পাম্পোর পর্যন্ত বৃত্তে শুরু জঙ্গি গাজ়ির খোঁজ

বৃহস্পতিবার পুলওয়ামায় যে হানায় নিহত হয়েছেন ৪৯ জন জওয়ান।

Advertisement

অনমিত্র সেনগুপ্ত ও সাবির ইবন ইউসুফ 

নয়াদিল্লি ও শ্রীনগর শেষ আপডেট: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৩:২২
Share:

গত দু’দিনের তল্লাশিতে ১১ জনকে আটক করা হলেও গোয়েন্দাদের মূল নিশানা হল গাজি। ছবি: এপি।

পুলওয়ামা থেকে পাম্পোর। সাকুল্যে দূরত্ব ২০ কিলোমিটার। গোয়েন্দাদের সব আগ্রহ এখন ওই কুড়ি কিলোমিটারের বৃত্তেই সীমাবদ্ধ। গোয়েন্দা সূত্রের মতে, ওই কুড়ি কিলোমিটারের বৃত্তের মধ্যেই কোথাও বসে তৈরি হয়েছিল কাশ্মীরে অন্যতম বড় হামলার ব্লু-প্রিন্ট। বৃহস্পতিবার পুলওয়ামায় যে হানায় নিহত হয়েছেন ৪৯ জন জওয়ান।

Advertisement

গোয়েন্দা সূত্রের দাবি, আত্মঘাতী জঙ্গি আদিল আহমেদ দারকে আশ্রয় জোগাড় করে দেওয়া থেকে গাড়িতে বিস্ফোরক ভরা, শেষ পর্যন্ত গাড়ি নিয়ে হামলার জন্য বার হওয়া-সবই হয়েছে ওই বৃত্তের ভিতর থে কেই। আপাতত তাই চতুর্দিক থেকে তল্লাশি চালিয়ে ধীরে ধীরে ওই বৃত্তকে ছোট করে আনতে চাইছেন গোয়েন্দারা। তল্লাশির জন্য গোটা দক্ষিণ কাশ্মীরে বাড়ানো হয়েছে জওয়ানের সংখ্যা।

গোয়েন্দাদের মতে, রশিদ গাজ়ি ও কামরান নামে দুই জঙ্গি এই ছকের মূল চক্রী। দু’জন স্থানীয় বাসিন্দার পাশাপাশি তদন্তে উঠে এসেছে এক পাকিস্তানি নাগরিকের নামও। ওই পাকিস্তানিও হামলার পরিকল্পনা রূপায়ণে সক্রিয় ভূমিকা নিয়েছিল বলেই মনে করা হচ্ছে। প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, ঘটনায় ৫০-৬০ কিলোগ্রাম আরডিএক্স বিস্ফোরক ব্যবহার করা হয়েছিল। গোয়েন্দাদের সন্দেহ, সীমান্তের ওপার থেকে দক্ষিণ কাশ্মীরে ওই বিস্ফোরক পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্বে ছিল সে। ইতিমধ্যেই গত দু’দিনের তল্লাশিতে ১১ জনকে আটক করা হলেও গোয়েন্দাদের মূল নিশানা হল গাজি।

Advertisement

আরও পড়ুন: কতটা ‘স্বাধীনতা’, ধোঁয়াশায় বাহিনী

সূত্রের দাবি, আদিলের হ্যান্ডলার ছিল গাজি। আফগানিস্তানে লড়াইয়ে অংশ নেওয়া গাজ়িই আদিলকে গাড়িবোমা নিয়ে বিস্ফোরণ ঘটানোর প্রশিক্ষণ দিয়েছিল। গোটা ঘটনায় সহযোগীর ভূমিকায় ছিল কামরান। ওই দু’জনকে গ্রেফতার করতে ইতিমধ্যেই ওই পুলওয়ামা-পাম্পোর এলাকার গ্রামগুলিতে তল্লাশি শুরু হয়েছে। গোয়েন্দাদের দাবি, হামলার দু’দিন আগে ওই এলাকা থেকে বেশ কিছু ফোন যায় পাকিস্তানে। সেগুলি কোথায় এবং কাকে কী উদ্দেশ্যে করা হয়েছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

আরও পড়ুন: বদলার ডাক দিয়ে ভোটপ্রচারে মোদী

এ ছাড়া ওই এলাকা থেকে ইন্টারনেট কল, হোয়াটসঅ্যাপ, টেলিগ্রাম মেসেজ পরিষেবা ব্যবহার করে কী ধরনের তথ্য আদান-প্রদান করা হয়েছে তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। নজরে রয়েছে জঙ্গি সংগঠন জইশ-ই-মহম্মদের টেলিগ্রাম চ্যানেল আনসার-ই-জইশ। সেটির মাধ্যমে সম্প্রতি কী ধরনের তথ্য ও ভিডিয়োর আদানপ্রদান করা হয়েছে তা বিশ্লেষণ করছে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা।

এ দিকে আজ দিনভর পুলওয়ামার বিস্ফোরণস্থলে তদন্ত চালান জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ)-র গোয়েন্দারা। নমুনা সংগ্রহ, বিস্ফোরণের ধাক্কায় কনভয়ের গাড়ি কী ভাবে কতটা ক্ষতি হয়েছে তা পরীক্ষা করে দেখে ওই দলটি। বিস্ফোরকের অভিঘাত থেকে গোয়েন্দারা নিশ্চিত, সে দিন ক্ষয়ক্ষতি যাতে ব্যাপক আকার নেয় সে জন্য আরডিএক্স ব্যবহার করা হয়েছিল। ওই এলাকায় তিন বছরে অন্তত দশ বার কনভয়ে হামলা চালিয়েছে জঙ্গিরা। সেগুলির মধ্যে কোনও যোগসূত্র রয়েছে কি না তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন