মঙ্গল হেমব্রম
ভূস্বর্গে তখন বিকেল। ঘড়িতে তিনটে কুড়ি হবে। পাহাড়ি রাস্তার ঢাল বরাবার যাচ্ছিলাম। হঠাৎ কানফাটা শব্দে কেঁপে উঠল চারপাশ। আমাদের বাসটাও দুলে উঠল।
পুলওয়ামায় জওয়ানদের যে বাসে বিস্ফোরণ হয়েছে, সেই কনভয়েই ছিলাম। বিস্ফোরণে তছনছ হয়ে যাওয়া বাসের ঠিক তিনটি গাড়ির পিছনে ছিল আমাদের ১২৫ নম্বর ব্যাটেলিয়নের বাস। শব্দ শুনেই বুঝেছিলাম বড়সড় কিছু একটা হয়েছে। খানিক পরে জানলাম, জঙ্গি হামলার মুখে পড়েছে আমাদেরই কনভয়ের ওই বাসটি।
১৫ বছর কাজ করছি সেনাবাহিনীতে। এখন কনস্টেবল। ২০০৬ থেকে ২০১২ এই কাশ্মীরেই কাজ করেছি, বহু হামলার সাক্ষী থেকেছি। বিস্ফোরণ আর টানা গুলির শব্দ যখন কানে আসছিল, বুঝতে পারছিলাম কিছুটা দূরেই মৃত্যুর হাতছানি। তৈরি হচ্ছিলাম প্রতিরোধের জন্য। তারই মধ্যে খবর এল, ৪০ জন জওয়ান মারা গিয়েছেন।
সাম্প্রতিক জঙ্গি হামলা সম্পর্কে এগুলি জানেন?
পশ্চিম মেদিনীপুরের চন্দ্রকোনা পুরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বোনায় বাড়ি আমার। বাড়িতে দশ দিন ছুটি কাটিয়ে ক’দিন আগেই ফিরেছি। বৃহস্পতিবার কাশ্মীরের জাকুরায় যাচ্ছিলাম। ঘটনার পরই আমাদের বাস ঘুরিয়ে নেওয়া হয়। তখনও বুলেটের শব্দ কানে আসছিল। রাতে বাস এসে থেমেছে অবন্তীপোরায় সিআরপি-র ১১৫ নম্বর ব্যাটেলিয়নের সদর কার্যালয়ে। শুক্রবারও সেখানেই রয়েছি। জঙ্গি হামলার পরপরই এক ফাঁকে স্ত্রী শঙ্করীকে ফোন করে জানিয়ে দিয়েছিলাম, ‘ভয় পেয়ো না। আমি ঠিক আছি।’ তবে, বুঝতে পারছি তিনটে ছোট মেয়েকে নিয়ে ও চিন্তায় আছে।