত কাল বাজারের এক মহিলা ব্যবসায়ী ছেলেকে স্কুলে দিতে যাওয়ার সময় হাতে দড়ি নিয়ে ওই ব্যক্তি তাঁদের কাছাকাছি আসে। মহিলাকে একটি ঘরে ঢুকতে বলে সে। মহিলা চিৎকার করায় আশপাশের লোক তাকে ধরে ফেলে মারধর করে। পুলিশ হাসপাতালে নিয়ে গেলে তার মৃত্যু হয়। কামরূপ জেলার রঙিয়াতেও ছেলেধরা সন্দেহে হসংগ্রামের বাসিন্দারা মানসিক বিকারগ্রস্ত দুই যুবককে বেধড়ক মারধর করেছে।