Advertisement
E-Paper

কতটা ‘স্বাধীনতা’, ধোঁয়াশায় বাহিনী

এ বার কোন পথে এগোনো হবে তা নিয়ে সংশয় রয়েছে সরকারের অন্দরেই। পূর্ণ স্বাধীনতা বলতে কী বোঝানো হয়েছে তা নিয়েও স‌ংশয় রয়েছে সরকারের অন্দরে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৩:৩২
—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

পুলওয়ামার হামলার পরে পদক্ষেপ করতে সেনাকে পূর্ণ স্বাধীনতা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কিন্তু এ বার কোন পথে এগোনো হবে তা নিয়ে সংশয় রয়েছে সরকারের অন্দরেই। পূর্ণ স্বাধীনতা বলতে কী বোঝানো হয়েছে তা নিয়েও স‌ংশয় রয়েছে সরকারের অন্দরে।

প্রশ্ন এও উঠেছে যে, সেনাবাহিনীর হাতে প্রত্যাঘাতের দায়িত্ব তুলে দিয়ে আসলে দায়িত্ব ঝেড়ে ফেলার পথে হাঁটল না তো বিজেপি সরকার? কারণ লোকসভা ভোটের আগে পুলওয়ামার বদলা নেওয়ার প্রশ্নে ক্রমশ চাপ বাড়ছে বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বের উপরে। কিন্তু হাতে বিকল্প কম। কারণ, পুলওয়ামা হামলার আগেই সীমান্তে এক প্রস্ত সেনা মোতায়েন করে ফেলেছে ইসলামাবাদ। ফলে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক করলে ভারতীয় সেনার বড় ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। দ্বিতীয় পন্থা হল, নিয়ন্ত্রিত বিমান হামলা। কিন্তু তাতেও পাকিস্তানের দিক থেকে প্রত্যাঘাতের আশঙ্কা রয়েছে। তৃতীয় বিকল্প হল গোলন্দাজ বাহিনীর হামলা। সে ক্ষেত্রেও এপারে ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা থেকে যায়। তাই লোকসভা ভোটের আগে ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কায় শেষ পর্যন্ত সরকার বড় ধাঁচের অভিযান থেকে পিছিয়ে আসতে পারে বলেও আশঙ্কা রয়েছে। এ দিকে প্রত্যাঘাতের দাবি প্রায় সর্বস্তরে। করলে ভোটের বাক্সে ফায়দা যে হবে তা ভালই জানে শাসক শিবির। তাই কোন পথে আক্রমণ শানালে ভারতেরই লাভ হবে তা ঠিক করতে এখন রণকৌশল তৈরিতে ব্যস্ত নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহেরা। বিকল্প হিসেবে পাক-অধিকৃত কাশ্মীরের কিছুটা এলাকা নিজেদের দখলে নেওয়ার প্রস্তাবও নিয়েও ভাবনাচিন্তা রয়েছে সরকারের অন্দরমহলে। আজ এক প্রশ্নের জবাবে বায়ুসেনা প্রধান বি এস ধানোয়া বলেন, ‘‘রাজনৈতিক নেতৃত্ব যে কাজ দেবেন তা করতে আমরা সব সময়েই তৈরি।’’ সরকারের একাংশের দাবি, লক্ষ্য স্থির করার দায়িত্ব যে রাজনৈতিক নেতৃত্বেরই তা আকারে-ইঙ্গিতে বুঝিয়েছেন ধানোয়া।

আজ দিল্লিতে কাশ্মীরের পরিস্থিতি নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহের সঙ্গে বৈঠক করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব রাজীব গৌবা, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল, র’ প্রধান অনিল ধাসমানা, আই বি-র অতিরিক্ত অধিকর্তা অরবিন্দ কুমার। ওই বৈঠকের পরে রাজনাথের সঙ্গে দেখা করেন জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ)-র প্রধান ওয়াই সি মোদী। কাশ্মীরে তদন্ত চালিয়ে এনআইএ কী প্রমাণ পেয়েছেন তা রাজনাথকে জানান এনআইএ কর্তা।

আরও পড়ুন: জম্মুতে নিশানায় কাশ্মীরিরা, জনতার হামলায় আহত ৩৭

পুলওয়ামার ঘটনার পরে কাশ্মীরে জঙ্গি-বিরোধী অভিযানের উদ্দেশ্যে প্রায় দেড়শো জনের একটি তালিকা তৈরি করেছে বাহিনী। যে তালিকায় রয়েছে জঙ্গি, জঙ্গিদের মদতদাতা, হ্যান্ডলার বা জঙ্গিদের সহযোগীরা। সূত্রের দাবি, বাহিনী চায় অবিলম্বে ওই তালিকা মেনে সন্দেহভাজনদের বিরুদ্ধে অভিযানে নামতে। তা না হলে ওই ব্যক্তিদের অন্তত অনির্দিষ্টকাল জেলে বন্ধ রাখার বিকল্প প্রস্তাব রয়েছে। কিন্তু বিরুদ্ধ মত হল, নরেন্দ্র মোদী সরকারের আমলে শুরু থেকেই কঠোর হাতে জঙ্গি দমনের নীতি নিয়েছিল নয়াদিল্লি। ফলে পুলওয়ামার পরে ফের নতুন করে দমননীতির রাস্তা নিলে কোনও লাভ হবে কিনা তা নিয়ে মতভেদ রয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকে।

আরও পড়ুন: সিআরপিএফ কনভয়ে হামলার কড়া প্রত্যুত্তরের প্রস্তাবে আপত্তি উঠল

পূর্ণ স্বাধীনতা বলতে ঠিক কী তা নিয়েও সংশয় রয়েছে আমলাদের মধ্যে। আধাসেনার এক কর্তার কথায়, ‘‘এটি অত্যন্ত সংবেদনশীল বিষয়। এ নিয়ে লিখিত নির্দেশ না পাওয়া পর্যন্ত পদক্ষেপ করা কতটা উচিত তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যায়।’’

Pulwama Attack পুলওয়ামা পুলওয়ামা হামলা Terrorism Terror Attack
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy