শ্রদ্ধায় স্মরণে দূরে রইল রাজনীতি

রাহুলের পাশেই তিন সামরিক বাহিনীর প্রধান। মোদী আসার আগেই এসেছেন তাঁরা সবাই। কাশ্মীরে জঙ্গি হানায় নিহত সিআরপি জওয়ানদের শবাধারের সামনে ফুল রেখে গিয়ে দাঁড়িয়েছেন ওই সারিতে।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০২:০৩
Share:

নিহত জওয়ানদের প্রতি শ্রদ্ধা রাহুল গাঁধীর। ছবি: পিটিআই।

আধাসেনার বিউগল থেমে গিয়েছে একটু আগে। কফিনের সারির সামনে জোড়হাতে ঝুঁকে পড়লেন নরেন্দ্র মোদী। তাঁর পিছনে একটু দূরে পরপর দাঁড়িয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ, প্রতিরক্ষামন্ত্রী নির্মলা সীতারমন, দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবাল, ক্রীড়ামন্ত্রী রাজ্যবর্ধন সিংহ রাঠৌর, কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধী। রাহুলের পাশেই তিন সামরিক বাহিনীর প্রধান। মোদী আসার আগেই এসেছেন তাঁরা সবাই। কাশ্মীরে জঙ্গি হানায় নিহত সিআরপি জওয়ানদের শবাধারের সামনে ফুল রেখে গিয়ে দাঁড়িয়েছেন ওই সারিতে।

Advertisement

মোদী কিন্তু ওই সারিতে দাঁড়ালেন না। হাঁটতে শুরু করলেন। জোড়হাত, মাথা নত। বাঁ-দিকে ঘুরে চলে গেলেন ফুলের বেদীর উল্টো প্রান্তে। শবাধারের সারি প্রদক্ষিণ করে এসে জোড়হাতে আবার দাঁড়ালেন আগের জায়গায়। আবার প্রণাম। এ বার ঘুরে পিছু হাঁটা। দাঁড়িয়ে থাকা নেতা-মন্ত্রীদের নমস্কার। সাদা পাঞ্জাবির উপরে জলপাই-রঙা হাতকাটা জ্যাকেট পরা রাহুল অন্য মন্ত্রীদের সঙ্গে প্রতি-নমস্কার করলেন প্রধানমন্ত্রীকে। ঠিক এর পরেই মোদী যখন গাড়িতে ওঠার জন্য রওনা হলেন, মন্ত্রীদের সারির শেষে সে দিকেই হাঁটতে দেখা গেল রাহুলকে। দেখে মনে হতে পারে, বিপর্যয়ের দিনে ভোট-যুদ্ধ স্থগিত রেখে আজ তিনি যেন একটু এগিয়ে দিতে গেলেন সরকারের প্রধান পদাধিকারীকে। বস্তুত, এর কয়েক ঘণ্টা আগেই রাহুল ঘোষণা করেছেন, আপাতত রাজনীতির কোনও আলোচনা নয়। তাঁরা সরকারের পাশে আছেন।

বিমানবাহিনীর সি-১৩০জে সুপার হারকিউলিস বিমানে নিহত সিআরপি জওয়ানদের দেহাবশেষ আজ সন্ধের পরে পৌঁছয় দিল্লির পালাম বিমানবন্দরে। একে একে নামিয়ে আনা হয় জাতীয় পতাকায় ঢাকা কফিনগুলি। সারি দিয়ে রাখা হয় বিমানবন্দর চত্বরে। সামনে তৈরি হয় মাল্যদানের বেদী। রাজধানী থেকে এর পর বিভিন্ন রাজ্যে জওয়ানদের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হবে কফিন।

Advertisement

রাহুল এসেছিলেন অনেক আগেই। দেখা গেল, সেনাপ্রধান বিপিন রাওয়তকে নিচু গলায় কিছু বললেন কংগ্রেস সভাপতি। তার পর ফুল হাতে স্লো-মার্চ করে এগিয়ে যাওয়া দুই জওয়ানের সঙ্গে কফিনের সারির দিকে এগোলেন তিনি। ফুল দিয়ে প্রণাম করে থমথমে মুখটা ঘোরালেন এক বার। রাহুলের পরে রাজ্যবর্ধন। রাহুলের সঙ্গে হাত মেলালেন তিনি। রাঠৌরের পরে অন্য মন্ত্রীরা। ছিলেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালও।

সাদা কুর্তা-চুড়িদারের উপরে বোতাম-বন্ধ কালো জ্যাকেট, কাঁধে কালো শাল নিয়ে মোদীর উপস্থিতি সামান্য সময়ের জন্যই। গাড়ি থেকে নেমে সোজা কফিনের সারির দিকে এগিয়ে গিয়ে ফুল রেখে প্রণাম। যখন মনে হচ্ছিল, একটু বেশি সময়ের জন্যই যেন দাঁড়িয়ে আছেন মোদী, তখনই বেজে উঠল বিউগল।

তার পর নীরবতা। কফিন প্রদক্ষিণ করে মোদীর ফিরে যাওয়া। ইন্ডিয়া গেটে তত ক্ষণে জ্বলতে শুরু করেছে মোমবাতি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন