Pulwama Terror Attack

নজরদারি এড়াতে সিমহীন মোবাইল দিয়ে যোগাযোগ রাখছিল পুলওয়ামার চক্রীরা!

২০১৫ সালে সন্দেহভাজন পাক জঙ্গি সাজ্জাদ হোসেনকে গ্রেফতার করার পর সেনা প্রথম জানতে পারে জঙ্গিরা ওয়াই এসএমএস প্রযুক্তি ব্যবহার করছে। ২০১২ সাল থেকেই ডার্ক ওয়েবে ওই প্রযুক্তি পাওয়া যায়। তবে জইশ জঙ্গিরা ওই প্রযুক্তির উপর আরও এক ধাপ এনক্রিপশন যুক্ত করে সেটি আরও উন্নত করে নিয়েছে বলে দাবি সেনা গোয়েন্দাদের।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ১৪:২৬
Share:

পুলওয়ামায় জঙ্গি হামলার পর। ফাইল চিত্র পিটিআই।

পুলওয়ামায় আধাসেনার কনভয়ে হামলার আগে শীর্ষ জইশ জঙ্গি নেতা এবং পাকিস্তানি ‘হ্যান্ডলার’-রা আদিল এবং তার সঙ্গীদের যোগাযোগ রেখেছিল ‘ওয়াই এসএমএস’ প্রযুক্তিতে। গোয়েন্দাদের দাবি, ওই প্রযুক্তি ব্যবহার হওয়াতেই হামলার আগে কোনও নজরদারিতেই ধরা পড়েনি জঙ্গিদের কথোপকথন।

Advertisement

বৃহস্পতিবারের হামলা পরবর্তী সময়ে তদন্ত করতে গিয়ে সেনা গোয়েন্দাদের হাতে জঙ্গিদের পাঠানো দু’টি বার্তা আসে। তার মধ্যে একটি বার্তায় রয়েছে: ‘সাকসেসফুল ফিউনেরাল অব মুজাহিদিন জিশ মহম্মদ’। দ্বিতীয় বার্তা হল: ‘ইন্ডিয়ান সোলজারস কিলড অ্যান্ড ডজনস অব ভেহিকলস ডেসট্রয়েড অন ফ্রেঞ্জি অ্যাটাক।’ এই বার্তা হাতে পাওয়ার পরই সেনা গোয়েন্দারা বুঝতে পারেন জইশ জঙ্গিরা ‘ওয়াই এসএমএস’ প্রযুক্তিতে বার্তা চালাচালি করছে।

‘ওয়াই এসএমএস’ কী?

Advertisement

সেনা গোয়েন্দাদের টেলি কমিউনিকেশন বিশেষজ্ঞদের সূত্রে জানা গিয়েছে, ওয়াই এসএমএস হল অতি উচ্চ রেডিও কম্পাঙ্ক (আল্ট্রা হাই রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি)। ওই প্রযুক্তির সাহায্যে এনক্রিপটেড মেসেজ পাঠানো সম্ভব। সহজ ভাষায়,একটি রেডিও সেটের সঙ্গে সিম কার্ডহীন একটি মোবাইলকে সংযুক্ত করা হয়। তবে সেই রেডিও সেটে থাকতে হবে ওয়াই ফাইয়ের সুবিধা। সেনার বিশেষজ্ঞদের দাবি, এই প্রযুক্তি সবচেয়ে বেশি কার্যকর যখন বার্তার প্রেরক এবং গ্রাহকের রেডিও সেট মোটামুটি দৃষ্টিসীমার মধ্যে থাকে সরলরেখায় থাকে এবং মাঝখানে কোনও বড় বাধা থাকে না।

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

২০১৫ সালে সন্দেহভাজন পাক জঙ্গি সাজ্জাদ হোসেনকে গ্রেফতার করার পর সেনা প্রথম জানতে পারে জঙ্গিরা ওয়াই এসএমএস প্রযুক্তি ব্যবহার করছে। ২০১২ সাল থেকেই ডার্ক ওয়েবে ওই প্রযুক্তি পাওয়া যায়। তবে জইশ জঙ্গিরা ওই প্রযুক্তির উপর আরও এক ধাপ এনক্রিপশন যুক্ত করে সেটি আরও উন্নত করে নিয়েছে বলে দাবি সেনা গোয়েন্দাদের।

আরও পড়ুন: পুলওয়ামা কাণ্ডের মাস্টারমাইন্ড, মাসুদ ঘনিষ্ঠ কামরান খতম, সংঘর্ষে হত চার সেনাও

আরও পড়ুন: সার্জিকাল স্ট্রাইক নয়, আকাশ থেকে সোজা মাসুদের ডেরাতেই আঘাত হানতে বলছেন

আরও পড়ুন: কাশ্মীরে ঘটে যাওয়া এই জঙ্গি সন্ত্রাসগুলো সম্পর্কে জানেন?

গোয়েন্দারা স্বীকার করেছেন, উচ্চ কম্পাঙ্ক ব্যবহার করে মেসেজ পাঠানো হয় বলে মোবাইল, রেডিও টেলিফোন বার্তার উপর নজরদারি করতে যে প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয় তা দিয়ে ওই বার্তা চালাচালি ধরা সম্ভব নয়। অতিরিক্ত নিরাপত্তার লেয়ার যুক্ত করায় খুব দ্রুত ওই বার্তা নষ্ট করে দেওয়াও সম্ভব যাতে কোনও জঙ্গি গ্রেফতার হলে বা সেনার সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত হলে তাদের কাছ থেকে কোনও তথ্য না পায় সেনা বা পুলিশ। এই প্রযুক্তির ব্যবহার ফের প্রকাশ্যে আসায় এবার ওয়াই এসএমএস কী ভাবে নজরদারির আওতায় আনা যায় তা নিয়ে চেষ্টা করছেন সেনার বিশেষজ্ঞরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন